সুনামগঞ্জ , বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫ , ৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
লক্ষাধিক মানুষের সড়ক যেন ডোবা-নালা তাহিরপুরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ২০ র‌্যাবের অভিযানে ভারতীয় ২৭২ বোতল মদ জব্দ যারা নির্বাচনের বিরোধিতা করছে তারা দেশের শত্রু : কয়ছর এম আহমদ প্রশাসনের পূর্ণাঙ্গ তালিকা থেকে গায়েব জেলার বহু খাল নির্বাচনের জন্য বিএনপি পুরোপুরি প্রস্তুত : কয়ছর এম আহমদ বিশ্বম্ভরপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত শান্তিগঞ্জে ফুটবল খেলা নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ৪০ দেশ যেন মৌলবাদের অভয়ারণ্য না হয় : তারেক রহমান সত্যশব্দের বর্ষার আয়োজন ‘বাদল গেছে টুটি’ দিরাই থানা ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন ইউকের ফ্যামিলি গ্যাদারিং অনুষ্ঠিত জনগণের ভোগান্তি কমিয়ে দ্রুত সেবা নিশ্চিত করতে হবে নির্বাচন সুষ্ঠু হলে বিএনপি সরকার গঠন করবে : কয়ছর এম আহমেদ জামালগঞ্জে উড়ালসড়ক প্রকল্প পরিদর্শনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা তাহিরপুরে তোপের মুখে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শান্তিগঞ্জে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে শোভাযাত্রা জাতি-ধর্মে ভেদাভেদ থাকবে না, এই দেশ সবার : সেনাপ্রধান বর্ণাঢ্য আয়োজনে জন্মাষ্টমী উদযাপিত ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ৬ লেনের কাজ দ্রুত সম্পন্নের দাবি সুনামকণ্ঠ সাহিত্য পরিষদের ‘সাহিত্য আড্ডা’ অনুষ্ঠিত

নদী আর বালু নয়, রক্ষা চাই রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও জনজীবন

  • আপলোড সময় : ২৮-০৬-২০২৫ ০৯:১৬:৩৬ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৮-০৬-২০২৫ ০৯:১৬:৩৬ পূর্বাহ্ন
নদী আর বালু নয়, রক্ষা চাই রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও জনজীবন
তাহিরপুর উপজেলার শান্তিপুর ও মাহারাম নদী যেন বালুখেকোদের স্বর্গরাজ্য। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অগ্রাহ্য করে দিনের পর দিন নদী থেকে বালু উত্তোলন ও পাচার চলছে নির্লজ্জভাবে। গত ১১ মাসে শুধুমাত্র শান্তিপুর ও মাহারাম নদী থেকেই অর্ধ শত কোটি টাকার বালু লুট করা হয়েছে - যা এক গভীর রাষ্ট্রীয় লুণ্ঠনের স্পষ্ট চিত্র। এই নদীগুলো যাদুকাটা নদীর শাখা। ঐতিহ্যবাহী এই নদীগুলোর বুক চিরে অবৈধভাবে বালু তোলা হচ্ছে রাতদিন। প্রশাসনের কিছু বিচ্ছিন্ন অভিযান ছাড়া কার্যকর কোনো দীর্ঘমেয়াদি উদ্যোগ নেই। সম্প্রতি শান্তিপুর নদীতে অভিযান চালিয়ে কয়েকজন শ্রমিক ও নৌকা আটক করা হয়েছে - যারা কেবল সিস্টেমের নিচের স্তরের কর্মী। অথচ স্থানীয় জনগণের অভিযোগে উঠে এসেছে একাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তির নাম, যাদের ছত্রচ্ছায়ায় এই বালু সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। আশিকুল ইসলাম, মাসুক সরদার, আলীনুর সরদার, আবু তাহের মেম্বার প্রমুখ ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত থাকলেও এখন পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। শান্তিপুর, মাহারাম নদীর মতো জেলার বিভিন্ন নদী থেকেও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে দেদারসে। এতে নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হচ্ছে, পাড় ভেঙে যাচ্ছে, বিলীন হচ্ছে আবাদি জমি ও বসতভিটা। নদীর নাব্যতা হারিয়ে নৌ-চলাচল ব্যাহত হচ্ছে, জলজ জীববৈচিত্র্যও হুমকির মুখে পড়ছে। প্রশ্ন হলো- কারা এই ভয়াবহ লুটপাটের পেছনে? কেন বালুখেকোদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিরুৎসাহিত? কেন শুধু সাধারণ শ্রমিকদের ধরেই দায়িত্ব শেষ মনে করা হয়? আমরা মনে করি, এটি নিছক আইনশৃঙ্খলার বিষয় নয়; প্রকৃতপ্রস্তাবে এটি একটি গভীর প্রাতিষ্ঠানিক ব্যর্থতা ও রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাবের চিত্র। রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক স¤পদ - নদী ও তার বালু যদি কিছু অসাধু ব্যক্তির হাতে জিম্মি হয়ে পড়ে, তবে তা শুধু পরিবেশ বিপর্যয় নয়, বরং জাতীয় নিরাপত্তা ও উন্নয়নকেও হুমকির মুখে ঠেলে দেয়। এই পরিস্থিতিতে আমাদের সুস্পষ্ট দাবি- ১. জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে সমন্বিতভাবে একটি বিশেষ ‘নদী ও বালু সংরক্ষণ টাস্কফোর্স’ গঠন করতে হবে, যাতে প্রশাসন, পরিবেশ অধিদফতর ও পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালাতে পারে। মূল হোতাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে তারা রাজনৈতিক পরিচয় বা ক্ষমতার দোহাই দিয়ে পার না পায়। নদীভিত্তিক পরিকল্পিত উন্নয়ন ও সুরক্ষার জন্য দীর্ঘমেয়াদি ‘নদী ব্যবস্থাপনা নীতিমালা’ প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন জরুরি। অবৈধ বালু উত্তোলনের সাথে জড়িত জনপ্রতিনিধি বা রাজনৈতিক ব্যক্তি প্রমাণিত হলে তাদের আইনের আওতায় এনে পদচ্যুত করতে হবে। এছাড়া বালু শ্রমিকদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিতে হবে, যাতে তারা সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ পেশায় ফিরে যেতে পারে। নদী রাষ্ট্রের শিরা-উপশিরা। বালু তার সঞ্চিত শক্তি। এই শক্তি যারা লুটে নিচ্ছে, তারা দেশের ভবিষ্যৎকে দুর্বল করছে। রাষ্ট্র যদি এখনই জেগে না ওঠে, কাল হয়তো নদী থাকবে না - থাকবে শুধু বালু চুরির গর্ত আর ক্ষতবিক্ষত জনপদ।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স
লক্ষাধিক মানুষের সড়ক যেন ডোবা-নালা

লক্ষাধিক মানুষের সড়ক যেন ডোবা-নালা