সুনামগঞ্জ , বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫ , ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
পাঠদান ব্যাহত, নিজ ক্যাম্পাসে ইন্টার্নশিপ করতে চান শিক্ষার্থীরা আবারও ছাতক সীমান্তে ২০ জনকে পুশইন পৌর শহরে ক্লিনিং ক্যাম্পেইন, মশার উৎপত্তিস্থল ধ্বংসের আহ্বান গাঁজার চালানসহ মাদক কারবারি হেলাল আটক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার, বন্দুক, পাইপগান, গুলিসহ গ্রেফতার ৪ শান্তিগঞ্জে সিএনজি ও প্রাইভেট কার সংঘর্ষে আহত ৫ টাঙ্গুয়ার হাওরে ওয়াচ টাওয়ার এলাকায় হাউসবোট প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা পথে যেতে যেতে: পথচারী শান্তিগঞ্জে ‘তরুণ সমাজের ভাবনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা খাসিয়ামারা নদীতে ড্রেজারের তান্ডব বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন বিটিসিএলের দ্রুত গতির ইন্টারনেট গ্রাহক টানতে উদ্যোগ নেই চার কিলোমিটার সড়কে হাজারো মানুষের দুর্ভোগ সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সদা প্রস্তুত থাকার নির্দেশ সেনাপ্রধানের তাহিরপুর সীমান্তে ২৬ লাখ টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ সাবেক সিইসি নূরুল হুদা আটক ’৭২-এর সংবিধানের চার মূলনীতি বাতিল চায় এনসিপি বিএনপি’র ৩১ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নে এড. নুরুলের গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কৃষিতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারে ক্ষতিগ্রস্ত হাওরের মাছ : মৎস্য উপদেষ্টা টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণে পর্যটকদের মানতে হবে ১৩ নির্দেশনা শহরের লঞ্চঘাটে সিঁড়ি নির্মাণকাজে অনিয়ম
শিক্ষক সংকটে সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজ

পাঠদান ব্যাহত, নিজ ক্যাম্পাসে ইন্টার্নশিপ করতে চান শিক্ষার্থীরা

  • আপলোড সময় : ২৫-০৬-২০২৫ ০১:২৪:০৪ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৫-০৬-২০২৫ ০১:২৭:০৬ অপরাহ্ন
পাঠদান ব্যাহত, নিজ ক্যাম্পাসে ইন্টার্নশিপ করতে চান শিক্ষার্থীরা
শামস শামীম ::
সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজে হাসপাতাল চালুর দাবি অধরাই রয়ে গেছে। কবে হাসপাতাল চালু হবে নির্দিষ্ট করে বলতে পারছেন না সংশ্লিষ্টরা। আপাতত হাতে কলমে শিক্ষার জন্য ক্লিনিক্যাল ক্লাস বা ওয়ার্ড ক্লাসের সংকট সাময়িক দূর হলেও একাডেমিক ক্লাসে শিক্ষক সংকটের কারণে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান কার্যক্রম। শিক্ষক সংকট দূর করে স্বাভাবিক পাঠদানের গতি অব্যাহত রাখতে গত ১৮ জুন বুধবার কলেজ কর্তৃপক্ষ মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করেছে। তারা অবিলম্বে শিক্ষক সংকট দূর করে পাঠদানের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি হাসপাতালের কার্যক্রম চালু করে শিক্ষার্থীরা আগামী বছর থেকে নিজ মেডিকেল কলেজেই ইন্টার্নশিপ করার জোর দাবি জানিয়েছেন।

সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে ৫০জন শিক্ষার্থী নিয়ে শান্তিগঞ্জ উপজেলা হাসপাতালের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে পাঠদান শুরু হয়। ২০২৩ সালের নভেম্বরে স্থায়ী ক্যাম্পাসে ফিরে প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে ৫টি ব্যাচে ২৮৫ জন শিক্ষার্থী পাঠগ্রহণ করছেন। সংশ্লিষ্টরা থিউরিক্যাল পাঠদান শুরু করলেও ওয়ার্ড ক্লাস বা ক্লিনিক্যাল ক্লাস চালু না থাকায় পিছিয়ে পড়ছিল শিক্ষার্থীরা।
নিয়মানুযায়ী দ্বিতীয় বর্ষ থেকে হাতে কলমে ক্লিনিক্যাল ক্লাস করার কথা থাকলেও পঞ্চম ব্যাচে এসে তারা আন্দোলন করে জেলা সদর হাসপাতালে গত এপ্রিল মাসে ক্লিনিক্যাল ক্লাসের দাবি আদায় করতে পেরেছেন। তবে একটি ‘সেবা হাসপাতাল’ থেকে ‘টিচিং হাসপাতালের’ ক্লিনিক্যাল ক্লাস করার পর্যাপ্ত সুযোগ পাচ্ছেন না বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
তাছাড়া মেডিসিন ও সার্জারিতেও হাতে কলমে অনেক পিছিয়ে আছেন এই মেডিকেল কলেজটির শিক্ষার্থীরা। মেডিকেল কলেজটিতে এখনো হাসপাতাল চালুর দাবিটি অধরাই রয়ে গেছে তাদের। নিজের হাসপাতালে রোগীর সংস্পর্শে হাতে-কলমে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। দ্রুত মেডিকেল কলেজে হাসপাতাল চালু এবং নিজ মেডিকেলে ইন্টার্নশিপ কার্যক্রম চালুর দাবি জানিয়েছেন কলেজটির সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজ সূত্রে জানা গেছে, কলেজে বর্তমানে ৫টি ব্যাচে ২৮৫জন শিক্ষার্থী পাঠ নিচ্ছেন। এর মধ্যে শুরু থেকেই শিশু ও চর্মরোগ বিভাগে কোন শিক্ষক না থাকায় এই দুই বিভাগের পাঠ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। সার্জারি, মেডিকেল ও ওয়ার্ড ক্লাস থেকেও বঞ্চিত আছেন তারা।
জানা গেছে, কলেজে ১১জন প্রফেসরের মঞ্জুরিকৃত পদ থাকলেও ৯জনের পদই খালি আছে। এসোসিয়েট প্রফেসর ২৩ জনের মধ্যে ১৬ জনের পদ খালি, এসিসটেন্ট প্রফেসর ২৩ জনের মধ্যে ১৭ জনের পদ খালি, গুরুত্বপূর্ণ প্রাকটিক্যাল ক্লাসের জন্য দুটি কিউরেটর পদ থাকলেও ১টি এবং ২৮ জন লেকচারের মধ্যে ২০ জনের পদই শূন্য আছে। মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ৬ জনের পদ থাকলেও হাসপাতাল চালু না হওয়ায় এই পদে এখন কেউ নেই। একাউন্টেন্ট, লাইব্রেরিয়ান, স্টোর কিপার, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর এবং অফিস সহায়ক পদেও কেউ কর্মরত নেই। বিশেষ করে শিক্ষক সংকটের কারণে নতুন এই মেডিকেল কলেজটির শিক্ষার্থীরা পাঠ গ্রহণে পিছিয়ে আছেন বলে জানান তারা।
সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী সাইদুল ইসলাস সাকিব বলেন, দ্বিতীয় বছর থেকে আমরা হাতে-কলমে ক্লিনিক্যাল ক্লাস, সার্জারি ও মেডিসিন বিভাগের ক্লাস করার কথা থাকলেও চতুর্থ বছরে এসে আন্দোলন করে নির্যাতিত হয়ে সাময়িকভাবে শুধু ক্লিনিক্যাল ক্লাসের দাবি আদায় করতে পেরেছি। আমাদের প্রধান দাবি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চালুর। এটা কবে চালু হবে আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারছিনা। তিনি বলেন, মেডিকেল হাসপাতাল চালু না হলে আমরা ইন্টার্নিও করতে পারবো না। এতে আমরা জনগণের বোঝা হয়ে দেখা দেব। তিনি আরও বলেন, আমাদের পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই। সার্জারি ও মেডিসিন বিষয়ে হাতে-কলমের শিক্ষায় পিছিয়ে আছি। বর্তমানে জেলা সদর হাসপাতালে সাময়িক ক্লিনিক্যাল ক্লাস করার সুযোগ পেলেও একটা টিচিং কলেজ হাসপাতালের সুযোগ-সুবিধা আমরা পাচ্ছিনা। তাই আমরা হাতে কলমে পিছিয়ে আছি। এই সংকট দূর করা দরকার। মেডিকেল কলেজের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী সৌরভ আহমেদ বলেন, সদর হাসপাতালে কোনোমতে আমরা ক্লিনিক্যাল ক্লাস করছি। হাতে-কলমে কিছুটা শিক্ষার সুযোগ পেলেও পর্যাপ্ত না। আমাদের হাসপাতাল চালু না হলে এই সংকট কাটবে না। তাই আমরা আগামী ডিসেম্বরে হাসপাতাল চালুর যে দাবি জানিয়েছিলাম, তা পূরণ না হলে আমরা পিছিয়ে যাব। দেশ ও দশের বোঝা হয়ে যাবো আমরা। আমরা যে কোনভাবেই নিজস্ব হাসপাতাল থেকে ইন্টার্নি করে জনগণের সেবার জন্য বের হতে চাই।

সুনামগঞ্জ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোস্তাক আহমেদ ভূইয়া বলেন, আপাতত ক্লিনিক্যাল ক্লাস সদর হাসপাতালে চালু হয়েছে। হাসপাতাল চালু না হলে এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে না। তিনি বলেন, এখন আমাদের বড়ো সমস্যা পাঠদানের। চর্ম ও শিশু বিভাগের কোন শিক্ষক না থাকায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়াও অন্যান্য বিভাগেও পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই। বর্তমানে অর্ধেকের বেশি পদ শূন্য রয়েছে।
তিনি বলেন, এ বিষয়ে গত ১৮ জুন আমি মন্ত্রণালয়ে কথা বলেছি। তাছাড়া হাসপাতাল চালুর বিষয়ে ছাত্র-শিক্ষক ও গণপূর্ত বিভাগসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের যে কমিটি রয়েছে তারা আগামী জুলাই মাসে সভায় বসবে। হাসপাতালটি চালু হলে পাঠদানের সংকট দূর হবে এবং জনগণও উপকৃত হবেন।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
পাঠদান ব্যাহত, নিজ ক্যাম্পাসে ইন্টার্নশিপ করতে চান শিক্ষার্থীরা

পাঠদান ব্যাহত, নিজ ক্যাম্পাসে ইন্টার্নশিপ করতে চান শিক্ষার্থীরা