শান্তিগঞ্জে আবাসিক এলাকায় পোল্ট্রি ফার্ম, দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী
- আপলোড সময় : ২৯-০৩-২০২৫ ১২:৫৯:৪৫ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ২৯-০৩-২০২৫ ১২:৫৯:৪৫ পূর্বাহ্ন

শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি ::
শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নের গাগলী গ্রামের আবাসিক এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে পোল্ট্রি ফার্ম। এই ফার্মের মোরগের বিষ্ঠা তীব্র দুর্গন্ধে বসতবাড়িগুলোতে বসবাস করা দুবির্ষহ হয়ে পড়েছে স্থানীয়দের। সম্প্রতি এ ব্যাপারে শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে ভুক্তভোগী গাগলী গ্রামের আব্দুল মতিনের ছেলে মো. ওয়াসিম উদ্দিন লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
সরেজমিনে গতকাল শুক্রবার (২৮ মার্চ) দুপুরে গাগলী গ্রামে গিয়ে দেখা যায় যে, ভুক্তভোগী মো. ওয়াসিম উদ্দিনের বাড়ির পার্শ্ববর্তী ৬ বছর ধরে একই গ্রামের পোল্ট্রি ব্যবসায়ী মৃত নবাব মিয়ার ছেলে মিজানুর রহমান একটি বড় পোল্ট্রি ফার্ম সেড নির্মাণ করে পোল্ট্রি মোরগের বাচ্চা লালন-পালন করছেন। অথচ তিনি নিজে তার পোল্ট্রি ফার্ম এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস না করে অন্যত্র বসবাস করেন। নিয়ম মোতাবেক জনবসতিপূর্ণ এলাকায় ৫০০ গজ দূরত্বে মুরগী ও ডিম উৎপাদন করার জন্য ফার্ম করার কথা থাকলেও তিনি তা না মেনে প্রতিবেশীর বসতঘরের সীমানা ঘেষে তা নির্মাণ করেছেন। এতে ভুক্তভোগী ও আশপাশের বসতবাড়ির শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ লোকজন পোল্ট্রি ফার্মের দুর্গন্ধের কারণে বসতবাড়িতে বাস করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, পোল্ট্রি ব্যবসায়ী মিজানুর রহমানের পোল্ট্রি ফার্মের দুর্গন্ধের কারণে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। ফার্মের আশপাশে মোরগের বিষ্ঠা ও ময়লা-আববর্জনা উন্মুক্ত জায়গায় রাখার ফলে দুর্গন্ধ ছড়ানোর পাশাপাশি রোগজীবাণুও ছড়িয়ে পড়ছে। এতে পরিবেশ ও জনমানুষের ক্ষতি হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মুক্তার হোসেন, প্রতিবেশী সিরাজুল মিয়া, ফখরুজ্জামান, গুলজার আহমদ বলেন, এ পোর্ট্রি ফার্মের মোরগের বিষ্ঠার দুর্গন্ধে আমাদের বসতবাড়িতে বসবাস করা প্রায় মুশকিল হয়ে পড়েছে। ফার্মের দুর্গন্ধের সাথে রোগ জীবাণুও ছড়িয়ে পড়ায় অনেকেই নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। দিন দিন রোগ-বালাই বৃদ্ধি পাচ্ছে। দিনের বেশির ভাগ সময়ে বসতঘরে অবস্থান করতে পারি না। বর্ষাকালে বৃষ্টি হলে আরো বেশি দুর্গন্ধ ছড়ায়।
ভুক্তভোগী মো. ওয়াসিম উদ্দিন জানান, আমার বসতভিটা লাগোয়া পোল্ট্রি ফার্মের দুর্গন্ধে কারণে পরিবার নিয়ে বাড়িতে বসবাস করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে আমিসহ আমার পরিবারের লোকজন ও শিশুরা রোগে আক্রান্ত হচ্ছি এবং আমার পরিবারে শ্বাসকষ্ট রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমি মিজানুরকে তার ফার্মের ময়লা ও আবর্জনা নিরাপদ জায়গায় ফেলতে ও ফার্মের দুর্গন্ধ না ছাড়ানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করি। সে কোন কথাই শুনে নাই। বরং আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে। তাই আমি বাধ্য হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
পোলট্রি ফার্মের মালিক গাগলী গ্রামের নবাব মিয়ার ছেলে মিজানুর রহমান বলেন, জনবসতিপূর্ণ এলাকায় পোল্ট্রি ফার্ম স্থাপন করা অবৈধ এটা আমি জানি। আমি চাই আমার পাড়া-প্রতিবেশীকে নিয়ে চলতে। চাই না কারো কষ্ট হোক। আমি ধানের তোষ ফার্মের পাশে ফেললেও ফার্মের ময়লা, মোরগের বিষ্ঠা ও আবর্জনা দূরবর্তী জায়গায় ফেলি। এখন থেকে আশপাশে আর ফেলবো না।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুকান্ত সাহা বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। জনগণের বসবাসে বিঘ্ন ঘটবে এমন কোনো কাজ করা যাবে না। দুর্গন্ধ ছড়ায় কিংবা পরিবেশের ক্ষতিসাধন করে এমন পোল্ট্রি ফার্ম জনবসতি থেকে দূরে স্থাপন করতে হবে। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ