সুনামগঞ্জ , মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫ , ৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
প্রশাসনের পূর্ণাঙ্গ তালিকা থেকে গায়েব জেলার বহু খাল নির্বাচনের জন্য বিএনপি পুরোপুরি প্রস্তুত : কয়ছর এম আহমদ বিশ্বম্ভরপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত শান্তিগঞ্জে ফুটবল খেলা নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৪০ দেশ যেন মৌলবাদের অভয়ারণ্য না হয় : তারেক রহমান সত্যশব্দের বর্ষার আয়োজন ‘বাদল গেছে টুটি’ দিরাই থানা ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন ইউকের ফ্যামিলি গ্যাদারিং অনুষ্ঠিত জনগণের ভোগান্তি কমিয়ে দ্রুত সেবা নিশ্চিত করতে হবে নির্বাচন সুষ্ঠু হলে বিএনপি সরকার গঠন করবে : কয়ছর এম আহমেদ জামালগঞ্জে উড়ালসড়ক প্রকল্প পরিদর্শনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা তাহিরপুরে তোপের মুখে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শান্তিগঞ্জে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে শোভাযাত্রা জাতি-ধর্মে ভেদাভেদ থাকবে না, এই দেশ সবার : সেনাপ্রধান বর্ণাঢ্য আয়োজনে জন্মাষ্টমী উদযাপিত ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ৬ লেনের কাজ দ্রুত সম্পন্নের দাবি সুনামকণ্ঠ সাহিত্য পরিষদের ‘সাহিত্য আড্ডা’ অনুষ্ঠিত ফুটবল খেলা নিয়ে সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ৫ ফেব্রুয়ারিতে সুষ্ঠু-সুশৃঙ্খলভাবে নির্বাচন সম্পন্ন হবে : ধর্ম উপদেষ্টা ভোট গণনার আগ পর্যন্ত নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা আছে : গয়েশ্বর রায় বেহাল সড়কে স্কুলে যেতে ভোগান্তি শিক্ষার্থীদের

এবার ১০ শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস, চাপ বাড়বে কৃষি অর্থনীতিতে

  • আপলোড সময় : ১১-১১-২০২৪ ০৩:৫২:৩৪ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১১-১১-২০২৪ ০৩:৫২:৩৪ অপরাহ্ন
এবার ১০ শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস, চাপ বাড়বে কৃষি অর্থনীতিতে
সুনামকণ্ঠ ডেস্ক :: বিদায়ের পথে কার্তিক। ধীরে ধীরে নামছে তাপমাত্রা। উত্তরের জনপদে হালকা শীতের আমেজ। এছাড়া বৃষ্টি হতে পারে দেশের তিন বিভাগে। তারপর থেকে কমতে শুরু করবে তাপমাত্রাও। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আভাস, চলতি মাসের মাঝামাঝিতেই শীত অনুভূত হতে পারে। আর ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে বয়ে যেতে পারে কয়েক দফা শৈত্যপ্রবাহ। আবহাওয়ার তিন মাসব্যাপী পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে। তীব্র শীতে এবার গ্রামীণ অর্থনীতিতে চাপ বাড়াবে বলে মনে করছেন কৃষি বিশেষজ্ঞরা। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, এবারের শীত মৌসুমে অর্থাৎ নভেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে দেশে আট থেকে ১০টি মৃদু (তাপমাত্রা ৮-১০ ডিগ্রি) থেকে মাঝারি (৬-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এর মধ্যে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে দুই থেকে তিনটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহে (৪-৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস) রূপ নিতে পারে। তবে তীব্র শীতের আগে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের আভাসও রয়েছে। এ সময় বঙ্গোপসাগরে দুই থেকে পাঁচটি লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে, যার মধ্যে এক-দুটি নি¤œচাপ ও ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। এক মৌসুমে এত বেশি শৈত্যপ্রবাহের কারণে দেশের কৃষি অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। খাদ্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণও এতে কঠিন হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অর্থনীতি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. এএইচএম সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রাকৃতিক দুর্বিপাকে যেসব দেশ পড়ছে বাংলাদেশ তার মধ্যে অন্যতম। আবহাওয়ার পরিবর্তনের ধারা এখানে অনেক বেশি বাড়ছে। শৈত্যপ্রবাহ তার মধ্যে অন্যতম। এবারের শীতে ১০-১৩ বার শৈত্যপ্রবাহের মুখে পড়লে এখানকার কৃষি অর্থনীতি চাপের মুখে পড়বে। আমাদের এখানে অনেক ধরনের শাক-সবজি হয়। শীতকালীন এ ফসল দিয়ে বছরের দীর্ঘ সময়ের সবজির চাহিদা পূরণ হয়। আলুর ওপর অনেক প্রভাব পড়বে। বন্যার কারণে এরই মধ্যে বেশকিছু অঞ্চলের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি বলেন, অর্থনীতিতে কভ ওয়েব মডেল আছে, যেটাকে আমরা মাকড়সার জাল মডেল বলে থাকি। যেমন বাজারে যে পণ্যটির দাম বেশি থাকে কৃষক সেটি চাষে আগ্রহী বেশি হন। এবার যেহেতু আলুর দাম বেশি, কৃষকের আগ্রহও এ সবজি ঘিরেই। তবে শৈত্যপ্রবাহের কারণে আলু চাষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আবার শীতের রোগ প্রতিরোধে ওষুধ ব্যবহার করতে গিয়ে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাবে। এটা একটা উদাহরণ। এ রকম সব সবজিতেই বড় ধরনের প্রভাব পড়বে। সরকারকে এর জন্য পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে রাখতে হবে। এসব তথ্য সময়ে সময়ে পৌঁছে দিতে হবে কৃষকদের কাছে। নভেম্বরের মাঝামাঝি শীত নামলেও এর তীব্রতা বাড়তে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে বলে আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। উত্তরাঞ্চলে নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ঘন কুয়াশার সঙ্গে শীত অনুভূত হতে পারে। যদিও গ্রামাঞ্চল ও নদীতীরবর্তী এলাকায় এরই মধ্যে কুয়াশা পড়তে শুরু করেছে। রাজধানীতে শীত পড়তে পারে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি থেকে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দেশে কেবল শৈত্যপ্রবাহই নয়, ঘূর্ণিঝড়ের ঘটনাও বাড়ছে বলে জানান পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম। তিনি বলেন, দেশে শৈত্যপ্রবাহ সাধারণত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারির দিকে বেশি হয়। কিন্তু আবহাওয়া অফিস এবার পূর্বাভাস দিয়েছে নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত দীর্ঘ সময় ধরে এ শৈত্যপ্রবাহ চলতে থাকবে। চলতি বছরের মার্চে যে হিটওয়েব হলো, বিগত দিনে এত বেশি হিটওয়েবের মুখোমুখি আমরা হইনি। এটা অস্বাভাবিক ঘটনা ছিল। শৈত্যপ্রবাহেও একই পরিস্থিতি দেখতে পাচ্ছি। আমাদের আবহাওয়া চরমভাবাপন্নের দিকে যাচ্ছে। শৈত্যপ্রবাহের কারণে দেশের কৃষি ক্ষতিগ্রস্ত হবে উল্লেখ করে এ ভূগোলবিদ বলেন, নভেম্বরে পানি নামার পর পুরোপুরি শীতের মৌসুম শুরু হওয়ার আগে যেসব সবজি চাষ করা হয়, বীজ বপন হয়, সেগুলোয় এবার ব্যাঘাত ঘটবে। পর্যাপ্ত সূর্যের আলো না পড়ার কারণে সরিষা, পেঁয়াজ, রসুনের মতো ফসলের অঙ্কুরোদ্গম ও বৃদ্ধিটা খুব ভালো হবে না। শীতে বেশকিছু বাড়তি রোগব্যাধি দেখা যায়। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের জন্য এ সময়টা বেশ জটিলতা তৈরি করে। ‘কোল্ড ওয়েভ ইনডিউসড মর্টালিটিস ইন বাংলাদেশ: ¯প্যাটিওটে¤েপারাল অ্যানালাইসিস অব ২০ ইয়ার্স ডাটা, ২০০০-২০১৯’ শীর্ষক এক গবেষণায় বলা হয়েছে, দেশে জানুয়ারিতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এর পরই রয়েছে ডিসেম্বর। গবেষণার দুই দশকে ৮১টি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে দেশের ওপর দিয়ে। এ সময়ে কিছুটা শৈত্যপ্রবাহ বৃদ্ধির প্রবণতাও দেখা গেছে। দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলো বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বলে উল্লেখ করা হয়েছে গবেষণায়। আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাব বলছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি শীত পড়েছে ২০১৮ সালে। ওই বছরের ৮ জানুয়ারি পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা নেমেছিল ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা দেশের ইতিহাসে সর্বনি¤œ তাপমাত্রার রেকর্ড। ওইদিন রংপুর বিভাগের আট জেলার সবক’টিতেই সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রির কম ছিল। সে বছরও দফায় দফায় তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে দেখা যায়। সাম্প্রতিক সময়গুলোয় দ্রুতই তাপমাত্রার উত্থান-পতন ঘটছে। গত বছরও দেশজুড়ে ছয়টি শৈত্যপ্রবাহ হলেও এবার জানুয়ারির মধ্যেই ১০টির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে। রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান বলেন, রংপুর অঞ্চলে এ সময় দিনে গরম এবং রাতে ঠা-া অনুভূত হয় এবং প্রত্যন্ত এলাকায় রাতের বেলায় ও সকালের দিকে হালকা কুয়াশা পড়ে। তবে ১৫ নভেম্বরের পর থেকে ঠান্ডা বেশি অনুভূত হতে পারে। ২০ নভেম্বরের পর থেকে ঘূর্ণিঝড় হওয়ার আশঙ্কা আছে। তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রির নিচে নামলে আলু চাষে প্রভাব পড়বে বলে জানান পঞ্চগড় সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুন্নবী। তিনি বলেন, বর্তমান আবহাওয়ায় জমির ফসলের কোনো ক্ষতি হবে না। তবে আগামীতে ঘূর্ণিঝড়ের যে আভাস আছে তাতে উত্তরাঞ্চলের বিশেষ করে আলু, গম, আগাম সরিষা ও সবজির ক্ষতি হতে পারে। আবার ঘন কুয়াশা অব্যাহত থাকলে এখানে আলু, গম ও ধানেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
প্রশাসনের পূর্ণাঙ্গ তালিকা থেকে গায়েব জেলার বহু খাল

প্রশাসনের পূর্ণাঙ্গ তালিকা থেকে গায়েব জেলার বহু খাল