দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণ-হত্যাকান্ডের ঘটনায় উদ্বেগ
- আপলোড সময় : ২৪-০২-২০২৫ ১২:২৯:০০ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ২৪-০২-২০২৫ ১২:২৯:০০ পূর্বাহ্ন

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
দেশের বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ, হত্যার মতো নৃশংস সহিংসতার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম এবং সাধারণ স¤পাদক মালেকা বানু সই করা এক বিবৃতিতে এই উদ্বেগের কথা জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, ২৩ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ মাধ্যমে জানা যায়, টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর থানাধীন এলাকায় ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী একটি বাসে ডাকাতি ও নারীযাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাসূত্রে জানা যায়, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টায় আমারি ট্রাভেলস নামে রাজশাহীগামী একটি বাস গাবতলী থেকে যাত্রা শুরু করলে ডাকতির উদ্দেশ্যে শহীদুল ইসলাম ওরফে মহিদুল ওরফে মহিত, মো. সবুজ, শরীফ ও তাদের সহযোগীরা অস্ত্রের মুখে ওই বাসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে যাত্রীদের টাকা-পয়সা ও মালামাল লুট করে। এ সময় তারা নারী যাত্রীদের গয়না ও টাকা-পয়সা লুট করতে গিয়ে তাদের শ্লীলতাহানি করে।
রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার মির্জাপুর রথিয়া গ্রামে ২১শে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে ফুল তুলতে গিয়ে ৪র্থ শ্রেণির শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। জানা যায়, গত ২১শে ফেব্রুয়ারি উপলক্ষে নির্যাতনের শিকার শিশু সকালে ফুল সংগ্রহ করতে অভিযুক্ত রুহুল আমিনের বাড়িতে যায়। এ সময় রুহুল আমিন শিশুটিকে একা পেয়ে তার ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করে।
মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগরে চা বাগানে এক শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টার পর কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাসূত্রে জানা যায়, নিহত ওই শিশু গরু চরাতে চা বাগানে যায়। এ সময় শিশুটিকে একা পেয়ে অভিযুক্ত দিবস রেংগট ও তার সহযোগী মিলে ধর্ষণের চেষ্টা করে। তখন শিশুটি চিৎকার করলে তাকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
মুন্সিগঞ্জ জেলার সিরাজদিখানে অস্ত্রের মুখে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে এক পোশাককর্মী নারীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। জানা যায়, গত ৬ ফেব্রুয়ারি ওই নারী কর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরার পথে অটোরিকশায় ছিলেন। এ সময় অটোরিকশাটি বলুরচর গ্রামে ডিসি প্রজেক্টের সামনে এলে অভিযুক্ত দুই যুবক ওই নারীর পথ গতিরোধ করে ধলেশ্বরী নদীর তীরে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করে।
মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলায় এক গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। জানা যায়, নির্যাতনের শিকার গৃহবধূকে ট্রলারে করে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে অভিযুক্ত ইয়ামিন মুন্সি, জামাল মোল্লা, জব্বার শেখ মিলে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে।
বিবৃতিতে মহিলা পরিষদ জানায়, আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন স্থানে অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে প্রতিনিয়ত ধর্ষণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ, হত্যার মতো নৃশংস সহিংসতার ঘটনা ঘটেই চলেছে। এ ধরনের ঘটনার উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা দেশের প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতার চিত্র দেশে সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি, স্বাভাবিক জীবন-যাপন এবং তাদের অগ্রযাত্রার পথে প্রতিবন্ধকতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ঘটনাগুলোয় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানায়। নারী এবং কন্যার প্রতি সহিংসতার ঘটনায় দেশের নারীদের অবস্থান এবং নিরাপত্তার বিষয়টি অধিকতর গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নিয়ে আশু কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানায় সংগঠনটি।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ