সুনামগঞ্জ , মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫ , ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
প্রতিপক্ষের হামলায় ছোট ভাই নিহত, বড় ভাই হাসপাতালে টাঙ্গুয়ার হাওর ‘সোনার ডিমপাড়া হাঁস’ নয় নির্বাচন নিয়ে টালবাহানা চলবে না : আব্দুর রব ইউসুফি আলোচনা হলে সরকারের ‘ভাব’ বুঝতে পারবে ইসি : সিইসি হাওর থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, গ্রেফতার ৭ জামালগঞ্জে ফুটবল টুর্নামেন্ট সম্পন্ন জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত উঠানে পড়েছিল যুবকের রক্তাক্ত লাশ : আটক ১ জামালগঞ্জে মাদক নির্মূলে গ্রামবাসীর প্রতিরোধ সভা: সর্বাত্মক সহযোগীতার আশ্বাস ওসি'র চৌধুরী মনসুর আহমদ আর নেই ভাতিজার হাতে চাচি খুন সিলেটের কোনো পাথর কোয়ারি আর লিজ দেওয়া হবে না : পরিবেশ উপদেষ্টা অনিয়ন্ত্রিত পর্যটনে বিপদে টাঙ্গুয়ার হাওর মরিচক্ষেতে মিললো গ্রেনেড, নিষ্ক্রিয় করলো সেনাবাহিনী টাঙ্গুয়ার হাওরে উচ্চ শব্দে গান-বাজনা নিষিদ্ধ ছাতকে কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে মামলা, যুবক গ্রেপ্তার রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী উদযাপনে গানে-কবিতায় শ্রদ্ধার্ঘ্য শান্তিগঞ্জে ৬৮০ পিস ইয়াবা উদ্ধার, গ্রেফতার ১ পূজা উদযাপন পরিষদ সদর ও পৌর শাখার দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত ইউনূস-তারেক বৈঠক আজ: ভোটের সময় পুনর্বিবেচনার কথা বলবে বিএনপি

টাঙ্গুয়ার হাওরে সংরক্ষিত জলাশয়ে খাস কালেকশনের নামে মৎস্য আহরণ!

  • আপলোড সময় : ২৬-১২-২০২৪ ০৯:৪০:৪৬ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৬-১২-২০২৪ ০৯:৪০:৪৬ পূর্বাহ্ন
টাঙ্গুয়ার হাওরে সংরক্ষিত জলাশয়ে খাস কালেকশনের নামে মৎস্য আহরণ! ছবি: টাঙ্গুয়ার হাওর বিল
বিশেষ প্রতিনিধি :: তাহিরপুর ও মধ্যনগর উপজেলা নিয়ে বিস্তৃত টাঙ্গুয়ার হাওর বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে রামসার সাইটভুক্ত এলাকা। এখানে মাছ ধরা, পাখি শিকার, বনায়ন কাটা ইসিএ (ইকোলজিক্যাল ক্রিটিক্যাল এরিয়া বা পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা) রুল অনুসারে দ-নীয় অপরাধ। রামসার কর্তৃক সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষিত হওয়ার পর থেকে হাওরটি সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে সরকার ২০০৩ সাল থেকে রক্ষণাবেক্ষণ করছে। হাওরের প্রকৃতি ফিরিয়ে আনতে প্রতিবেশ রক্ষায় সরকারের সঙ্গে দাতাসংস্থা ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাও কাজ করেছে বহুদিন। কিন্তু পরিবেশ ফিরিয়ে আনার বদলে এই সময়ে পরিবেশ ও প্রতিবেশ ধ্বংস হয়েছে বলে মনে করেন স্থানীয় সচেতন লোকজন। এবার সংরক্ষিত এলাকার মাছের অভয়াশ্রম স্বীকৃত জলাশয় খাস কালেকশন দেখিয়ে ইজারা দিয়ে মাছ আহরণের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। এতে তাহিরপুর উপজেলা প্রশাসন ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সংশ্লিষ্টরা জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। টাঙ্গুয়ার হাওরটি ‘নয় কুড়ি কান্দা ছয় কুড়ি বিল’ হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছে দেশ-বিদেশে। বৈচিত্র্যময় প্রকৃতির কারণেও খ্যাতি রয়েছে। মাদারফিশারিজ হিসেবে খ্যাতি পাওয়া হাওরটি এখন মাছ, গাছ ও পাখিহীন হয়ে যাচ্ছে। এই অবস্থায় সংরক্ষিত হাওরটির ভিতরের কয়েকটি জলাশয় মাছ ধরার জন্য স্থানীয় প্রভাবশালীদের ইজারা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। যারা ইজারা নিয়েছেন তারাও বিষয়টি স্বীকার করেছেন। হাওর রক্ষণাবেক্ষণে নিয়োজিত বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিএনআরএস জানিয়েছে হাওরে ‘বাফার জোন’ ও ‘কোন জোন’ নামে জলাশয়গুলো আলাদা করে ঘোষণা করা হয়েছে। ইসিএ নীতিমালা অনুসারে কোর জোনের ক্ষতি হতে পারে কিন্তু বাফার জোনে পড়েছে এমন জলমহালও ইজারা দেওয়ার নিয়ম নেই। কিন্তু প্রশাসন বাফার জোন ও কোর জোনের সীমানা নির্ধারণ না করেই এগুলোর বাইরের বিল হিসেবে দেখিয়ে বিভিন্ন সময় প্রভাবশালীদের ইজারা দিয়ে থাকে। অথচ এই বিলগুলো সংরক্ষিত এমনকি অভয়াশ্রম ঘোষিত এলাকার মধ্যে পড়েছে। ইজারাদাররা বিধ্বংসী জালসহ অনেক সময় জলাশয় সেচেও মাছ ধরে মাছের বংশ নির্বংশ করছে। এবারও সংরক্ষিত এলাকার কোর জোনের জলাশয় রৌয়াবিলের গোলাবাড়ি গুপ, কলমা বিলের বাদেরটেক, সালদিঘা অংশ, চটাইন্যা গাঙ, বালুয়ারডুবা দাইড়, তেকুইন্যার দাইড় খাস কালেকশন দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। খাস কালেকশনকৃত এই অংশগুলো সংরক্ষিত কোর জোনে অবস্থিত। ইজারদারেরা মাছ আহরণের জন্য, বাঁশকাটাসহ নানাভাবে সীমানা নির্ধারণ করে এখন প্রকাশ্যে মাছ আহরণ করছে। অভয়াশ্রম ঘোষিত রৌয়াবিলের গোলাবাড়ি গুপ এবং লেছুয়ামারা ও চটাইন্যা বিলের গলাচিপা অংশ ইজারা এনে মৎস্য আহরণ করছেন গোলাবাড়ি গ্রামের খসরুল আলম। কলমা বিলের বাদেরটেক ও শালদিঘা অংশে মাছ আহরণ করছেন শ্রীপুর দক্ষিণ ইউপি সদস্য পলাশ মিয়া, তেকুইন্যার দাইড় অংশতে মাছ আহরণ করছেন কাউহানি গ্রামের হেনাবুল। তবে প্রশাসন এসব অংশ খাস কালেকশনে দেয়নি বলে জানিয়েছে। ইউপি সদস্য পলাশ মিয়া কলমা বিলের বাদেরটেক ও সালদিঘা অংশ খাস কালেকশন নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। হেনাবুল মিয়াও স্বীকার করে বলেন, আমার কাছে তেকুইন্যার দাইড় জলমহাল অংশের খাস কালেকশনের কাগজ আছে। হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন তালুকদার বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওর সংরক্ষণের নামে গত দুই দশক ধরে মাছ, গাছ, পাখি ও প্রকৃতি লুট করা হয়েছে। একটি সম্পদকে চোখের সামনে সংরক্ষণের নামে ধ্বংস করা হয়েছে। ইসিএ রোল অনুসারে টাঙ্গুয়ার হাওরটি সংরক্ষিত হলেও এখানে প্রকাশ্যে প্রতিবেশ বিধ্বংসী কারবার চলছে প্রকাশ্যে। দীর্ঘ দিনেরঅত্যাচারে বিশ্বের ঐতিহ্য ঘোষিত এলাকাটিকে বিরাণভূমিতে পরিণত করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিবছর সংরক্ষিত এলাকার জলাশয়কে কলমের মারপ্যাচে ‘বাইরের’ দেখিয়ে খাস কালেকশন দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এবারের মতো প্রতিবছরই এটা হচ্ছে। তাহিরপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) শামস সাদাত মাহমুদ উল্লাহ বলেন, আমরা টাঙ্গুয়ার হাওরের বাফার ও কোর জোনের কোনও জলাশয় খাস কালেকশন দেইনি। যারা দাবি করেছে খাস কালেকশন নিয়েছে তাদেরকে কাগজ দেখানোর কথা বলে তিনি ফোনকল কেটে দেন।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
প্রতিপক্ষের হামলায় ছোট ভাই নিহত, বড় ভাই হাসপাতালে

প্রতিপক্ষের হামলায় ছোট ভাই নিহত, বড় ভাই হাসপাতালে