সুনামগঞ্জ , শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫ , ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
সড়ক নিরাপদ হবে কবে? গণঅভ্যুত্থান বর্ষপূর্তিতে গ্রাফিতি প্রদর্শনী উদ্বোধন করলেন দুই শিক্ষার্থী সিলেট বিমানবন্দরে বোর্ডিং ব্রিজের চাকা ফেটে কর্মচারী নিহত দেশে যেন উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিতে না পারে : তারেক রহমান পিকআপ-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে যুবক নিহত জামালগঞ্জের ৬ ইউনিয়নে বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘিরে সমালোচনা বৃত্তি পরীক্ষায় কিন্ডারগার্টেন বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন আগামী নির্বাচনে বিএনপিকে বিজয়ী করতে হবে : আনিসুল হক হাওরের উন্নয়নে সঠিক পরিকল্পনা চাই: সালেহিন চৌধুরী শুভ ১০২ এসিল্যান্ড বিভাগীয় কমিশনারের অধীনে ন্যস্ত ব্রিটিশ আমলে নির্মিত সাচনা বাজারের হাসপাতাল চালুর দাবি অদম্য মেধাবী অর্পা’র স্বপ্নযাত্রা কি থেমে যাবে? গভীর সংস্কার না করলে স্বৈরাচার ফিরে আসবে : প্রধান উপদেষ্টা সাগরপথে ইউরোপে যান সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রদলের কমিটি গঠনের প্রতিবাদে ‘সাধারণ শিক্ষার্থী’দের বিক্ষোভ জগন্নাথপুরে ৩ আসামি গ্রেফতার হাওরে পানি নেই, সংকটে কৃষি ও মৎস্য সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা নিভে গেল আরও এক শিক্ষার্থীর জীবন প্রদীপ খেলাধুলাই পারে মাদকের ছোবল থেকে যুবসমাজকে রক্ষা করতে : কয়ছর এম আহমদ

শহীদ সোহাগ মিয়ার পরিবারের পাশে বন্ধুসভা

  • আপলোড সময় : ২৩-১০-২০২৪ ১২:৪৮:৩৫ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৩-১০-২০২৪ ১২:৪৮:৩৫ পূর্বাহ্ন
শহীদ সোহাগ মিয়ার পরিবারের পাশে বন্ধুসভা
স্টাফ রিপোর্টার :: সংসারে দারিদ্র আর টানাপোড়েনের কারণে গ্রাম ছেড়ে দুইভাই চলে যান ঢাকায়। সেখানে কাজ করেন পোশাক কারখানায়। গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যোগ দেন তারা। এক পর্যায়ে গুলিবিদ্ধ হন দুইভাই। এর মধ্যে বড় ভাই সোহাগ মিয়া (২৪) ঘটনাস্থলে প্রাণ হারান। ছোট ভাই শুভ মিয়া (২০) এখনো সেদিনের ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছেন। শহীদ সোহাগের হতদরিদ্র পরিবারের খোঁজ নিতে সোমবার তাদের বাড়িতে যান সুনামগঞ্জ বন্ধুসভার বন্ধুরা। সোহাগের বাবা, মা, শুভ ও তাঁর স্ত্রী, পরিবারের আরও দুই শিশুর জন্য নতুন কাপড় এবং খাদ্যসামগ্রী নিয়ে যান তাঁরা। এতে খুশি হন ওই পরিবারের সদস্যরা। এই উদ্যাগের প্রশংসা করেন প্রতিবেশীরাও। শহীদ সোহাগ মিয়ার বাড়ি জামালগঞ্জ উপজেলার ভীমখালি ইউনিয়নের গোলামীপুর গ্রামে। জেলা শহর থেকে ওই গ্রামের দূরত্ব প্রায় ২২ কিলোমিটার। সোমবার জেলা শহর থেকে সুনামগঞ্জ বন্ধুসভার উপদেষ্টা মো. রাজু আহমেদ, সাবেক সভাপতি প্রদীপ কুমার পাল, সভাপতি সৌরভ সরকার, সাধারণ স¤পাদক তাজকিরা হক তাজিন, জ্যেষ্ঠ সদস্য জাকিরুল হক মান্না ওই গ্রামে সোহাগ মিয়ার বাড়িতে যান। বাড়িতে তখন সোহাগ মিয়ার বৃদ্ধ বাবা কালাম মিয়া, মা রোকেয়া বেগমসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। বন্ধুসভার পক্ষ থেকে কালাম মিয়াকে নতুন লুঙ্গি ও গেঞ্জি, রোকেয়া বেগমের জন্য শাড়ি, আহত শুভ মিয়ার জন্য শার্ট, তাঁর স্ত্রীর জন্য থ্রি-পিস, ঘরের সাত বছর ও তিনমাস বয়সী দুই কন্যা শিশুর জন্য দুটি জামা, তিনটি কম্বল উপহার দেন। এছাড়া পরিবারের জন্য ছয় কেজি চাল, এক লিটার তেল, এক কেজি পেঁয়াজ, দুই কেজি আলু, এক কেজি চিনি, এক কেজি ডাল, নুডুলস, মুড়ি, সুজি দেওয়া হয়। বন্ধুসভার সদস্য বেশকিছু সময় তাদের বাড়িতে কাটান এবং পরিবারের খোঁজ খবর নেন। বন্ধুসভার সভাপতি সৌরভ সরকার বলেন, শহীদ সোহাগ মিয়ার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটাতে পেরে আমাদের খুব ভালো লেগেছে। খুবই সহজসরল তারা। এই কষ্টের মধ্যেও তাদের আন্তরিকতা আমাদের মুগ্ধ করেছে। আমরা বলে এসেছি, যে কোনো প্রয়োজনে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে। বন্ধুসভার সদস্যদের পাশে খুশি হন আবুল কালাম। বলেন, আমি গরীব মানুষ। ছেলেডার রোজগারেই সংসার, আমার ওষুধের খরচ চলত। এখন কেডায় সংসার চালাইব। বড় চিন্তাত আছি। তিনি জানান, আহত শুভ মিয়ার পায়ে এখনো গুলির ক্ষত আছে। মাঝেমধ্যে প্রচন্ড ব্যথা হয়। মা রোকেয়া বেগম নিজে বন্ধুসভার সদস্যদের আদর-আপ্যায়ন করেন। নিজেদের গাছের কলা খেতে দেন। রোকেয়া বলেন, ছেলেডার জন্য কানতে কানতে চোখের পানি শুকাইগিছে। এখন পুলার বয়সী কেউরে পাশে দেখলে শান্তি পাই। হেরা শহর থাকি কত কিছু লইয়া আইছে। দেইখ্যা ভালা লাগছে। প্রতিবেশী ফারুক মিয়া বলেন, প্রশাসনের কর্মকর্তাসহ অনেকেই এসেছেন। দরিদ্র পরিবারটিকে সহায়তা করেছেন। তাঁদের পাশে সবার দাঁড়ানো উচিত। সোহাগের বাবা কালাম মিয়ার সঙ্গে কথা বলেন জানা গেছে, তাঁর পাঁচ ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়ে বড়, বিয়ে দিয়েছেন। ছেলেদের মধ্যে সোহাগ মিয়া দ্বিতীয়। চার বছর আগে সোহাগ সৌদিআরবে যাওয়ার জন্য বায়না ধরে। এরপর জমি, ঘরের গরু আর মহাজনি সুদে ঋণ করে প্রায় চার লাখ টাকা জোগার করে দেন দালালকে। কিন্তু সব টাকা খোঁয়া যায়। এরপর সুদের টাকার চাপে ছোট ভাই শুভ মিয়াকে (২০) নিয়ে গ্রাম ছেড়ে পালান সোহাগ। ঢাকায় গিয়ে পোশাক কারখানায় কাজ নেন দুই ভাই। থাকতেন বাড্ডার হোসেন মার্কেট এলাকায়। যা আয় করতেন মাসে মাসে সেখান থেকে কিছু টাকা পাঠাতেন বাড়িতে। সেই টাকা দিয়ে ঋণ শোধ করছিলেন বাবা। হৃদরোগে আক্রান্ত কালাম মিয়ার চিকিৎসার খরচও দিতেন সোহাগ। ৫ আগস্ট সকালে বাসা থেকে বের হয়ে আন্দোলনে যোগ দেন দুইভাই। এক পর্যায়ে গুলিবিদ্ধ হন দুই ভাই। ঘটনাস্থলেই সোহাগ মিয়া মারা যান।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
সড়ক নিরাপদ হবে কবে?

সড়ক নিরাপদ হবে কবে?