সুনামগঞ্জ , শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫ , ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
মুখ থুবড়ে পড়েছে ছাতক স্লিপার কারখানা নারীরা এগিয়ে গেলে দেশ এগিয়ে যাবে : জেলা প্রশাসক নির্বাচন বানচালের চেষ্টা প্রতিহত করা হবে : আনিসুল হক জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে প্রতীকী ম্যারাথন পার্লামেন্ট হিল অটোয়া: সুখেন্দু সেন টাঙ্গুয়ার হাওরে ভাসমান বাজার উদ্বোধন গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনী আত্মরক্ষার্থে বলপ্রয়োগে বাধ্য হয় : আইএসপিআর মসজিদে ঢুকে নামাজরত ভাইকে হত্যা চৌধুরী মনসুর আহমদ স্মরণে শোকসভা, তিনি মানবিক গুণাবলিতে পরিপূর্ণ মানুষ ছিলেন ষড়যন্ত্র রুখতে মাঠে থাকবে যুবদল টাঙ্গুয়ার হাওর নিয়ে ফেসবুকে বিরূপ ভিডিও পোস্ট, প্রতিবাদে থানায় জিডি দোয়ারাবাজারে গ্রামীণ রাস্তা পাকাকরণের দাবি জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল তাহিরপুরে অগ্নিকান্ডে তিনটি দোকান পুড়ে ছাই এনসিপি’র সমাবেশে হামলার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ নাব্যতা হারাচ্ছে খাসিয়ামারা নদী দ্রুত খননের দাবি সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যানে গোপালগঞ্জ ছাড়েন সারজিস-হাসনাতরা জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনে দেশসেরা সুনামগঞ্জ গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে হামলা “রাজাকারদের উৎখাতে স্বেচ্ছাসেবক দলই যথেষ্ট”
পরিবেশবান্ধব শ্রেষ্ঠ গ্রাম নির্বাচন

জেলা প্রশাসনের অনন্য উদ্যোগ : সবুজের সন্ধানে নতুন যাত্রা

  • আপলোড সময় : ৩০-০৫-২০২৫ ১২:১৫:২০ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ৩০-০৫-২০২৫ ১২:২৪:৩২ পূর্বাহ্ন
জেলা প্রশাসনের অনন্য উদ্যোগ : সবুজের সন্ধানে নতুন যাত্রা
মোসাইদ রাহাত ::
সুনামগঞ্জের বিস্তীর্ণ হাওর-বাঁওড়, সবুজ পাহাড় আর নদীর মোহনায় এবার এক নতুন উদ্যোগ। 
পরিবেশবান্ধব ও টেকসই উন্নয়নকে সামনে রেখে জেলা প্রশাসন চালু করেছে ‘পরিবেশবান্ধব শ্রেষ্ঠ গ্রাম’ নির্বাচন কর্মসূচি।
এই পরিকল্পনার মাধ্যমে কেবল গ্রাম নির্বাচনই নয়, বরং পরিবেশ সচেতনতা ও স্থানীয় সম্পদ রক্ষার এক বিস্তৃত জনসম্পৃক্ত উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, জেলা প্রশাসন সুনামগঞ্জ-এর উদ্যোগে এ জেলার গ্রামগুলোকে পরিবেশবান্ধব হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ‘শ্রেষ্ঠ পরিবেশ বান্ধব গ্রাম’ নির্বাচনের জন্য সম্প্রতি একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। এ লক্ষ্যে ‘পরিবেশবান্ধব শ্রেষ্ঠ গ্রাম; নির্বাচন সংক্রান্ত একটি নির্দেশিকা প্রণয়ন করা হয়েছে। মে ২০২৫ মাসে অনুষ্ঠিত ‘জেলা উন্নয়ন সমন্বয় সভা’য় উক্ত বিষয়ে উপস্থিত সদস্যগণের সম্মতিক্রমে নির্দেশিকা এবং জেলা কমিটি চূড়ান্ত করা হয়।
বর্ণিত নির্দেশিকার আলোকে প্রতি ইউনিয়ন থেকে কমিটির মূল্যায়নের ভিত্তিতে একটি করে শ্রেষ্ঠ গ্রাম নির্বাচন করা, ইউনিয়নের শ্রেষ্ঠ গ্রামগুলো থেকে প্রতি উপজেলা থেকে মূল্যায়নের ভিত্তিতে একটি শ্রেষ্ঠ গ্রাম নির্বাচন করা হবে। ১২ টি উপজেলা থেকে ১২টি গ্রাম নির্বাচিত হবে। সবশেষে নির্ধারিত মানদন্ডের ভিত্তিতে মূল্যায়নের মাধ্যমে নির্বাচন করা হবে জেলার শ্রেষ্ঠ পরিবেশ বান্ধব গ্রাম।
সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানায়, উপজেলা পর্যায়ে এরই মধ্যে শ্রেষ্ঠগ্রাম নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী, জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত প্রতিটি উপজেলার ইউএনও’র মাধ্যমে শুরু হয় নির্দেশনা প্রদান ও গ্রাম মনোনয়নের কাজ। প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একটি গ্রাম মনোনীত করেন এবং সেখানে গঠন করা হয় ৫ থেকে ৭ জন স্বেচ্ছাসেবকের দল। এরপর ইউনিয়ন পর্যায়ে চলতে থাকবে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন ব্যানার, পোস্টার, ওয়ার্কশপ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার চালানো হয়। গ্রামবাসীর সক্রিয় অংশগ্রহণেই তৈরি হয় পরিবেশবান্ধব কার্যক্রমের ভিত্তি। কর্মসূচির মধ্যে এপ্রিল থেকে জুনের মধ্যে উপজেলা পর্যায়ের পরিদর্শন ও মূল্যায়ন হবে, স্বচ্ছতার স্বার্থে স্কোরকার্ডের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করবেন উপজেলা কমিটি।
স্থানীয় প্রশাসন, সচেতন নাগরিক ও স্বেচ্ছাসেবকদের সহায়তায় সরেজমিনে যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলবে। জুলাইয়ের শেষ ভাগে জেলা পর্যায়ের বাছাই কমিটির সংশ্লিষ্টরা নির্বাচিত গ্রামগুলো পরিদর্শন করবেন। তারা প্রতিবেদন, ভিডিও, আলোকচিত্রসহ সংক্ষিপ্ত উপস্থাপনা জমা দিবেন জেলা প্রশাসনে। সব কিছু বিবেচনায় নিয়ে আগামী আগস্টে ঘোষণা করা হবে শ্রেষ্ঠ পরিবেশবান্ধব গ্রামের নাম।
এখানে সুনামগঞ্জের ১২টি উপজেলা থেকে ১২টি গ্রামকে বিজয়ী ঘোষণা করা হবে। বিজয়ী গ্রামগুলো পাবে সম্মাননা, ক্রেস্ট ও পরিবেশ উন্নয়নমূলক একটি প্রকল্প। এই কর্মসূচিতে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে জেলার অন্যতম প্রাকৃতিক সম্পদ টাঙ্গুয়ার হাওরকে।
একে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে জেলার পরিবেশভাবনা। জলাভূমি সংরক্ষণ, জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও হাওর নির্ভর জনজীবনের টেকসই উন্নয়নের দিকেই প্রশাসনের জোর।

পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসমির রেজা বলেন, প্রশাসনের এমন সৃজনশীল উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। আশাকরি এমন প্রচেষ্টা গ্রামের তরুণদের ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গকে পরিবেশ সচেতন হতে উদ্বুদ্ধ করবে। একই সাথে এটি কমিউনিটি ভিত্তিক পর্যটনের বিকাশে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। তবে গ্রাম নির্বাচন প্রক্রিয়া যেন স্বচ্ছ ও কোনো ধরনের চাপমুক্ত হয়। একই সাথে পরিবেশবান্ধব গ্রাম গড়ে তুলতে প্রশাসনকেও সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানাই।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক . মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, এই প্রকল্প কেবল প্রতিযোগিতা নয়, এটা একটি সচেতনতা গড়ার আন্দোলন। আমরা চাই, প্রতিটি গ্রাম হোক পরিচ্ছন্ন, বাসযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব। যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম পায় একটি সবুজ বাংলাদেশ।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স