সুনামগঞ্জ , শুক্রবার, ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ২০ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
দায়িদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নিতে জুডিসিয়াল তদন্ত কমিটি গঠন তৎকালীন আইজিপির বর্ণনায় ৫ আগস্ট সরকারিপ্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন জামালগঞ্জে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন সুনামগঞ্জ হাসপাতালে ১২ ধরনের আড়াই কোটি টাকার ওষুধ মেয়াদোত্তীর্ণ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে জুলাই গণহত্যা : রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি মামুন শিক্ষাক্ষেত্রে সুনামগঞ্জকে এগিয়ে নিতে সবার সহযোগিতা চাই : জেলা প্রশাসক অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণ না করার নির্দেশ দিলেন জেলা প্রশাসক স্ত্রীর সাথে অভিমান করে স্বামীর আত্মহত্যা প্রকৌশলী কামরুল হকের মৃত্যু নিয়ে রহস্য স্বজনদের দাবি ‘পরিকল্পিত হত্যা’ বিএনপি’র ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত নির্বাচনে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি থাকবে নৌ ও বিমান বাহিনী সুনামগঞ্জ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল উদ্বোধন অকেজো ১০ হাজার নলকূপ বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ জামালগঞ্জে যুবদলের কর্মী সমাবেশে কৃষক লীগ নেতা! ‎সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটিতে নতুন সভাপতি শামস শামীম, সম্পাদক জসিম মাছশূন্য হাওর, সংকটে জল-জীবিকা ব্রিটিশ-বাংলাবাজার সড়ক বেহাল : দুর্ভোগে হাজারো মানুষ ভিপি নুরের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ

কৃষকের জমি কেটে সড়ক নির্মাণ ফায়দা লুটছেন আওয়ামী লীগ নেতা

  • আপলোড সময় : ২২-০৫-২০২৫ ০৯:২১:২১ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২২-০৫-২০২৫ ১০:৩২:৩১ পূর্বাহ্ন
কৃষকের জমি কেটে সড়ক নির্মাণ ফায়দা লুটছেন আওয়ামী লীগ নেতা
স্টাফ রিপোর্টার ::
হাওর এলাকায় উড়াল সড়ক ও ভৌত অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা-মধ্যনগর-মহেশখলা থেকে তাহিরপুর উপজেলার বিন্নাকুলি বাজার পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ ও পুনঃনির্মাণের কাজ করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।
প্রকল্পের আওতায় তাহিরপুর উপজেলার অংশে শিমুল বাগান থেকে ট্যাকেরঘাটের রাজাইগাঁও পর্যন্ত ২ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে স্থানীয় কৃষকদের মালিকানা জমির মাটি কেটে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
নিয়ম অনুযায়ী কৃষকরা মাটির মূল্য পাওয়ার কথা থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগসাজশে ক্ষমতা প্রয়োগ করে মাটি সরবরাহ করে ফায়দা লুটের নেয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে।
এদিকে মালিকানা জমিতে থেকে মাটি কেটে নিয়ে যাওয়ায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরের আবেদন জানিয়েছেন একাধিক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক। এলজিইডি সূত্র জানায়, প্রায় সাড়ে ৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ে মাহারাম নদীর উপর সেতু ও রাজাইগাঁও পর্যন্ত সড়কের কাজ করছে ঢাকার এমএস হামিম ইন্টারন্যাশানাল এন্ড মো. রাশেদুজ্জামান পিটার নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে শুরু হওয়া প্রকল্পটি ২০২৬ সালের মে মাসে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। প্রকল্পে সড়ক নির্মাণ কাজের মাটি ফেলার কাজ সম্পন্ন করেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি। নবনির্মিত এই সড়কটি নির্মাণ করতে ভেকুর সাহায্যে সড়কের দুইপাশ থেকে ১৫-২৫ ফুট চওড়া কৃষি জমির মাটি কেটে নেয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। যার বেশিরভাগই ব্যক্তিমালিকানাধীন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
নিয়ম অনুযায়ী ঠিকাদার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সড়কের মাটি সংগ্রহ করা কথা থাকলেও স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি নোয়াজ আলীসহ তাঁর অনুসারীদের যোগসাজশে জোরপূর্বক কৃষকদের জমি কেটে নেন সংশ্লিষ্টরা। এতে মাটি সংগ্রহ করে দেয়ায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা বাগিয়ে নেন স্থানীয় এই নেতা।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, সড়কটিতে মাহারাম গ্রামের অন্তত ৩০ কৃষকের মালিকানাধীন জমির সামন ও বাড়ির আঙিনার মাটি কেটে নেয়া হয়েছে। কোনো ধরনের ক্ষতিপূরণ ছাড়াই জোরপূর্বক জমির মাটি কেটে নেয়ায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন নিম্ন আয়ের এই কৃষক পরিবারগুলো। সড়ক নির্মাণে আনন্দিত হলেও জমির মাটি কেটে নেয়ায় বিষাদ নেমে এসেছে এই পরিবারগুলোর মাঝে।
মাহারাম গ্রামের বাসিন্দা মো. নাছির উদ্দিন বলেন, আমি গরিব মানুষ। এই জমির উপর আমার পরিবারের আশা-ভরসা। সড়ক নির্মাণ হোক আমরা চাই। কিন্তু আমার মতো গরিব মানুষের পেটে লাথি মেরে সড়ক হলে আমার পরিবারের উপায় কি হবে। সড়ক নির্মাণ করতে আমার ৫-৭ কেয়ার জমির মাটি কেটে নিয়ে গেছে। এই জমিগুলো ডোবায় পরিণত হয়েছে। এই জমি কোনো কাজে আসবে না। আমি ক্ষতিপূরণ চেয়ে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহীসহ বিভিন্ন দপ্তরের আবেদন করেছি কিন্তু কোথাও কোনো আশ্রয় পাইনি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য কফিল উদ্দিন বলেন, আমার সামন জোরপূর্বক কেটে নেয়া হয়েছে। আমি বাধা দিলেও প্রভাবশালী নোয়াজ আলী ও ঠিকাদারের লোকেরা মামলা হামলার ভয় দেখায়। নোয়াজ আলী মাটি কন্টাক্ট নিয়েছে। সে আমার মতো অনেক গরীব কৃষককে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক ধানি জমির মাটি কেটে নিয়েছে। আমিসহ অনেকেই অভিযোগ করেছি কিন্তু কোনা প্রতিকার পাইনি।

এদিকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হামিম ইন্টারন্যাশনাল এন্ড রাশেদুজ্জামার পিটার এর প্রতিনিধি মো. সজিব হোসেন বলেন, নোয়াজ আলী আমাদেরকে সড়কে মাটি দিতে সহযোগিতা করেছেন। তবে তিনি কোনো আর্থিক সুবিধা নিয়েছেন কিনা তা ঠিকাদার বলতে পারবেন।

এদিকে নিজের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগ নেতা নোয়াজ আলী বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। সড়কে মাটি দেয়ার ক্ষেত্রে আমি ঠিকাদারকে সহযোগিতা করেছি মাত্র।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন বলেন, এলজিইডি’র সড়ক নির্মাণ কাজে জমি অধিগ্রহণ বা ক্ষতিপূরণের কোনো বিধান নেই। প্রকল্পে মাটি ধরা রয়েছে। তবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কোথায় থেকে মাটি সরবরাহ করবে সেটি আমাদের দেখার বিষয় নয়।

কৃষকদের জমি কেটে নেয়ার বিষয়ে জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, কৃষকরা অভিযোগ করে থাকলে তা এখনো আমার কাছে আসেনি। অভিযোগটি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। তবে কৃষকের জমি কেটে নেয়ার সুযোগ নেই বলে জানান তিনি।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
দায়িদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নিতে জুডিসিয়াল তদন্ত কমিটি গঠন

দায়িদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নিতে জুডিসিয়াল তদন্ত কমিটি গঠন