সুনামগঞ্জ , শনিবার, ০৩ মে ২০২৫ , ১৯ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
সুনির্দিষ্টভাবে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ চাইলেন তারেক রহমান নারী শিক্ষার উন্নয়নে সমন্বিত উদ্যোগ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত সড়কে বৈদ্যুতিক খুঁটি রেখেই সংস্কার! সীমান্তে সক্রিয় গরু চোরাচালান চক্র ১৬৮ পিস ইয়াবাসহ রিকসাচালক গ্রেপ্তার সুবিপ্রবি’র স্থান পরিবর্তনের সুযোগ নেই : সিনিয়র সচিব সিদ্দিক জোবায়ের মহান মে দিবস উদযাপিত তাপপ্রবাহ ও কালবৈশাখী হতে পারে কয়েক দফায় অর্ধকোটি টাকার চোরাই পণ্য জব্দ সোমবার সকালে দেশে ফিরছেন খালেদা জিয়া জামালগঞ্জে ধান কাটতে গিয়ে হাওরে বজ্রপাতে নিহত ১ আজ মহান মে দিবস সুনামগঞ্জে বজ্রপাত আতঙ্ক: দশ বছরে মৃত্যু দেড় শতাধিক নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ বৃদ্ধির আহ্বান শান্তির হাত বাড়াতে হবে, যুদ্ধের প্রস্তুতিও থাকতে হবে : প্রধান উপদেষ্টা সিলেট প্রদেশ বাস্তবায়ন পরিষদের মানববন্ধন শেখ রেহানা, পুতুল, জয় ও ববির বাড়ি-সম্পদ জব্দের আদেশ চিন্ময় ব্রহ্মচারীর জামিন স্থগিতের আদেশ প্রত্যাহার, ফের শুনানি ৪ মে উৎপাদন অনুযায়ী ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়নি, হতাশ হাওরাঞ্চলের কৃষক সুরমা’র গ্রাসে বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি-সড়ক
ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ বিষয়ে জেলা প্রশাসক

পর্যবেক্ষণের সময় হয়তো আমাকে তাজমহল দেখানো হয়, দিল্লির বস্তি দেখানো হয় না

  • আপলোড সময় : ২৮-০২-২০২৫ ১২:৫৩:২২ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৮-০২-২০২৫ ০১:৪৭:৪২ পূর্বাহ্ন
পর্যবেক্ষণের সময় হয়তো আমাকে তাজমহল দেখানো হয়, দিল্লির বস্তি দেখানো হয় না
স্টাফ রিপোর্টার::
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর অনুপ্রেরণায় গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক), সুনামগঞ্জ আয়োজিত অধিপরামর্শ সভায় সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজের মধ্যে কম্পেশন, স্লোপসহ গুণগত মান বজায় রাখা এবং টেকসই বাঁধ নির্মাণ ও বাঁধের কাজ তদারকির জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ প্রশাসনের লোকজন পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। পর্যবেক্ষণের সময় হয়তো আমাকে তাজমহল দেখানো হয়, দিল্লির বস্তি দেখানো হয় না।
সনাক সহ-সভাপতি অ্যাড. খলিল রহমানের সঞ্চালনায় বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জ শহরের শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে আয়োজিত অধিপরামর্শ সভায় তিনি কথাগুলো বলেন।
জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া আরো বলেন, আমি জনগণের চাকর, আমাকে দিয়ে যত পারেন আপনারা কাজ করিয়ে নিবেন। আমি সুনামগঞ্জে ছয় মাসের মতন হবে এসেছি। এখানকার পরিবেশ-প্রতিবেশ সম্পর্কে আমার তেমন ধারণা ছিল না, কাজ করতে করতে আমি শিখছি। সুনামগঞ্জ হাওর বাওরের একটি নিচু এলাকা। এখানে নদী খনন ও হাওরের সাথে সংযুক্ত খালগুলো দ্রুত খনন করা জরুরি।
পরবর্তিতে সনাক যে সুপারিশগুলো করেছে তা দ্রুত বাস্তবায়ন হবে বলে তিনি আশ্বাস প্রদান করেন। সনাক সদস্যরা বাঁধের কাজ সরেজমিনে প্রত্যক্ষ করে জেলা প্রশাসক বরাবর ৮ দফা সুপারিশ পেশ করেছেন।

সনাক সভাপতি অ্যাড. নাজনীন বেগম সুপারিশগুলো উত্থাপন করেন। এ গুলো হল- ১. দৃশ্যমান সাইনবোর্ডে প্রয়োজনীয় সকল তথ্য অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বিশেষ করে: বরাদ্দের পরিমাণ, বাঁধের প্রস্থ ও উচ্চতার সঠিক মাপ অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে দৃষ্টি দিতে হবে। ২. ক্লোজারগুলোতে অবশ্যই উন্নত মানের জিও ব্যাগের বস্তা দিতে হবে। ৩. একই হাওরের পাশাপাশি পিআইসিগুলোর কাজ সমান তালে করা, বাস্তবে দেখা যায় এক পিআইসি’র বাঁধের কাজ খুব ভালো হয়েছে - তার পাশের টাই আবার দুর্বল, যাতে করে হাওরের ফসল কোনক্রমেই রক্ষা করা সম্ভব নয়। ৪. পিআইসি কাজের মান ও অগ্রগতি বিবেচনা করে কাবিটা নীতিমালা অনুযায়ী কিস্তি’র টাকা সময়মত পরিশোধ করা। ৫. বাঁধের নকশা, নির্মাণ কাল, নির্মাণ স্থান, নির্মাণ ব্যয় এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় বিষয়ে পাউবো-সুনামগঞ্জ সোশ্যাল অডিট (সামাজিক নিরীক্ষা) ও বাজেট ট্র্যাকিং (বাজেট পর্যবেক্ষণ) করে গণশুনানির ব্যবস্থা করতে হবে। ৬. বাঁধে দুর্মুজ সঠিকভাবে করা। বাঁধের ঢাল ও সংলগ্ন এলাকায় ঘাস এবং উপযুক্ত গাছের আচ্ছাদন সৃষ্টি করতে হবে। ৭. ডুবো বাঁধের স্থান নির্ধারণ, ডুবো বাঁধ ও স্লুইসগেট নির্মাণ, সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্থানীয় জনগণের অভিজ্ঞতা ও চাহিদাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। ৮. নির্দিষ্ট সময়ে বাঁধ নির্মাণ কার্যক্রম শুরু এবং শেষ করার লক্ষ্যে পাউবো- সুনামগঞ্জ’কে যথাযথ পরিবীক্ষণ ও তদারকি ব্যবস্থা আরো জোরদার করতে হবে।
পাউবো সূত্রে জানাগেছে, সুনামগঞ্জের হাওরে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণের সময়সীমা গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি। সুনামগঞ্জে এবার ১২টি উপজেলার ৫৩টি হাওরে ৬৮৬টি প্রকল্পে বাঁধের কাজ হচ্ছে। এ জন্য প্রাক্কলন ধরা হয়েছে ১২৭ কোটি টাকা। এখন পর্যন্ত বরাদ্দ পাওয়া গেছে ৮৭ কোটি টাকা। তবে এখনো দ্বিতীয় কিস্তির টাকা না পাওয়ায় কাজে থাকা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) লোকজন পড়েছেন বেকায়দায়। অধিপরামর্শ সভায় বক্তারা বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে কাজ দেখার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তারা বলেন, সেই পুরোনো ধারায় কাজ চলছে। সামনে কৃষকের নাম থাকলেও পেছনে রয়েছেন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও স্থানীয় প্রভাবশালীরা। অনেক স্থানে মাটি ফেলা হয়নি। অথচ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে ৮২ ভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে। এগুলো অবাস্তব কথা। এখন পর্যন্ত ৬০ থেকে ৬৫ ভাগ কাজ হয়েছে। এবারও সময়মতো কাজ শেষ হবে না। কাজের তদারকিতে দুর্বলতা রয়েছে। তদারকি বাড়াতে হবে।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন, হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায়, হাওর বাঁচাও আন্দোলন সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হক মিলন, জনউদ্যোগের আহ্বায়ক ও সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) সদস্য রমেন্দ্র কুমার দে মিন্টু, কানিজ সুলতানা প্রমুখ।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স