সুনামগঞ্জ , মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ১ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
পথে যেতে যেতে : পথচারী হাসপাতাল ছেড়ে বাসায় গেলেন নুর ‘ফুল স্পিডে’ চলছে সংসদ নির্বাচনের কেনাকাটা ভূমিকম্পে তেঘরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের ১০ স্থানে ফাটল সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দের কাছে দায়িত্ব হস্থান্তর ফেব্রুয়ারিতে মহোৎসবের নির্বাচন হবে : প্রধান উপদেষ্টা এক ইউপি সদস্য ১৩ প্রকল্পের সভাপতি! জমে উঠেছে দিরাই বাজার মহাজন সমিতির নির্বাচন দুর্ঘটনায় জেলা প্রশাসনের দুই কর্মীর মৃত্যু, চালকের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন তারেক রহমান দ্রুত দেশে ফিরবেন : লুৎফুজ্জামান বাবর দুর্গম হাওরের ২২ হাজার শিশুকে সাঁতার শিখাচ্ছে সরকার পরবর্তীতে আমরা প্রত্যেকেই টার্গেট হব : নাহিদ ইসলাম দায়িত্ব নিয়েই নেপালে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করলেন সুশীলা কার্কি আন্তর্জাতিক নির্মল বায়ু দিবস পালিত কণ্ঠশিল্পী ফরিদা পারভীন আর নেই সড়ক দুর্ঘটনায় জেলা প্রশাসনের দুই কর্মী নিহত সুশীলা কার্কিকে নেপালের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা তাহিরপুরে বিএনপি নেতার ওপর হামলাকারীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন তাহিরপুরে হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সম্মেলন সম্পন্ন আইসিইউ চালু হবে কবে?
ভালো নেই শহীদ সোহাগের পরিবার

স্বজনদের কান্না থামছে না, অভাব-অনটনে কাটছে দিন

  • আপলোড সময় : ১৯-১০-২০২৪ ০৮:৪৭:০৬ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৯-১০-২০২৪ ০৮:৪৭:০৬ পূর্বাহ্ন
স্বজনদের কান্না থামছে না, অভাব-অনটনে কাটছে দিন
শহীদনূর আহমেদ :: বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের ডাকে সরকার পতনের আন্দোলনে যোগ দেন একই পরিবারের তিন ভাই। ৫ আগস্ট পুলিশের গুলিতে নিহত হন এক ভাই, গুরুতর আহত হন আরেক জন। ভাই হত্যার বিচার পেতে মামলা করায় হুমকির মুখে অপর ভাই। বলছিলাম, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনে যোগ দেয়া জামালগঞ্জ উপজেলা ভীমখালি ইউনিয়নের হতদরিদ্র পরিবারের নিহত সন্তান সোহাগ ও আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত অপর দুই ভাই বিল্লাল ও শুভ’র কথা। একটি ঘটনায় তছনছ হয়েগেছে পরিবারটির স্বপ্ন। ব্যয়বহুল চিকিৎসা আর পরিবারের উপার্জনক্ষম সদস্য হারিয়ে অভাব-অনটনের সংসারে মানবেতর দিন কাটছে তাদের। জানা যায়, উপজেলার ভীমখালি ইউনিয়নের গোলামীপুর গ্রামে হতদরিদ্র এক পরিবারে বেড়ে ওঠা তিন ভাই সোহাগ, বিল্লাল ও শুভ। ছোটবেলা থেকেই অভাব-অনটনের মধ্যে দিনাতিপাত করতে হতো তাদের। একপর্যায়ে পরিবারের হাল ধরতে সোহাগ বিদেশে পাড়ি জমাতে চাইলেও দালালের খপ্পরে পড়ে সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েন। পরবর্তীতে জীবিকা নির্বাহের আশায় ঢাকা শহরের একটি গার্মেন্টেন্সে শ্রমিক হিসাবে কাজে যোগদান করেন। জীবিকার তাগিদে তিন ভাইকে নিয়ে বসবাস করতেন ঢাকার বাড্ডা এলাকায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের সাথে আন্দোলনে যোগ দেন সোহাগসহ তিন ভাই। আন্দোলন চলাকালে গত ৫ আগস্ট বাড্ডা থানা এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন সোহাগ। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয় তার ছোটভাই শুভ। এ ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে ১৭৯ জনের নামে বাড্ডা থানায় নিহতের ভাই বিল্লাল মিয়া বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর থেকে মামলা তুলে নিতে মুঠোফোনে একাধিকবার প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয় তাকে। প্রাণ ভয়ে গ্রামের বাড়িতে চলে আসলেও নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বিল্লাল ও তার পরিবারের সদস্যরা। নিহত সোহাগের ছোট ভাই শুভ বলেন, আমরা তিনভাই ঢাকায় গার্মেন্টেন্সে চাকরি করতাম। ছাত্র আন্দোলনের সময় গার্মেন্টস বন্ধ হওয়ার পর থেকে নিয়মিত আন্দোলনে যোগ দিয়েছি আমরা। ৫ আগস্ট বাসা থেকে এক সাথে বের হয়েছিলাম আমরা। বাড্ডা থানা এলাকায় আসলে হঠাৎ পুলিশ গুলি ছুড়লে আমরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যাই। আমি নিজেও পুলিশের গুলিতে আহত হই। হাসপাতালে গিয়ে আমার ভাইয়ের লাশ পাই। নিহত সোহাগের বড়ভাই বিল্লাল মিয়া বলেন, ছাত্র আন্দোলনে আমাদের পরিবার তছনছ হয়ে গেছে। পুলিশের গুলিতে আমার ভাই হারিয়েছি। আরেক ভাই আহত অবস্থায় রয়েছে। পরিবারও আর্থিক টানাপোড়নের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সেই দিনের ঘটনায় মামলা দায়েরের পর ভয়ে ঢাকায় থাকতে পারিনি। গ্রামে এসেও রক্ষা নেই। মামলা তুলে নিতে মুঠোফোনে হুমকি আসছে। আমরা এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। এদিকে পরিবারের অন্যতম উপাজনক্ষম সন্তানকে হারিয়ে দিশেহারা সোহাগের মা ও বাবা। সন্তানের কথা স্মরণ হলেই আহাজারি করতে থাকেন সন্তানহারা রোকেয়া বেগম। আহত সন্তানদের চিকিৎসা ব্যয় ও কর্মহীন অবস্থায় দুশ্চিন্তা কাটছে না বৃদ্ধা কালাম মিয়ার। নিহত সোহাগের বাবা কালাম মিয়া বলেন, সোহাগ ছিল আমার পরিবারের মুকুট। তাঁর আয়ের টাকায় সংসার চলতো। আহত ছেলের চিকিৎসা ও আর পরিবার চালানো কষ্ট হয়েগেছে। দেশের জন্য ছেলে হারিয়েছি। এখন আমি ন্যায্য বিচার চাই। এদিকে অসহায় পরিবারটিকে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সহযোগিতার কথা জানিয়ে স্থানীয় ভীমখালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আক্তার হোসেন বলেন, পরিবারটি অনেক অসহায়। আমরা স্থানীয়ভাবে চেষ্টা করছি তাদের পাশে দাঁড়াতে। সরকারি-বেসরকারিভাবে পরিবারটির পাশে এগিয়ে আসলে তারা আবারও ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। এদিকে শহীদ পরিবারের অবস্থা সরেজমিনে দেখে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতা করেছেন জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া। ভবিষ্যতে শহীদ পরিবারটিকে সকল ধরনের সহযোগিতা করা হবে বলে জানান তিনি। এদিকে, দেশের ক্রান্তিলগ্নে অবদান রাখা অসহায় পরিবাটির পুনবার্সনে সরকার এগিয়ে আসবে এমনটাই প্রত্যাশা এলাকাবাসীর।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
ভূমিকম্পে তেঘরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের ১০ স্থানে ফাটল

ভূমিকম্পে তেঘরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের ১০ স্থানে ফাটল