সুনামগঞ্জ , বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ১৯ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
সুনামগঞ্জ হাসপাতালে ১২ ধরনের আড়াই কোটি টাকার ওষুধ মেয়াদোত্তীর্ণ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশে জুলাই গণহত্যা : রাজসাক্ষী সাবেক আইজিপি মামুন শিক্ষাক্ষেত্রে সুনামগঞ্জকে এগিয়ে নিতে সবার সহযোগিতা চাই : জেলা প্রশাসক অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণ না করার নির্দেশ দিলেন জেলা প্রশাসক স্ত্রীর সাথে অভিমান করে স্বামীর আত্মহত্যা প্রকৌশলী কামরুল হকের মৃত্যু নিয়ে রহস্য স্বজনদের দাবি ‘পরিকল্পিত হত্যা’ বিএনপি’র ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত নির্বাচনে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি থাকবে নৌ ও বিমান বাহিনী সুনামগঞ্জ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল উদ্বোধন অকেজো ১০ হাজার নলকূপ বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ জামালগঞ্জে যুবদলের কর্মী সমাবেশে কৃষক লীগ নেতা! ‎সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটিতে নতুন সভাপতি শামস শামীম, সম্পাদক জসিম মাছশূন্য হাওর, সংকটে জল-জীবিকা ব্রিটিশ-বাংলাবাজার সড়ক বেহাল : দুর্ভোগে হাজারো মানুষ ভিপি নুরের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ হাউসবোটে নেই পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা পর্যটকদের উদ্বেগ বাংলাবাজার ইউনিয়নে স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী সমাবেশ সুনামকণ্ঠ সাহিত্য পরিষদের আড্ডা অনুষ্ঠিত ঢাকায় জাতীয় পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদের সংঘর্ষ

টাঙ্গুয়ার হাওরে ৫০ কোটি টাকার প্রকল্প বদলাবে কিছু - নাকি ফিরবে সেই পুরোনো গল্পে?

  • আপলোড সময় : ২৮-০৫-২০২৫ ১২:৪৭:২১ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৮-০৫-২০২৫ ০৯:২৯:০২ পূর্বাহ্ন
টাঙ্গুয়ার হাওরে ৫০ কোটি টাকার প্রকল্প বদলাবে কিছু - নাকি ফিরবে সেই পুরোনো গল্পে?
মোসাইদ রাহাত ::
সুনামগঞ্জের বিস্তৃত জলাভূমি টাঙ্গুয়ার হাওরজীববৈচিত্র্যের এক অপূর্ব আধার এই হাওরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য যেমন দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে, তেমনি এর জীববৈচিত্র্য সম্পদের উপর নির্ভর করে প্রায় ৪০ হাজার স্থানীয় মানুষের জীবন-জীবিকা

এ বাস্তবতায় গত ১৩ মে ঢাকায় ‘কমিউনিটি-ভিত্তিক টাঙ্গুয়ার হাওর জলাভূমি ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক একটি নতুন প্রকল্পের উদ্বোধন হয়।
পাঁচ বছর মেয়াদি এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪.০৫ মিলিয়ন ডলার। যা টাকার অংকে দাঁড়ায় প্রায় ৫০ কোটি টাকা। প্রকল্পের অর্থায়ন করছে গ্লোবাল এনভায়রনমেন্ট ফ্যাসিলিটি (জিইএফ)। বাস্তবায়ন করবে পরিবেশ অধিদপ্তর, তত্ত্বাবধানে থাকছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি)। প্রকল্পের লক্ষ্য টাঙ্গুয়ার হাওরের জলাভূমি ও বাস্তুতন্ত্রের টেকসই ব্যবস্থাপনা, বন ও জলজ পরিবেশ পুনরুদ্ধার এবং স্থানীয় জনগণের জন্য পরিবেশবান্ধব জীবিকার সুযোগ সৃষ্টি করা। যার প্রধান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে ১,৫০০ হেক্টরের বেশি বন ও জলজ বাসস্থান পুনরুদ্ধার, জীববৈচিত্র্য অভয়ারণ্য স্থাপন, নারী-সহনশীল মাইক্রো-এন্টারপ্রাইজ সহায়তা, জলাভূমি-ভিত্তিক কৃষি ও মাছচাষ এবং দায়িত্বশীল পর্যটনের প্রসার। যদিও প্রকল্পে ‘কমিউনিটি-ভিত্তিক’ ব্যবস্থাপনার কথা জোর দিয়ে বলা হচ্ছে কিন্তু মাঠপর্যায়ে স্থানীয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার রূপরেখা এখনো অস্পষ্ট।
পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা বলেন, প্রতিটি প্রকল্পে স্থানীয়দের কথা বলা হয়, কিন্তু সিদ্ধান্ত গ্রহণে আমাদের জায়গা কোথায়? এই প্রকল্পে বলা হয়েছে টাঙ্গুয়ার হাওরে ৩ থেকে ৪ হাজার মানুষ সুবিধাভোগী হবে। কিন্তু এই টাঙ্গুয়ার হাওরে গ্রামই আছে ৪১টি। তাহলে এটি কিভাবে বাস্তবায়ন হবে। সেজন্য তারা যে রূপরেখা দিয়েছেন কমিউনিটি ভিত্তিক সেটি এখনো অস্পষ্ট। এখানে হতাশার কারণও আছে। গত দুই দশকে টাঙ্গুয়ার হাওরে বাস্তবায়িত হয়েছে একাধিক প্রকল্প। কিন্তু অধিকাংশই কেন্দ্রীয়ভাবে পরিকল্পিত। সেখানে স্থানীয় বাস্তবতা ও মানুষের জ্ঞান উপেক্ষা করে বাস্তবায়ন হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।

সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চল নিয়ে কাজ করা জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক শামস শামীম বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওর গত দেড় দশকের বেশি দেশি বিদেশি সংস্থা রক্ষণাবেক্ষণ করেছে। নির্দেশনা ছিল টাঙ্গুয়াকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়া কিন্তু এই সময়ে এসে বিরান হয়ে গেছে। যা আছে তারও প্রাণ, প্রকৃতি প্রতিবেশ হুমকিতে পড়েছে। জীববৈচিত্র্য আজ সংকটে। তিনি বলেন, সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো রামসার নীতিমালা বাস্তবায়নের কথা বলে সংরক্ষণ করা হলেও সংরক্ষিতকালে প্রথমে আঘাত করা হয়েছে স্থানীয়দের জীবিকার উপর। তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ না করে জীবিকার উপর আঘাত করা হয়েছে। এই সুযোগে প্রশাসন ও বেসরকারি সংগঠনের মাধ্যমে একটি মধ্যস্বত্বভোগী গড়ে ওঠে। যারা সংরক্ষণকারীদের ঘুষ দিয়ে হাওর বিরান করেছে। নতুন করে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হলে স্থানীয়দের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিতে হবে। হাওরের বিভিন্ন পকেটে নতুন করে জনবসতি গড়ে ওঠছে তা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণেও কাজ করতে হবে। কারণ অধিক জনসংখ্যার কারণে হাওরে নানা প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছে - বলেন তিনি।

ধরিত্রি রক্ষায় আমরা (ধরা) সিলেটের সদস্য সচিব আব্দুল করিম কিম বলেন, প্রকল্পে যে লক্ষ্যগুলো নির্ধারণ করা হয়েছে সেগুলো যথাযথ কিন্তু বাস্তবায়ন হবে কতটুকু? এই টাঙ্গুয়ার হাওরকে নিয়ে অনেক প্রকল্প এসেছে কাজ করেছে কিন্তু ফলাফল তেমন কিছুই আসেনি। সেজন্য আমি চাইব এই প্রকল্প বাস্তবায়নের সঠিক মনিটরিং এবং এই কাজের দায়িত্বে থাকা সরকারি কর্মকর্তারা ও স্থানীয়রা যেন মন থেকে আগ্রহী হতে হবে এবং কাজে সচ্ছতা থাকতে হবে, তা না হলে প্রকল্প আসবে টাকাও আসবে কাজের কাজ কিছুই হবে না।

সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, এই প্রকল্প সম্পর্কে আমি তেমন বিস্তারিত কিছু জানি না। তবে আমার কাছে মনে হয়েছে এটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে এবং তাদের এটি নিয়ে আরো কাজ করতে হবে। শুনেছি তারা সুনামগঞ্জ এবং তাহিরপুরে এই প্রকল্প নিয়ে কর্মশালা করবেন তখন হয়তো বুঝতে পারবো।

প্রকল্পের বিষয়ে সিলেট বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তর অফিসের পরিচালক মো. ফেরদৌস আনোয়ার বলেন, টাঙ্গুয়ার হাওর নিয়ে করা প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে ঢাকা থেকে এবং এটির মাঠ পর্যায়ের অফিস থাকবে সুনামগঞ্জ জেলায় এবং সেখান থেকেই প্রকল্পের কাজ করা করা হবে বলে আমি জানতে পেরেছি।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ
সুনামগঞ্জ হাসপাতালে ১২ ধরনের আড়াই কোটি টাকার ওষুধ মেয়াদোত্তীর্ণ

সুনামগঞ্জ হাসপাতালে ১২ ধরনের আড়াই কোটি টাকার ওষুধ মেয়াদোত্তীর্ণ