সুনামগঞ্জ , মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫ , ২৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
দখলদারদের কবলে পৌরসভার জায়গা নির্বাচন দেরি হলে জুডিসিয়াল-আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়বে ট্যাকেরঘাট-বারেকটিলা সড়ক কালভার্ট যেন মরণ ফাঁদ! সাংবাদিকদের হুমকি স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতিবন্ধক জুন মাসে সিলেট সড়কে ঝরলো ২৮ প্রাণ সিলেটে আজ থেকে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট খালিদ মিয়া হত্যার বিচার দাবিতে মানববন্ধন বিএনপি নেতার অশোভন আচরণের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ কৃষি প্রযুক্তি ও পুষ্টি মেলা উদ্বোধন এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ ১০ জুলাই সিলেটে মাজার জিয়ারত করলেন মির্জা ফখরুল হবিগঞ্জের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বহিষ্কৃত যুগ্ম আহ্বায়ক গ্রেপ্তার আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদকের মাতা'র মৃত্যুতে জামালগঞ্জ প্রেসক্লাবের শোক জলবায়ু সহনশীল প্রকল্পে লক্ষ্য পূরণ হয়নি, বিদেশ সফরেই প্রকল্প সারা সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতাল : আউটসোর্সিংয়ে কর্মী নিয়োগে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ হাজারো নেতাকর্মী নিয়ে অ্যাড. নূরুল ইসলামের গণসংযোগ আজ পবিত্র আশুরা সিলেটে ৫ দফা দাবিতে পণ্য পরিবহন ধর্মঘট বিগত সময়ে মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাকে অবহেলা করা হয়েছে : ড. খ. ম. কবিরুল ইসলাম খাসিয়ামারা নদী ভাঙনে বিলীন হচ্ছে জনপদ, আতঙ্কে শত শত পরিবার

বিদেশ সফরেই শেষ ‘জলবায়ু সহনশীলতা’, হাওরবাসী পেল না কিছুই

  • আপলোড সময় : ০৮-০৭-২০২৫ ১২:১৭:০৫ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৮-০৭-২০২৫ ১২:১৭:০৫ পূর্বাহ্ন
বিদেশ সফরেই শেষ ‘জলবায়ু সহনশীলতা’, হাওরবাসী পেল না কিছুই
জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন (এফএও) এর তহবিলে বাস্তবায়িত “কমিউনিটি বেইজড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট ফিশারিজ অ্যান্ড একোয়াকালচার ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ” প্রকল্পের চার বছর শেষের পথে। আরেক দফা ছয় মাসের সময় বাড়িয়ে কার্যক্রম গুটিয়ে আনার প্রস্তুতি চলছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, প্রায় ৫.৪ মিলিয়ন ডলারের এই প্রকল্প হাওরের জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা মানুষকে আদৌ কী কিছু দিতে পেরেছে? এ বিষয়ে দৈনিক সুনামকণ্ঠে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রকল্পটি কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থেকেছে। বাস্তবে এর চিহ্নমাত্র নেই। যেসব অভয়াশ্রম, খাঁচায় মাছচাষ, মুক্তাচাষ, ধানক্ষেতে মৎস্যচাষ, পুকুরে দেশি মাছচাষের কথা বলা হচ্ছে - তার অধিকাংশই আগে থেকেই স্থানীয় বা অন্য প্রকল্পের উদ্যোগে চলমান ছিল। বর্তমান প্রকল্প কর্তারা সেগুলোই নিজেদের সাফল্য হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। নতুন করে বাস্তবায়ন কিংবা সম্প্রসারণ কোথাও চোখে পড়েনি। অথচ এই প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল হাওরের জলবায়ু-ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীকে সহনশীল জীবিকা বিষয়ে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের সক্ষম করে তোলা। প্রকল্প এলাকায় ৫৮৮০ জন কৃষককে প্রশিক্ষণ দেওয়া হলেও সেই প্রশিক্ষণের ফলাফল মাঠে দৃশ্যমান নয়। বরং এসব প্রশিক্ষণ, বিশেষ করে বিদেশ সফরগুলো, প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কিছু সুবিধাপ্রাপ্ত ব্যক্তির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। একাধিক পাইলট সাইটে গিয়ে দেখা গেছে, কোথাও মাছ নেই, কোথাও খাচা নেই, কোথাও সাইনবোর্ড থাকলেও প্রকল্প বাস্তবায়নের কোন প্রমাণ মেলেনি। তথ্য গোপন রাখার প্রবণতা প্রকল্পটির স্বচ্ছতা নিয়েও বড় প্রশ্ন তোলে। প্রকল্প খরচ ও ব্যয়ের বিষয়ে প্রশ্ন করলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ‘জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা’র অজুহাত দিয়েছেন। অথচ যাদের জন্য প্রকল্প- সেই জনগোষ্ঠীই জানে না কী হলো, কিভাবে টাকা খরচ হলো। এই চিত্র স্পষ্ট করে দেয় যে, বড় বাজেটের প্রকল্পও যদি সঠিকভাবে তদারকি ও জনগণের অংশগ্রহণ ছাড়া পরিচালিত হয়, তাহলে তা লোকদেখানো সেমিনার, বিদেশ সফর আর সাইনবোর্ডে সীমাবদ্ধ থাকে। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হাওরবাসীর জীবন-জীবিকায় এই প্রকল্পের কোন বাস্তব পরিবর্তন আনতে পারেনি - এটা একটি দুঃখজনক ব্যর্থতা। সরকার ও জাতিসংঘ উভয়েরই এই ব্যর্থতার দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। একদিকে জাতীয় স¤পদের অপচয়, অন্যদিকে স্থানীয় জনগণের প্রতি উপেক্ষা, দুটোই স্পষ্ট। ভবিষ্যতে এমন প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে কঠোর নজরদারি, স্থানীয় অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণ এবং প্রকল্প-পরবর্তী ফলাফল মূল্যায়নের ব্যবস্থা করা অত্যন্ত জরুরি। আমরা মনে করি, শুধু প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ালেই হবে না, দায়বদ্ধতা, স্বচ্ছতা আর মাঠপর্যায়ের বাস্তব সুফল নিশ্চিত করলেই প্রকৃত অর্থে জলবায়ু সহনশীলতা অর্জন সম্ভব। তা না হলে এসব প্রকল্প জনগণের কোনো কাজে আসবে না - উল্টো উন্নয়ন কর্মকান্ড নিয়ে মানুষের আস্থা হারিয়ে যাবে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স