স্টাফ রিপোর্টার ::
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি ও ‘জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা-২০২৫’ উদযাপনের অংশ হিসেবে সুনামগঞ্জে এক ভিন্নধর্মী গ্রাফিতি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে ১১ টায় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে সুনামগঞ্জ ঐতিহ্য জাদুঘরের সুসজ্জিত প্রাঙ্গণে উদ্বোধনের পরপরই এই প্রদর্শনীটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, সরকারি কর্মকর্তা, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতগণ এবং বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন। এই প্রদর্শনীর সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও প্রশংসনীয় দিক ছিল উদ্বোধন পর্ব। প্রথাগতভাবে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়ারই ফিতা কেটে এর আনুষ্ঠানিক সূচনা করার কথা ছিল।
তবে, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মূল চেতনা অর্থাৎ নতুন প্রজন্মের হাতে দেশের ভবিষ্যৎ এবং ইতিহাসের মশাল তুলে দেওয়ার গভীর প্রত্যয় থেকে তিনি এক ব্যতিক্রম সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। তিনি ভবিষ্যতের কর্ণধার, দুই উজ্জ্বল শিক্ষার্থীকে দিয়ে এই প্রদর্শনীর দ্বার আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করান। সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র সাজেদুল কিবরিয়া ওহি এবং সরকারি সতীশ চন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী অদ্রিতা বড়ুয়া যার কোমল হাতে যখন ফিতা কাটা হলো, তখন যেন এক নতুন বার্তা অনুরণিত হলো সুনামগঞ্জে।
এই শুভক্ষণে জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়াসহ অন্যান্য উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনী পর্বে জেলা প্রশাসকের এই ব্যতিক্রমী সিদ্ধান্তকে উপস্থিত সকলে করতালির মাধ্যমে স্বাগত জানিয়ে এমন সৃজনশীল ও অনুপ্রেরণামূলক উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
উদ্বোধনের পরপরই জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া উপস্থিত শিক্ষার্থী ও অতিথিদের সঙ্গে নিয়ে ঐতিহ্য জাদুঘরের দেয়ালে টাঙানো জুলাই গণঅভ্যুত্থান বিষয়ক গ্রাফিতি চিত্রকর্মগুলো পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, নতুন প্রজন্মের কাছে গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস ও চেতনা ছড়িয়ে দেওয়াই এই প্রদর্শনীর মূল উদ্দেশ্য। আমরা আশা করি, এই ধরনের আয়োজন ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দেশের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে এবং দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে সহায়ক হবে। প্রদর্শনীতে বিভিন্ন গ্রাফিতি চিত্রের মাধ্যমে গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট, এর বিভিন্ন পর্যায়, বীরত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ এবং দেশের ইতিহাসে এর সুদূরপ্রসারী গুরুত্ব অত্যন্ত শৈল্পিকভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। চিত্রকর্মগুলো দর্শকদের মধ্যে গভীর আবেগ ও উদ্দীপনার সঞ্চার করে। এই আয়োজন শিক্ষা ও অনুপ্রেরণামূলক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বলে মন্তব্য করেন উপস্থিত অতিথিগণ।
এসময় সিভিল সার্জন ডা. জসিম উদ্দিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বিরোদা রানী রায়, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সমর কুমার পাল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) তাপস শীল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা জেরিন, জেলা ক্রীড়া অফিসার মো. আল-আমীন, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শামসুল করিম, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবুল মনসুর শওকত, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ফারজানা হোসেন, সাহেল আহমেদ, নাসরিন আক্তার, দিপান্বিতা দেবী, মো. ফজলুল করিম টিপু, হাসিবুল হাসান, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ফয়সাল আহমেদসহ জেলার বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
গণঅভ্যুত্থান বর্ষপূর্তিতে গ্রাফিতি প্রদর্শনী উদ্বোধন করলেন দুই শিক্ষার্থী
- আপলোড সময় : ০১-০৮-২০২৫ ০১:৫৮:৩৩ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ০১-০৮-২০২৫ ০২:২৩:২৪ পূর্বাহ্ন

কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ