সুনামগঞ্জ , শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ২০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
দায়িদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নিতে জুডিসিয়াল তদন্ত কমিটি গঠন তৎকালীন আইজিপির বর্ণনায় ৫ আগস্ট সরকারিপ্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন জামালগঞ্জে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন সুনামগঞ্জ হাসপাতালে ১২ ধরনের আড়াই কোটি টাকার ওষুধ মেয়াদোত্তীর্ণ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে জুলাই গণহত্যা : রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি মামুন শিক্ষাক্ষেত্রে সুনামগঞ্জকে এগিয়ে নিতে সবার সহযোগিতা চাই : জেলা প্রশাসক অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণ না করার নির্দেশ দিলেন জেলা প্রশাসক স্ত্রীর সাথে অভিমান করে স্বামীর আত্মহত্যা প্রকৌশলী কামরুল হকের মৃত্যু নিয়ে রহস্য স্বজনদের দাবি ‘পরিকল্পিত হত্যা’ বিএনপি’র ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত নির্বাচনে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি থাকবে নৌ ও বিমান বাহিনী সুনামগঞ্জ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল উদ্বোধন অকেজো ১০ হাজার নলকূপ বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ জামালগঞ্জে যুবদলের কর্মী সমাবেশে কৃষক লীগ নেতা! ‎সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটিতে নতুন সভাপতি শামস শামীম, সম্পাদক জসিম মাছশূন্য হাওর, সংকটে জল-জীবিকা ব্রিটিশ-বাংলাবাজার সড়ক বেহাল : দুর্ভোগে হাজারো মানুষ ভিপি নুরের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ

সীমান্তে বিএসএফের পুশইনের নেপথ্যে কী?

  • আপলোড সময় : ০৮-০৫-২০২৫ ০১:২৯:৩৮ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৮-০৫-২০২৫ ০১:২৯:৩৮ পূর্বাহ্ন
সীমান্তে বিএসএফের পুশইনের নেপথ্যে কী?
সুনামকণ্ঠ ডেস্ক :: কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর প্রাণঘাতী হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধের দামামা বাজছে। ইতোমধ্যে দুই দেশের সামরিক বাহিনী পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়েছে। মঙ্গলবার (০৬ মে) দিবাগত মধ্যরাতে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযানে পাকিস্তানে অন্তত ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ভারতের হামলার জবাবে ভারত শাসিত কাশ্মীরে পাকিস্তানি পাল্টা হামলায় প্রাণহানি হয়েছে ১০ জনের। একইসঙ্গে ভারতের ৫টি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছে পাকিস্তান। প্রতিবেশী দুই দেশের এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে বাংলাদেশের কয়েকটি সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী-বিএসএফ শতাধিক মানুষকে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করিয়েছে। অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে আটজন বাংলাদেশি এবং অন্যরা নিজেদের রোহিঙ্গা ও ভারতের গুজরাটের বাসিন্দা বলে দাবি করছেন। বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে মঙ্গলবার দিবাগত রাত ও বুধবার সকালে কুড়িগ্রাম জেলা থেকে ৪৪ জনকে এবং খাগড়াছড়ি থেকে ৬৬ জনকে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা ও পানছড়ির ৩টি সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে ৬৬ ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশ (পুশইন) করে বিএসএফ। বুধবার ভোরে জোর করে তাদের বাংলাদেশে প্রবেশ করানো হয়। এ ব্যাপারে খাগড়াছড়ির ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক নাজমুন আরা সুলতানা জানান, ভারতীয় নাগরিকদের পুশইন করার খবরটি সঠিক। এখন পর্যন্ত জেলার তিনটি সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে ৬৬ জন ভারতীয় নাগরিককে পুশইন করার খবর পাওয়া গেছে। অন্যদিকে জামালপুর বিজিবি ৩৫ ব্যাটালিয়নের রৌমারী ক্যা¤েপর কোম্পানি কমান্ডার সুবেদার সোহেল রানা রোহিঙ্গাসহ ৩০ জনকে আটকের বিষয় নিশ্চিত করেছেন। অপরদিকে জেলার ভূরুঙ্গামারীর ভাওয়ালকুড়ি সীমান্ত পথে ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় থাকা নারী শিশুসহ ১৪ রোহিঙ্গা নাগরিককে আটক করেছে বিজিবি। এরা সবাই কক্সবাজার উখিয়া ক্যা¤প থেকে দালালদের সহায়তায় ভূরুঙ্গামারীর ভাওয়াল কুড়ি বাজারের কাছে জড়ো হয়েছিলেন। আটকদের বরাত দিয়ে বিজিবির একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, আটক রোহিঙ্গা ও বাংলাদেশি নাগরিকরা ২০১৮ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ভারতের আসাম রাজ্যের গুয়াহাটি লকড়া সেন্ট্রাল কারাগারে আটক ছিলেন। পরে তাদের আসাম রাজ্যের গোয়ালপাড়া মাটিয়াল ডিটেনশন ক্যাম্পে আটক রেখে সমস্ত তথ্য প্রমাণ কেড়ে নেওয়া হয়। মঙ্গলবার দক্ষিণ শালমারা মাইনকার চর শাহপাড়া বিএসএফ রাতের আঁধারে তাদের বাংলাদেশে পুশব্যাক করে। বিএসএফ কর্তৃক শতাধিক মানুষকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বাংলাদেশ সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা। এ ছাড়াও বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর পুলিশ সুপারদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর পুলিশ সুপারদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়ে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, ভারত পাকিস্তান যুদ্ধকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের নিরাপত্তা যেন বিঘিœত না হয়, কোনো জঙ্গি বা সন্ত্রাসীরা যেন দেশে প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য সীমান্ত জেলাগুলার পুলিশ সুপারদের সতর্ক করা হয়েছে। বিএসএফ কর্তৃক পুশইনের ঘটনায় শতাধিক মানুষকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানোর ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। ভারত থেকে এভাবে পুশইন করাটা সঠিক প্রক্রিয়া নয় বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেনটেটিভ ড. খলিলুর রহমান। খাগড়াছড়ি ও কুড়িগ্রাম জেলা সীমান্তে ভারত থেকে নাগরিকদের পুশ ইন করার বিষয়ে তিনি বলেছেন, আমরা প্রতিটি কেস আলাদা আলাদাভাবে নিরীক্ষণ করছি। আমাদের সিদ্ধান্ত হচ্ছে, আমাদের দেশের নাগরিক যদি কেউ হয়ে থাকেন, আর সেটা যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে তাদের আমরা গ্রহণ করব। তবে এটা ফরমাল চ্যানেলে হতে হবে। এভাবে পুশইন করাটা সঠিক প্রক্রিয়া নয়। সীমান্ত দিয়ে মানুষকে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেওয়ার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অনেক বাংলাদেশি। শান্ত সীমান্তকে অশান্ত করার কী মানে, এমন প্রশ্ন তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ইতিহাস বিষয়ের গবেষক আলতাফ পারভেজ। ফেসবুকে পোস্টে আলতাফ পারভেজ লিখেছেন, “পাকিস্তানে হামলার কাছাকাছি সময়ে ভারত খাগড়াছড়ি সীমান্ত দিয়ে তার দেশের নাগরিকদের বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দিতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যে এই সীমান্ত দিয়ে ৬০ জনের অধিক মানুষকে পুশইন করা হয়েছে। যাদের প্রবেশ করানো হয়েছে তাদের গুজরাট থেকে ধরে আনা হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। পুশইনের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। খাগড়াছড়ির পাশাপাশি ভারত আরও কয়েকটি জেলার সীমান্ত দিয়েও মানুষকে বাংলাদেশে ঢুকিয়ে দেয়ার প্রচেষ্টা নিয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। হঠাৎ করে শুরু হওয়া ভারতের এই প্রচেষ্টাকে বেশ সমন্বিত উদ্যোগ বলে মনে হচ্ছে।” “শান্ত সীমান্তকে এভাবে অশান্ত করার কী মানে” প্রশ্ন তুলে আলতাফ পারভেজ বলেন, “এরকম পদক্ষেপ তো বেশ উস্কানিমূলক। ভারত এ বিষয়টি নিয়ে কূটনৈতিক চ্যানেলে বাংলাদেশের সঙ্গে কোন আলোচনা করেছে কি?” সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে ফেসবুকে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রকৌশলী কল্লোল মোস্তফা। তিনি লিখেছেন, “ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ একদিনে শতাধিক মানুষকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে। এর মধ্যে কুড়িগ্রামের রৌমারী ও ভূরুঙ্গামারী উপজেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ৪৪ জনকে এবং খাগড়াছড়ির মাটিরাঙা ও পানছড়ি সীমান্ত দিয়ে ৬৬ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়া (পুশইন) হয়েছে। বিএসএফ কর্তৃক রাতের আঁধারে ঠেলা দেওয়া ১১০ জনের মধ্যে মাত্র আট জন নিজেদেরকে বাংলাদেশী বলে পরিচয় দিয়েছেন, বাকি সবাই নিজেদের রোহিঙ্গা ও ভারতের গুজরাটের বাসিন্দা বলে দাবি করছেন। এক দেশের কোন নাগরিক আরেক দেশে অবৈধ অনুপ্রবেশ করলে তাকে দ্বিপাক্ষিক আইনগত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ফেরত পাঠাতে হয়। নাগরিকত্ব নিশ্চিত না করে ভারত যেভাবে এই মানুষগুলোকে বাংলাদেশে ঠেলে দিল তা স¤পূর্ণ বেআইনি, মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক রীতিনীতির পরিপন্থী।” কল্লোল মোস্তফা আরও লিখেছেন, “পাকিস্তানে মিসাইল হামলা চালানোর কাছাকাছি সময়ে ভারত কর্তৃক বাংলাদেশের সীমান্ত দিয়ে প্রায় শতাধিক মানুষকে ঠেলে দেওয়া ঘটনাটি যথেষ্ট উস্কানিমূলক। বাংলাদেশের উচিত কূটনৈতিক চ্যানেলে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানানো এবং ঠেলে দেওয়া ব্যক্তিদের পরিচয় নিশ্চিত করে ভারতে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা। সেই সাথে ভারত যেন সীমান্ত দিয়ে এভাবে পুশইন করতে না পারে সেজন্য সীমান্তে নজরদারি আরো জোরদার করা।” -বাংলানিউজ২৪.কম

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
দায়িদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নিতে জুডিসিয়াল তদন্ত কমিটি গঠন

দায়িদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নিতে জুডিসিয়াল তদন্ত কমিটি গঠন