সুনামগঞ্জ , শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ২০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
দায়িদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নিতে জুডিসিয়াল তদন্ত কমিটি গঠন তৎকালীন আইজিপির বর্ণনায় ৫ আগস্ট সরকারিপ্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন জামালগঞ্জে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন সুনামগঞ্জ হাসপাতালে ১২ ধরনের আড়াই কোটি টাকার ওষুধ মেয়াদোত্তীর্ণ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে জুলাই গণহত্যা : রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি মামুন শিক্ষাক্ষেত্রে সুনামগঞ্জকে এগিয়ে নিতে সবার সহযোগিতা চাই : জেলা প্রশাসক অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণ না করার নির্দেশ দিলেন জেলা প্রশাসক স্ত্রীর সাথে অভিমান করে স্বামীর আত্মহত্যা প্রকৌশলী কামরুল হকের মৃত্যু নিয়ে রহস্য স্বজনদের দাবি ‘পরিকল্পিত হত্যা’ বিএনপি’র ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত নির্বাচনে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি থাকবে নৌ ও বিমান বাহিনী সুনামগঞ্জ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল উদ্বোধন অকেজো ১০ হাজার নলকূপ বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ জামালগঞ্জে যুবদলের কর্মী সমাবেশে কৃষক লীগ নেতা! ‎সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটিতে নতুন সভাপতি শামস শামীম, সম্পাদক জসিম মাছশূন্য হাওর, সংকটে জল-জীবিকা ব্রিটিশ-বাংলাবাজার সড়ক বেহাল : দুর্ভোগে হাজারো মানুষ ভিপি নুরের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ
মাঠে বাঁধ নির্মাণ সামগ্রী, বন্ধ খেলাধুলা

শাল্লায় পাউবো’র দখলে খেলার মাঠ!

  • আপলোড সময় : ১৯-০৫-২০২৫ ১২:৩৩:১৮ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৯-০৫-২০২৫ ১২:৩৬:৩৫ অপরাহ্ন
শাল্লায় পাউবো’র দখলে খেলার মাঠ!
জয়ন্ত সেন ::
শাল্লা সরকারি ডিগ্রি কলেজ সংলগ্ন ব্রিজ হতে সদরের অদূরে মুক্তারপুর ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার পানি উন্নয়ন বোর্ডের স্থায়ী বাঁধের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে আগামী জুন মাসে। কিন্তু এখন পর্যন্ত অর্ধেক কাজও শেষ হয়নি। এসব কাজে ঠিকাদারের লোকজন ব্লক তৈরির জন্য পূর্বেই জায়গা নির্ধারণ করেছিল হবিবপুর ইউপির আনন্দপুর গ্রামের ফুটবল খেলার মাঠ। গত মার্চ মাসে মাঠকে খেলার উপযোগী করে দেয়ারও কথা ছিল। কিন্তু ঠিকাদার কথা রাখেনি। উল্টো ফসলরক্ষায় স্থায়ী বাঁধের নামে দোহাই দিয়ে পুনরায় ব্লক তৈরির জন্য খেলার মাঠ আবারও ঠিকাদারের অভিভাবক হয়ে দখল নিতে মরিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।
গতকাল রবিবার সরেজমিনে আনন্দপুর খেলার মাঠে এমনই দৃশ্য দেখা গেছে। মাঠ দ্রুত দখলে নিতে বিকেলে ১০ থেকে ২০টি ব্লক তৈরি করতেও দেখা যায় সংশ্লিষ্টদের।
এমন পরিস্থিতিতে চরম বিরোধিতা করে গ্রামের যুব সমাজ। তারা খেলাধুলা করার জন্য মাঠ উন্মুক্ত চায়। এতে অনেকটা বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় গ্রামের একটি অংশ। ২ ঘণ্টাব্যাপী চলে শিক্ষার্থীসহ যুব সমাজ বনাম গ্রাম্য মাতব্বরদের পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান। এমতাবস্থায় অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়ে শিক্ষার্থীরা। কিন্তু তারা হাল ছাড়তে রাজি নয়।
১৮ মে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে আনন্দপুর বাজারে মাঠের করণীয় বিষয় নিয়ে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হওয়ার পূর্বেই একাধিক নৌকা পাথর নিয়ে দাঁড়াইন নদীর তীরে অবস্থিত ফুটবল খেলার মাঠের পূর্বপ্রান্তে নোঙর করতে দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে যুব সমাজ ও শিক্ষার্থীরা। মাঠে দেখা যায়, এলোমেলোভাবে রয়েছে পূর্বের তৈরিকৃত ব্লক, পাথর, বালু ও ব্লক তৈরির যন্ত্রাংশ। মাঠে প্রতিদিনই যাতায়াত করছে ড্রামট্রাক। খেলার মাঠ ড্রামট্রাক চলাচল করায় কাঁদার বড় বড় গর্ত হয়ে গেছে।
অন্যদিকে এসব ভারি ব্লক তৈরি করার সময় মাঠের পূর্বদিকের অংশ গত বছরই ভাঙনের মুখে পড়েছে। এনিয়ে গ্রামে চলছিল সমালোচনাও। এখন আবারও মাঠে ব্লক তৈরি করতে দেখে উপজেলার সচেতন সমাজকেও সমালোচনায় মুখরিত হতে দেখা গেছে।

এদিকে, বন্ধ রয়েছে শিক্ষার্থীসহ যুব সমাজের খেলাধুলা। মাঠের উত্তর দিকে রয়েছে গিরিধর উচ্চ বিদ্যালয় ও পশ্চিমদিকে অবস্থিত ভাটি বাংলা কলেজ। এসব শিক্ষার্থীরা ওই মাঠে বর্ষা মৌমুমে খেলাধুলা করে থাকে। শাহীদ আলী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ ও আনন্দপুর গ্রামের এই দুটি মাঠই বর্ষায় পানি উঠেনা। এ দুটি মাঠই একমাত্র খেলাধুলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান। অপরদিকে শিক্ষার্থীরা স্কুল ও কলেজে জনসাধারণ শাল্লা সদরে চলাচলও করতে হয় ওই মাঠের উপর দিয়ে। যেকারণে যন্ত্রদানব ড্রামট্রাকের বেপরোয়া চলাচলে জনদুর্ভোগ বেড়েই চলেছে।
গ্রামের শিক্ষার্থীরা জানান, এই মাঠ গত মার্চ মাসে খালি করে খেলাধুলার জন্য উন্মুক্ত করার কথা ছিল। কিন্তু খালি করার পরিবর্তে আবারও তারা মালামাল নিয়ে পুনরায় ব্লক বানানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমনভাবে বছরের পর বছর মাঠে ব্লক তৈরি করা হলে আমরা আর খেলাধুলা করতে পারব না।
এ বিষয়ে আনন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষক ধীরেশ চন্দ্র সরকার বলেন, গত বছরই আমরা মাঠ দিতে ইচ্ছুক ছিলাম না। তারপরও শুনেছি ৩লাখ টাকার বিনিময়ে মাঠ ভাড়া দেয়া হয়েছে এক বছরের জন্য। গত বছরই মাঠের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে গেছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এদায় গ্রামের নয়। এলাকার শিশু কিশোর ও যুব সমাজকে খেলাধুলায় উৎসাহ না দিয়ে দমিয়ে রাখা সমাজের কাজ নয়। এতে মাদকে কিংবা মোবাইলে জুয়াখেলার মত অপরাধ জগতে পা বাড়াতে পারে যুব সমাজ। আমি এমন সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করি। মাঠকে উন্মুক্ত করে খেলাধুলার উপযোগী করার দাবি জানান তিনি।

এ ব্যাপারে হাওর বাঁচাও আন্দোলন শাল্লা উপজেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তরুণ কান্তি দাস বলেন, ব্লক দিয়ে স্থায়ী বাঁধের কতটুকু প্রয়োজন আছে হাওরে আমার জানা নেই। তবে শিক্ষার্থীদের খেলাধুলা বন্ধ করা উচিত নয়। আমি শিক্ষার্থী ও এলাকার যুব সমাজের খেলাধুলার পক্ষে।
সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বাবলু রায় বলেন, আমরা চাই ছেলেরা খেলাধুলা করুক। কিন্তু তাদেরও মাঠ দরকার আর আমাদেরকে এবছর ৪ লাখ টাকা দিতে পারে। এর আগে ৩লাখ টাকা দিয়েছে। সোমবার মিটিংয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলে জানান ওই মেম্বার। গ্রামের

কৃষক আব্দুল আজিজ বলেন, এসও সাহেব অনুরোধ করেছেন। কিন্তু যুবকরা মাঠ দিতে রাজি নয়। আমরাও তাদের সাথে ছিলাম। কিন্তু একা একা কি করব।

এ নিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের শাখা কর্মকর্তা এসও রিপন আলী বলেন, ঠিকাদার নাই! এখন আমাদের উপরই দায়িত্ব। উপজেলা চেয়ারম্যানের পরিবর্তে যেমন ইউএনও দায়িত্ব, তেমনি আমাদেরও। তিনি আরও বলেন, এই প্রকল্পের মেয়াদ আগামী জুন মাসে শেষ। পরে আরও সময় বাড়িয়ে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। তবে ঠিকাদারের লোকজন বাঁধের তদারকিতে শাল্লায় থাকলেও এই সভায় উপস্থিত হয়নি কেউ!

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পিয়াস চন্দ্র দাস বলেন, আমি তো বিষয়টি জানি না। আমি সুনামগঞ্জ থেকে ফিরছি। শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার কোনো বিকল্প নেই। শরীর চর্চার জন্য খেলাধুলা জরুরি। তিনি এসে বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান।
উল্লেখ্য, ৩,৭০০ মিটার স্থায়ী বাঁধের বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৪৮ কোটি টাকা।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
দায়িদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নিতে জুডিসিয়াল তদন্ত কমিটি গঠন

দায়িদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নিতে জুডিসিয়াল তদন্ত কমিটি গঠন