সুনামগঞ্জ , সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ১৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
জামালগঞ্জে যুবদলের কর্মী সমাবেশে কৃষক লীগ নেতা! ‎সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটিতে নতুন সভাপতি শামস শামীম, সম্পাদক জসিম মাছশূন্য হাওর, সংকটে জল-জীবিকা ব্রিটিশ-বাংলাবাজার সড়ক বেহাল : দুর্ভোগে হাজারো মানুষ ভিপি নুরের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ হাউসবোটে নেই পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা পর্যটকদের উদ্বেগ বাংলাবাজার ইউনিয়নে স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী সমাবেশ সুনামকণ্ঠ সাহিত্য পরিষদের আড্ডা অনুষ্ঠিত ঢাকায় জাতীয় পার্টি ও গণঅধিকার পরিষদের সংঘর্ষ অনলাইন জুয়ার ‘হটস্পট’ জাউয়াবাজার প্রতিপক্ষের সুলফির আঘাতে নিহত ১ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে আ.লীগের সঙ্গে আঁতাতের অভিযোগ অনলাইন জুয়ায় নিঃস্ব হচ্ছে মানুষ তাহিরপুরে দুই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়েরের অভিযোগ ৬ রাউন্ড গুলিসহ বিদেশি রিভলবার জব্দ ছাতকে দু’পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৫ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরলে কবে থেকে কার্যকর হবে? একটি মহল চেষ্টা করছে গণতান্ত্রিক শক্তি যেন ক্ষমতায় না আসে : মির্জা ফখরুল বর্জ্যে ভুগছে টাঙ্গুয়ার হাওর হাওরের ফসল রক্ষায় প্রায় চূড়ান্ত ২,২৪৮ কোটি টাকার প্রকল্প

প্রসঙ্গ : মাছশূন্য হাওর, হুমকিতে জল-জীবিকা

  • আপলোড সময় : ০১-০৯-২০২৫ ১২:২৪:৩৯ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০১-০৯-২০২৫ ১২:২৪:৩৯ পূর্বাহ্ন
প্রসঙ্গ : মাছশূন্য হাওর, হুমকিতে জল-জীবিকা
বাংলার গ্রামীণ অর্থনীতি ও সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ মাছ। সেই মাছের প্রধান আধার হাওরাঞ্চল। অথচ সুনামগঞ্জসহ বৃহত্তর হাওরাঞ্চল এখন ভয়াবহ সংকটে। এক সময়ের প্রাচুর্যময় হাওরে আজ মাছ নেই, ফলে মৎস্যজীবীদের জীবিকা ঝুঁকিতে পড়েছে। ‘মাছে-ভাতে বাঙালি’ - এই পরিচয় আজ হুমকির মুখে। সরকারি হিসাব বলছে, একসময় হাওরে দেশীয় প্রজাতির মাছ ছিল ১৪৩টি। আজ তার মধ্যে ৬৪ প্রজাতি হুমকির মুখে, ৯ প্রজাতি অতিবিপন্ন, ৩০টি বিপন্ন এবং ২৫টি সংকটাপন্ন। একদিকে অবৈধ জাল, নিষিদ্ধ পদ্ধতিতে মাছ শিকার, জলাশয়ের অপরিকল্পিত ইজারা ব্যবস্থা; অন্যদিকে জলবায়ু পরিবর্তন, পাহাড়ি নদী থেকে বালু-পলি জমে যাওয়া, বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ মিশে যাওয়া - সব মিলেই হাওরের জলজ পরিবেশ বিপর্যস্ত। মৎস্যজীবীদের অভিযোগ, ইজারা ব্যবস্থা থেকে প্রকৃত জেলেরা উপকৃত হয় না। বরং প্রভাবশালী মহল হাওর ভাড়া নিয়ে লুটপাট চালায়। ফলে জেলেরা তাদের নিজস্ব ঐতিহ্যগত জ্ঞান ব্যবহার করে মাছ সংরক্ষণে কোনো সুযোগ পায় না। টাঙ্গুয়ার হাওরের চিতল মাছ আজ ইতিহাস; হালি হাওরের অভয়াশ্রমও মাছশূন্য। জেলেরা হতাশ হয়ে গার্মেন্টসে চাকরি করতে ঢাকা ছুটছে। আমরা মনে করি, এই সংকট শুধু মৎস্যজীবীদের নয়, জাতীয় খাদ্যনিরাপত্তা, পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য এবং গ্রামীণ অর্থনীতির জন্যও হুমকি। তাই হাওর রক্ষায় এখনই বিশেষ সমন্বিত নীতিমালা প্রয়োজন। প্রথমত, হাওরে সব ধরনের ইজারা প্রথা বাতিল করে মৎস্য আহরণের অধিকার কেবল নিবন্ধিত জেলেদের হাতে দিতে হবে। দ্বিতীয়ত, দেশীয় প্রজাতির মাছ রক্ষায় অভয়াশ্রম ও প্রজনন ক্ষেত্র বাড়াতে হবে। তৃতীয়ত, জলাশয়ের নাব্যতা ফিরিয়ে আনা, পলি-আবর্জনা পরিষ্কার এবং পানি প্রবাহ সচল রাখতে বৈজ্ঞানিক উদ্যোগ নিতে হবে। মাছ কেবল অর্থনীতির নয়, এ দেশের সংস্কৃতি, খাদ্যাভ্যাস ও গ্রামীণ জীবনের প্রতীক। তাই হাওরের মাছ রক্ষায় রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের পাশাপাশি স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে স¤পৃক্ত করতেই হবে। জল-জীবন বাঁচাতে এবং হাওরের প্রাণ ফেরাতে আজই প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা, কার্যকর নীতি ও বাস্তবায়নের অঙ্গীকার। অন্যথায় ‘মাছে-ভাতে বাঙালি’ শুধুই কাগুজে স্লোগানে সীমিত হয়ে পড়বে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স