সিলেট বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত
শিশুদের প্রতিভা বিকাশে খেলাঘর কাজ করছে
- আপলোড সময় : ০২-০৮-২০২৫ ০৮:৪৮:০০ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ০২-০৮-২০২৫ ০৮:৪৮:০০ পূর্বাহ্ন

স্টাফ রিপোর্টার ::
সিলেট বিভাগের সংগঠকদের নিয়ে খেলাঘর সিলেট বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে দিনব্যাপী সুনামগঞ্জ শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন সুনামগঞ্জ জেলা খেলাঘরের সভাপতি, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং বিভাগীয় সমন্বয়ক বিজন সেন রায়।
সুনামগঞ্জ জেলার সাধারণ স¤পাদক ও জাতীয় পরিষদ সদস্য ও বিভাগীয় সদস্যসচিব রাজু আহমদের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত কর্মশালার উদ্বোধন করেন খেলাঘর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতিম-লীর সদস্য ড. মোহম্মদ আবু সাঈদ। পরে তিনি বৈষম্যহীন মানবিক সমাজ গঠনে খেলাঘর সংগঠকদের দায়িত্ব ও কর্তব্য বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেন। কর্মশালায় স¤পাদকম-লীর সদস্য মাহবুবুর রহমান শিপন, আক্তার হোসেন ও তাহাজুল ইসলাম ফয়সাল।
প্রশিক্ষণ শেষে সভাপতির বক্তব্য রাখেন সিলেট বিভাগীয় সমন্বয়ক বিজন সেন রায়। এছাড়াও মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন জেলা খেলাঘরের সহ-সভাপতি কানিজ সুলতানা, শাল্লা শাখার সভাপতি কানন বালা সরকার।
কর্মশালায় বক্তারা বলেন, বিজ্ঞান আবিষ্কারে অনেক কুসংস্কার বন্ধ হয়েছে। এক সময় কলেরা আক্রান্ত হতো মানুষ। এটার কোনো প্রতিষেধক ওষুধ আবিষ্কার না হওয়ায় ঝারফুঁক, তাবিজ-কবজ দেওয়া হতো। কলেরা বা ডায়রিয়া হলে ‘উলা বিবি’ নামেও প্রচার করা হতো। বলা হতো ‘উলা বিবি’র আগমন ঘটেছে। বসন্ত হলে বলা হতো শিতলা দেবীর আগমন হয়েছে। এসব কাল্পনিক চরিত্র ছিল মানুষের মনে। যাকে আমরা অন্ধ বিশ্বাস বা কুসংস্কার বলি থাকি। আজ বিজ্ঞানের ছোঁয়ায় তা অনেকটা বন্ধ হয়েছে। মানুষকে সচেতন করতে বিজ্ঞানের আবিষ্কার হয়েছে। আজ ইন্টারনেট, মোবাইল, ক¤িপউটার ইত্যাদি ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস বা মেশিনারিজ আবিষ্কার হয়েছে। তথ্য প্রযুক্তির যুগে ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস ও যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে আমরা সহজে অনেক কাজ করতে পারছি। এখন কৃষিকাজ করাও সহজ হয়েছে।
বক্তারা বলেন, তথ্যপ্রযুক্তির যুগে জমিতে বিভিন্ন প্রকারের সার প্রয়োগ করা হচ্ছে। যার ফলে জীববৈচিত্র্য বিলুপ্ত হচ্ছে। খাবার না পাওয়ার কারণে বা দুর্গন্ধে যেমন সাপ, ব্যাঙ, কীটপতঙ্গ, বিভিন্ন প্রজাতির পাখি বিলুপ্ত হচ্ছে। বক্তারা পরিবেশ সুরক্ষায় পলিথিনকে ‘না’ বলেছেন। পলিথিন বর্জনে সকলে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। পরে সাংগঠনিক দায়িত্ব ও কর্তব্য যথাযথ পালন নিয়ে আলোচনা করা হয়। কোন পদে কে কিভাবে দায়িত্ব পালন করবেন তা নিয়ে আলোকপাত করা হয়।
বক্তারা বলেন, খেলাঘর একটি অসাম্প্রদায়িক সংগঠন। এই সংগঠন সঠিক লক্ষ্য আদর্শ নিয়ে কাজ করে। শিশুরা কি কি সমস্যায় জীবন গঠনে বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। যেমন মাদকের ব্যবহার, শিশু শ্রম, ধর্মীয় গোড়ামী, মানবিক মূল্যবোধের অভাব, কিশোর গ্যাং, বাল্যবিবাহ, পুষ্টির অভাব, সঠিক বিনোদনের অভাব, দরিদ্রতা প্রভৃতি বিষয় খোঁজে বের করা। এসব বিষয়ে রাষ্ট্র কি করছে - তা ভাবতে হবে। শিশুদের প্রতিভা বিকাশে বা সঠিক জীবন প্রতিষ্ঠায় এই সংগঠন কাজ করছে। সকলে মনে রাখতে হবে, শিশুদের মানবিক মূল্যবোধ তৈরি করে এই সংগঠন। শিক্ষার্থীসহ সকল মানুষকে সঠিক জীবন প্রতিষ্ঠায় সঠিক পথ প্রদর্শন করে।
অনুষ্ঠিত কর্মশালায় ৯ জনকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। পরে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে অভিজ্ঞানপত্র বিতরণ করেন প্রশিক্ষকেরা।
কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন খেলাঘর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শাহাদাত হুসাইন, সিরাজ উদ্দিন শিরুল, জাতীয় পরিষদ সদস্য সুধাংশু সুত্রধর, সুনামগঞ্জ জেলা খেলাঘরের সাংগঠনিক সম্পাদক হায়দার আলী, সিলেট জেলা খেলাঘরের সহ-সভাপতি বিধান দেব চয়ন, সুনামগঞ্জ জেলা খেলাঘরের অর্থ সম্পাদক প্রদীপ কুমার পাল, সদস্য দুলাল মিয়া, খেলাঘর জাতীয় পরিষদ সদস্য অপরাজিতা রায়, জয় সেন দাস, জেলা খেলাঘরের সদস্য রাজীব দেব, আনোয়ারুল হক, বদরুল কাদির রুবেল, গোলাম সরোয়ার লিটন, প্রশান্ত সাগর দাস, আখলাকুজ্জামান হিবলু প্রমুখ।
দিনব্যাপী কর্মশালায় সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার জেলার সংগঠকেরা উপস্থিত ছিলেন। কর্মশালায় শতাধিক সংগঠক ও নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ