মো. বায়েজীদ বিন ওয়াহিদ ::>
হাওরের জলমহালে মাছ লুটপাট কোনোভাবেই থামছে না। দিরাই-শাল্লার পর এবার ‘মব সিস্টেমে’ জামালগঞ্জে সরকারিভাবে ইজারা দেওয়া জলমহালে মাছ লুট করেছে হাজারো উচ্ছৃঙ্খল জনতা।
বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই মাইকিং করে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিয়ে আনন্দ-উল্লাস করে ভান্ডা বিল গ্রুপে মাছ ধরতে নামেন ১০-১৫ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে অন্তত ১০টি জলমহালে প্রায় আট থেকে দশ কোটি টাকার মাছ লুট করেছে বলে বিভিন্ন ইজারাদার সূত্রে জানা গেছে। ভান্ডা গ্রুপ জলমহালের ইজারাদার জানিয়েছেন, বুধবার বিকেলে দিরাই উপজেলার ও জামালগঞ্জ উপজেলার সীমান্ত এলাকা বাংলা বাজারের বিভিন্ন মাইকে ঘোষণা দেয়া হয়েছে বৃহস্পতিবার সকালে জামালগঞ্জ উপজেলার ফেনারবাঁক ইউনিয়নের ভান্ডা গ্রুপ জলমহালে মাছ ধরা হবে। এই খবর পেয়ে ভান্ডা গ্রুপ জলমহালের ইজারাদার মামুদপুর একতা মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেডর সাধারণ স¤পাদক মো. ইজাজুল হক সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক, জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জামালগঞ্জ থানাতে বিষয়টি লিখিতভাবে অবগত করেন। পরে জেলা প্রশাসক, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং থানা পুলিশের মাধ্যমে সর্বোচ্চ সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। কিন্তু বাস্তবে লুটপাটকারীদের হাত থেকে মাছ লুট বাঁচাতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী দিরাই উপজেলার রফিনগর, সুজানগর, ছাদিরপুর, সেচনি, মির্জাপুর, উলাখালী গ্রামসহ বিভিন্ন গ্রামের প্রায় কয়েক হাজার উচ্ছৃঙ্খল মানুষ বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই ভান্ডা গ্রুপ জলমহালে জাল,পলোসহ বিভিন্ন যন্ত্র সামগ্রী নিয়ে মাছ লুটপাটে অংশগ্রহণ করে। পরে ঘটনাস্থলে জামালগঞ্জ থানা পুলিশ গেলে তাদের দেখে লুটপাটকারীরা একসাথে হুঙ্কার দিয়ে উঠে। হাজার হাজার জনস্রোতের কাছে অসহায় হয়ে পড়ে থানা পুলিশ।
পরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছলে ততক্ষণে জলমহালের প্রায় কোটি টাকার মাছ লুট করে নিয়ে যায় লুটপাটকারীরা।
এতে ব্যাপারে ভান্ডা গ্রুপ জলমহালের ইজারাদার মো. ইজাজুল হক জানান,
জলমহালটি ১৪৩১ থেকে ১৪৩৬ বাংলা সনের জন্য উন্নয়ন স্কীমে নেয়া হয়েছে। আমরা জলমহালটির প্রায় ৭৫ লক্ষ টাকা সরকারি রাজস্ব দিয়েছি। এবং বাঁশ, কাটা ও পাহারাদারের বেতনসহ প্রায় কোটি টাকার উপরে খরচ করেছি। সব টাকাই লস হয়ে গেলো। আমরা নিঃস্ব হয়ে গেলাম। সরকারের কাছে আমাদের দাবি দোষীদের বিরুদ্ধে যেন আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়।
এ ব্যাপারে জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুশফিকীন নূর জানান, জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন বিলের ইজারাদাররা দোষীদের নামের তালিকা করে দিলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাছাড়া ভবিষ্যতে যেন আর এরকম ঘটনা না ঘটে সেদিকে উপজেলা প্রশাসন সজাগ দৃষ্টি রাখবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
‘মব সিস্টেমে’ আরেকটি জলমহালের মাছ লুট
- আপলোড সময় : ০৭-০৩-২০২৫ ১২:১৫:৩২ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৭-০৩-২০২৫ ১২:২০:০০ পূর্বাহ্ন

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ