নেপালজুড়ে মবের আতঙ্ক, কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি সেনাবাহিনীর
- আপলোড সময় : ১১-০৯-২০২৫ ০৮:০৭:০৩ পূর্বাহ্ন
- আপডেট সময় : ১১-০৯-২০২৫ ০৮:২২:৪৫ পূর্বাহ্ন

সুনামকণ্ঠ ডেস্ক :: কাঠমান্ডুতে মৃত্যুর মিছিল, ধ্বংসযজ্ঞ আর অগ্নিসংযোগের ভয়াবহ ছবি ছড়িয়ে পড়ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে। দেশজুড়ে আন্দোলনের মুখে কেপি শর্মা অলি সরকারের পতনের পর হিমালয়ের পাদদেশের এই দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব নিয়েছে নেপালের সেনাবাহিনী। দেশজুড়ে কারফিউ জারি করা হয়েছে। সেনাবাহিনী জানিয়েছে, মবের নামে ভাঙচুর, লুটপাট বা কারও ওপর হামলার ঘটনা ঘটলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই মুহূর্তে সবার নজর সেনাপ্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগদেলের দিকে। তিনি আন্দোলনকারীদের সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছেন। শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য এগিয়ে আসতে অনুরোধ করেছেন। গত বছর সেনাপ্রধানের দায়িত্ব নেওয়া ৫৮ বছর বয়সী জেনারেল গত মঙ্গলবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক টেলিভিশন ভাষণে বলেন, আমরা আন্দোলনরত পক্ষগুলোর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন কর্মসূচি বন্ধ করে আলোচনায় বসে। আমাদের বর্তমান কঠিন পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে হবে। আমাদের ঐতিহাসিক ও জাতীয় ঐতিহ্য, সরকারি-বেসরকারি স¤পদ রক্ষা করতে হবে এবং সাধারণ মানুষ ও কূটনৈতিক মিশনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। জেনারেল সিগদেল গত ৮ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া সহিংসতায় নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। তিনি বলেন, নেপালের ইতিহাসের শুরু থেকেই সেনাবাহিনী সব সময় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থেকেছে - কঠিন পরিস্থিতিতেও দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, ভৌগোলিক অখ-তা, স্বাধীনতা, জাতীয় ঐক্য এবং নেপালি জনগণের নিরাপত্তা রক্ষায়। এদিকে, নেপালি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, কিছু গোষ্ঠী বর্তমান কঠিন পরিস্থিতির সুযোগ নিচ্ছে এবং সাধারণ মানুষ ও জনস¤পত্তির বড় ধরনের ক্ষতি করছে। গত দুই দিন ধরে নেপালে রাস্তায় সহিংসতা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিষেধাজ্ঞার প্রতিবাদে শুরু হওয়া আন্দোলন ক্রমে দুর্নীতি ও সরকারের স্বচ্ছতার অভাবের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আন্দোলনে পরিণত হয়। কেপি শর্মা অলির সরকার আন্দোলনকারীদের কঠোরভাবে দমন করে। এই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে ১৯ জন আন্দোলনকারী নিহত হন। এতে দেশজুড়ে ক্ষোভ আরও বেড়ে যায় এবং বিক্ষোভ ব্যাপক আকার ধারণ করে। নিজেদের ‘জেন জেড’ নামে পরিচয় দেওয়া আন্দোলনকারীরা দেখিয়ে দিয়েছেন, রাজনৈতিক নেতাদের বিলাসী জীবনযাত্রা আর সাধারণ নেপালি জনগণের জীবনমানের মধ্যে কতটা বিশাল ফারাক। আন্দোলন এখন সহিংস রূপ নিয়েছে। একাংশের বিক্ষোভকারী সরকারি ভবন ও রাজনীতিকদের লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। প্রথমে পদত্যাগে অস্বীকৃতি জানালেও আন্দোলনকারীরা আলোচনায় বসতে না চাইলে অবশেষে গত মঙ্গলবার পদত্যাগ করেন কেপি শর্মা অলি। জানাগেছে, এরই মধ্যে সেনাবাহিনী রাজধানী কাঠমান্ডুর বিমানবন্দর ও সরকারের প্রধান সচিবালয় ভবন, সিংহদরবারসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। সীমান্তও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দেশে কারফিউ চলছে। কেবল অ্যাম্বুলেন্স ও মরদেহবাহী গাড়ির মতো জরুরি সেবার যান চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনী বলেছে, প্রতিবাদের নামে যেকোনো বিক্ষোভ, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ এবং ব্যক্তি বা স¤পদের ওপর হামলা দ-নীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। নিরাপত্তা বাহিনী কঠোর ব্যবস্থা নেবে। নাগরিকদের, সাংবাদিকসহ, কেবল সরকারি তথ্যকেই বিশ্বাস ও প্রচার করতে বলা হয়েছে। গুজব ছড়ানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। তথ্যসূত্র: এনডিটিভি
নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha
কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ