সুনামকণ্ঠ ডেস্ক ::
জাতীয় প্রেস ক্লাব, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)
সোমবার এক বিবৃতিতে মিডিয়ার ওপর অযাচিত হস্তক্ষেপ, হুমকি প্রদানের ঘটনায় নিন্দা, প্রতিবাদ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। জুলাই আন্দোলনের এক নেতা কর্তৃক মিডিয়াকে হুমকি প্রদানের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ ও সাধারণ স¤পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া বিবৃতিতে বলেন, মিডিয়াকে হুমকি প্রদানের ঘটনা এবং মিডিয়াকর্মীদের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা করার প্রবণতা জুলাইয়ের চেতনার পরিপন্থী। জুলাইয়ের রক্তক্ষয়ী হাত গণ-অভ্যুত্থান যেসব কারণে সংঘটিত হয়েছিল, তার অন্যতম ছিল মত প্রকাশ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ। মিডিয়াকে হুমকি দেওয়া সেই লক্ষ্য অর্জনের অন্তরায় ও হস্তক্ষেপের শামিল। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, মিডিয়ার ভূমিকায় কেউ সংক্ষুব্ধ হলে তার প্রতিকারের জন্য প্রেস কাউন্সিল রয়েছে। প্রচলিত আইনের বিধি অনুযায়ী আদালতেও যাওয়া যায়। কিন্তু এই হুমকি দেশে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির প্রতিষ্ঠা, চর্চা ও বিকাশের প্রতিবন্ধক বলে আমরা মনে করি। অন্যদিকে, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন ও মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি শহীদুল ইসলাম ও সাধাণ স¤পাদক খুরশীদ আলম এক বিবৃতিতে মিডিয়ার ওপর অযাচিত হস্তক্ষেপ, হুমকি প্রদানের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, স্বৈরাচারি শেখ হাসিনার শাসনামলে রুদ্ধবাক স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার ছিল জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম লক্ষ্য। সেই চেতনা থেকে সরে এসে জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম প্রধান নেতাদের কেউ কেউ সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বিষোদগার ও হুমকি দিয়ে চলেছেন। সংবাদমাধ্যমকে স্বাধীনভাবে বিকশিত হতে না দিয়ে উল্টো এ ধরনের হুমকি প্রদর্শন নিতান্ত অনভিপ্রেত ও অগ্রহণযোগ্য। রবিবার রাজশাহীতে এনসিপির অন্যতম একজন শীর্ষ নেতা যে হুমকি দিয়েছেন, তা স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতিবন্ধক। বিবৃতিতে সাংবাদিক নেতারা বলেন, ওই এনসিপি নেতার বক্তব্যে আমরা ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি শুনতে পাচ্ছি। মনে রাখতে হবে সাংবাদিকদের হুমকি কিংবা মব জাস্টিসের জন্য ছাত্র-জনতা জীবন দিয়ে জুলাই অভ্যুত্থান সংঘটিত করেনি। সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ হুমকিদাতা এনসিপির ওই নেতাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনাকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ে ৬০ জনের বেশি সাংবাদিক খুন হয়েছেন। শুধু জুলাই বিপ্লবের সময় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ৬ জন সাংবাদিক শহীদ হয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, জুলাই-আগস্টে ছাত্রদের আন্দোলনের সমর্থনে সাংবাদিকরা নিয়মিত রাজপথের আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, জুলাইয়ের রক্তক্ষয়ী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান যেসব কারণে সংঘটিত হয়েছিল, তার অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল মত প্রকাশ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিতকরণ। আজ এনসিপি নেতা সাংবাদিকদের যে হুমকি দিয়েছেন তা জুলাই বিপ্লবের চেতনাবিরোধী। জুলাই বিপ্লবের একজন ছাত্রনেতার কাছে এটা আমাদের প্রত্যাশিত ছিল না। বিএফইউজে ও ডিইউজে নেতারা বলেন, সাংবাদিকদের অধিকার রক্ষা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা অর্জনের ঐতিহ্যবাহী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আমরা অতীতেও এ ধরনের অযাচিত ও অন্যায় হস্তক্ষেপ মেনে নেইনি, এখনও মেনে নেবো না। মিডিয়ার ভূমিকা সম্পর্কে কারও কোনো আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সেগুলোর প্রতিবিধানের জন্য আইন, আদালত ও প্রেস কাউন্সিলের শরণাপন্ন হতে পারেন। কিন্তু এ ধরনের আইন হাতে তুলে নেওয়ার প্রবণতা নিন্দনীয়। সংশ্লিষ্ট মহলকে এ ধরনের তৎপরতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাই।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
জাতীয় প্রেসক্লাব, বিএফইউজে ও ডিইউজের বিবৃতি
সাংবাদিকদের হুমকি স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতিবন্ধক
- আপলোড সময় : ০৮-০৭-২০২৫ ১২:২৬:৫৩ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ০৮-০৭-২০২৫ ১২:৪১:৫১ পূর্বাহ্ন

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ