স্টাফ রিপোর্টার::
তাহিরপুরের থানার সামনের স্পীডবোট ঘাটের টোল আদায় নিয়ে ইজারাদার ও বোট মালিকদের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। এখানে আগে টোল নেওয়া হতো ৫০ টাকা, এখন ২০০ টাকা দাবি করা হচ্ছে। টোল আদায়কারীরা বলছেন, এবার যেহেতু ইজারাদারের শরিক বেশি এবং ইজারা মূল্যও বেড়েছে, সুতরাং টোলের পরিমাণও বাড়াতে হবে। এবার বোট প্রতি টোল ২০০ টাকা দেওয়া লাগবে। এ নিয়ে বাকবিতণ্ডার জেরে মঙ্গলবার সারাদিন স্পীডবোট চলাচল বন্ধ ছিলো। পরে সন্ধ্যায় তাহিরপুরের ইউএনও আপোস করার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত সমাধান হয়নি।
মঙ্গলবার তাহিরপুর থানার সামনে স্পীডবোট ঘাটে আসেন বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী। এরমধ্যে ছিলেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক বাদল মিয়ার ভাই শাহ আলম, শিপুল, আবু জহুর, শাহজাহান ও মিলনসহ কয়েকজন। তারা ঘাটে এসে প্রতি ট্রিপে বোট চালকদের ২০০ টাকা দেবার কথা জানান।
এ নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে বোট মালিকরা ২০০ টাকা দিতে অপারগতা জানান। এসময় স্পীডবোট থেকে যাত্রী নামিয়ে দেন নেতাকর্মীরা। পরে সারাদিন বোট চলাচলা বন্ধ রাখেন স্পীডবোট মালিক শ্রমিকরা। বোট মালিকদের দেয়া তথ্যমতে, তাহিরপুরে স্পীডবোট আছে ৫২ টি। এরমধ্যে ছয়টি টাঙ্গুয়ার হাওরসহ অন্যান্য এলাকায় পর্যটকদের নিয়ে যাতায়াত করে। অন্য বোটগুলো তাহিরপুর থেকে মধ্যনগরে যাত্রী নিয়ে চলাচল করে। এজন্য প্রতিযাত্রীর কাছ থেকে তারা ৪০০ টাকা করে ভাড়া আদায় করেন। তিনদিনে সিরিয়ালে থেকে একটি বোট ট্রিপ পায়।
একজন স্পীডবোট চালক জানান, মঙ্গলবার সকালে বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী এসে জানালেন প্রতি টিপে ২শ’ টাকা করে দিতে হবে। আমরা ৫০ টাকা করে দিয়ে আসছি। চার গুণ বেশি টাকা দিতে অপারগতা জানালে মিলন নামের একজন যাত্রীদের বোট থেকে নামিয়ে দেয়। পরে সারাদিন বোট চলাচল বন্ধ রাখা হয়।
তাহিরপুর স্পীডবোট মালিক সমিতির সভাপতি শাহআলম বলেন, এতোদিন আমরা প্রতি ট্রিপে ৫০ টাকা করে দিয়েছি। এবার ইজারাদারের লোকেরা এসে ২০০ টাকা দাবি করেছেন। ২০০ টাকা দিলে আমাদের পুষাবে না। এতো টাকা খরচ করে বোট নিয়েছি আয়ের আশায়। আয় না হলে, নিজের খরচের টাকা তুলতে না পারলে বোট চালাবো না। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, ইজারাদার ও আমাদের নিয়ে বসেন। ওই বৈঠকে সবোর্চ্চ ৭০ টাকা আদায় করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সিন্ধান্তও মানে নি ইজারাদারের লোকজন।
বুধবার সকালেও ঘাটে এসে ঝামেলা করেছে তারা। ইজারাদারের পক্ষের আলী রাজা নামের একজনের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, এবছর ভ্যাটসহ ২৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে এই ঘাট ইজারা আনতে। এর আগের বছর রাজস্বসহ খরচ হয়েছে ১৬ লক্ষ টাকা। এবছর ঘাটে ৫০ থেকে ৬০ জনের শেয়ার বেড়েছে। সবাই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।
তাহিরপুর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক বাদল মিয়ার ভাই ইজারাদার শাহ আলম বলেন, বোট চলাচল বন্ধ ছিলো না। আমরা দিনে স্পীডবোট প্রতি ২০০ টাকা দাবি করেছিলাম। তারা দেয়নি। পরে সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অফিসে বসে বিষয়টির সমাধান হয়েছে। ইউএনও’ বলেছেন ৭০ টাকা করে দিতে। পরে আমরা বলেছি, গতবছর যত ছিলো তত করেই নেবো। এনিয়ে পরে আর কোনো ঝামেলা তৈরি হয়নি।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুল হাসেম বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দুই পক্ষই আমার কাছে এসেছিলেন। ইজারাদার পক্ষ ২০০ টাকা করে দাবি করছেন। আমি বলেছি এতো টাকা নেওয়া যাবে না। শেষে ৭০ টাকা নিতে বলা হয়েছে।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক বাদল মিয়া বলেন, ঘাট কারা ইজারা নিয়েছেন, সে বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। তবে ২০০ টাকা টোল আদায় অতিরিক্ত হয়ে যায়। এজন্য উপজেলা নির্বাহী কর্তকর্তা সিন্ধান্ত দিয়েছেন, ইউএনও সাহেবের সিদ্ধান্ত দু’পক্ষের জন্যই ভালো হয়েছে বলে মন্তব্য তাঁর।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
তাহিরপুরে স্পীডবোট ঘাটে ৫০ টাকার টোল ২শ টাকা দাবী
- আপলোড সময় : ১১-০৬-২০২৫ ০৮:৪৩:১৩ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ১১-০৬-২০২৫ ০৮:৪৯:০০ অপরাহ্ন

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ