সুনামগঞ্জ , সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ৩১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ফেব্রুয়ারিতে মহোৎসবের নির্বাচন হবে : প্রধান উপদেষ্টা এক ইউপি সদস্য ১৩ প্রকল্পের সভাপতি! জমে উঠেছে দিরাই বাজার মহাজন সমিতির নির্বাচন দুর্ঘটনায় জেলা প্রশাসনের দুই কর্মীর মৃত্যু, চালকের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন তারেক রহমান দ্রুত দেশে ফিরবেন : লুৎফুজ্জামান বাবর দুর্গম হাওরের ২২ হাজার শিশুকে সাঁতার শিখাচ্ছে সরকার পরবর্তীতে আমরা প্রত্যেকেই টার্গেট হব : নাহিদ ইসলাম দায়িত্ব নিয়েই নেপালে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করলেন সুশীলা কার্কি আন্তর্জাতিক নির্মল বায়ু দিবস পালিত কণ্ঠশিল্পী ফরিদা পারভীন আর নেই সড়ক দুর্ঘটনায় জেলা প্রশাসনের দুই কর্মী নিহত সুশীলা কার্কিকে নেপালের অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা তাহিরপুরে বিএনপি নেতার ওপর হামলাকারীদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন তাহিরপুরে হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সম্মেলন সম্পন্ন আইসিইউ চালু হবে কবে? জাতীয় নির্বাচনের ‘টেস্ট’ ছিল ডাকসু, ভালোভাবে উত্তরণ : প্রেস সচিব শস্যবীমা : কৃষক ও অর্থনীতির নিরাপত্তা কুরবাননগর ইউনিয়ন বিএনপি’র সম্মেলন সম্পন্ন বিশ্বম্ভরপুরে বিএনপি নেতা অ্যাড. আব্দুল হকের গণসংযোগ নেই পোকামাকড়ের শঙ্কা, লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি ফলনের সম্ভাবনা

মানবাধিকার সুরক্ষা সতর্কবার্তায় কান দেননি নীতিনির্ধারকরা

  • আপলোড সময় : ৩১-০৮-২০২৪ ১২:০৩:৪৩ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ৩১-০৮-২০২৪ ১২:০৩:৪৩ অপরাহ্ন
মানবাধিকার সুরক্ষা সতর্কবার্তায় কান দেননি নীতিনির্ধারকরা
সুনামকণ্ঠ ডেস্ক :: বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে নিকট অতীতে সোচ্চার ছিল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। বিভিন্ন দেশ, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সংঘটিত অপরাধ বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে। তবে সরকারের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারকরা এ বিষয়ে যথেষ্ট আগ্রহী ছিলেন না। মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়ন ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য একাধিকবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও অন্যান্য মেকানিজমকে শক্তিশালী করার জন্য সতর্ক করা হলেও তাতে কর্ণপাত করা হয়নি। এ কারণেই অন্তর্বর্তী সরকার গুম সংক্রান্ত কমিশন গঠন, গুম সংক্রান্ত কনভেনশনে অ্যাক্সেশনসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হচ্ছে। এ বিষয়ে জেনেভায় জাতিসংঘ সদর দফতরে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি মো. সুফিউর রহমান বলেন, মানবাধিকার একটি সর্বজনীন বিষয়। অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা শক্তিশালী না হলে এবং দেশীয় সংস্থার গ্রহণযোগ্যতা কম হলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সুযোগ পায়। এ ক্ষেত্রে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে সরব ভূমিকা পালন করে। এ খানে ভূ-রাজনৈতিক কারণও ভূমিকা রাখে। মানবাধিকার সুরক্ষা নিয়ে জেনেভার মানবাধিকার কাউন্সিল বা মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের অফিস বা মানবাধিকার ম্যান্ডেট আছে এমন সংস্থাগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকর্তারা তাদের উদ্বেগের বিষয়টি আমাদের জানাতো এবং আমরা নিয়মিত এ বিষয়ে সরকারকে অবহিত করে এর সুরাহা করার জন্য পরামর্শ দিয়েছি। তবে দুর্ভাগ্যবশত সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারকরা এ বিষয়ে যথেষ্ট আগ্রহী ছিলেন না। অন্যান্য দেশের গুম পরিস্থিতি : বিভিন্ন দেশেই রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় অথবা ননস্টেট অ্যাকটরদের মাধ্যমে জোরপূর্বক অপহরণ হয়ে থাকে এবং এ সংক্রান্ত অভিযোগের একটি তালিকা সংরক্ষণ করে থাকে জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল। ২০২২ সালে হিউম্যান রাইটস কাউন্সিলের ৫১তম সভায় উপস্থাপিত গুম বিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপের রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশে গুম বিষয়ক অপরাধের সংখ্যা ছিল ৮১। দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভারতে এর সংখ্যা ৪৪৩, পাকিস্তানে ৭৯৯, নেপালে ৪৮০ এবং শ্রীলঙ্কায় ৬২৬৪। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ফিলিপাইনে এর সংখ্যা ৫৯০ এবং থাইল্যান্ডে ৭৫। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধেও চারটি গুমের অভিযোগ আছে। এ বিষয়ে সুফিউর রহমান বলেন, ‘অভিযোগের সংখ্যার তুলনায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রচারণা অনেক বেশি। কারণ দেশটির অভ্যন্তরীণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা যেমন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বা অন্য মেকানিজমের ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বিশ্বাস কম।’ আইনের শাসন ও গণতান্ত্রিক চর্চায় ঘাটতির কারণে নেতিবাচক প্রচারণা আরও বেশি হয় বলে তিনি জানান। এই কূটনীতিক বলেন, ‘পৃথিবীতে এমন কোনও দেশ নেই যেখানে অপরাধ হয় না। কিন্তু সেটির বিচার, অপরাধীদের দায়বদ্ধতা ও অপরাধ প্রতিরোধের জন্য অভ্যন্তরীণ মেকানিজম কাজ করে, যেসবের ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নির্ভর করে। ফলে ওইসব দেশে অপরাধ বেশি হলেও তাদের নিয়ে কম কথা হয়।’ বাংলাদেশে মানবাধিকার অপরাধ : জাতিসংঘ চার্টার ও সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা (ইউনিভার্সাল ডিক্লারেশন অব হিউম্যান রাইটস) অনুযায়ী, একজন নাগরিক বা যেকোনও ব্যক্তির মৌলিক ও অন্যান্য অধিকার আছে। বাংলাদেশের সংবিধানেও মানবাধিকারকে সমুন্নত রাখা হয়েছে। বাংলাদেশের মানবাধিকার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যে অভিযোগগুলো বেশি করে সেগুলো হচ্ছে– গুম, আইনবহির্ভূত হত্যা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সমাবেশ করার স্বাধীনতা, শ্রম অধিকারসহ আরও কয়েকটি বিষয়। এই অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় হয়তো এত বেশি সরব হতো না যদি জাতীয় মানবাধিকার কমিশনসহ অন্যান্য অভ্যন্তরীণ মেকানিজম তাদের ভূমিকা যথাযথভাবে পালন করতো এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে জবাবদিহির আওতায় রাখা হতো। কর্মপরিধি অনুযায়ী, অভিযোগের ভিত্তিতে বা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে যেকোনও ধরনের তদন্ত করার এখতিয়ার আছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের। কিন্তু গুম বা আইনবহির্ভূত হত্যাকা-ের মতো বড় অপরাধের ক্ষেত্রে তারা নামমাত্র ভূমিকা রেখেছে বলে রাষ্ট্রদূত সুফিউর রহমান জানান। জেনেভার স্থায়ী মিশন গত দুই বছরে লিখিতভাবে একাধিকবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে গুম, আইনবহির্ভূত হত্যাকা-সহ বিভিন্ন বিষয়ে ভূমিকা নেওয়ার জন্য সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দিলেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং নীতিনির্ধারকরা সেটি পালনে কার্যকর ভূমিকা নেয়নি বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, ‘মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য অভ্যন্তরীণ সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করা এবং তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির কোনও বিকল্প নেই। এর জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রয়োজন।’

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স