সুনামগঞ্জ , বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ , ২ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
টাঙ্গুয়ার ‘দম যায় যায়’ অবস্থা দলগুলোর মতানৈক্য : মাঠে গড়াচ্ছে রাজনীতি পূর্ব ও পশ্চিম নতুনপাড়ার জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবি শিশুশ্রম মুক্ত আদর্শ সুনামগঞ্জ পৌরসভা ঘোষণা বিষয়ে সভা দেখার হাওরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস নয় পথে যেতে যেতে : পথচারী হাসপাতাল ছেড়ে বাসায় গেলেন নুর ‘ফুল স্পিডে’ চলছে সংসদ নির্বাচনের কেনাকাটা ভূমিকম্পে তেঘরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের ১০ স্থানে ফাটল সুনামগঞ্জ রিপোর্টার্স ইউনিটির নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দের কাছে দায়িত্ব হস্থান্তর ফেব্রুয়ারিতে মহোৎসবের নির্বাচন হবে : প্রধান উপদেষ্টা এক ইউপি সদস্য ১৩ প্রকল্পের সভাপতি! জমে উঠেছে দিরাই বাজার মহাজন সমিতির নির্বাচন দুর্ঘটনায় জেলা প্রশাসনের দুই কর্মীর মৃত্যু, চালকের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন তারেক রহমান দ্রুত দেশে ফিরবেন : লুৎফুজ্জামান বাবর দুর্গম হাওরের ২২ হাজার শিশুকে সাঁতার শিখাচ্ছে সরকার পরবর্তীতে আমরা প্রত্যেকেই টার্গেট হব : নাহিদ ইসলাম দায়িত্ব নিয়েই নেপালে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করলেন সুশীলা কার্কি আন্তর্জাতিক নির্মল বায়ু দিবস পালিত কণ্ঠশিল্পী ফরিদা পারভীন আর নেই
ভূমিকম্পে তেঘরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনে ফাটল

শিশুদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে রেখে পাঠদান অগ্রহণযোগ্য

  • আপলোড সময় : ১৭-০৯-২০২৫ ০৭:৩৯:৪৭ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৭-০৯-২০২৫ ০৭:৩৯:৪৭ পূর্বাহ্ন
শিশুদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে রেখে পাঠদান অগ্রহণযোগ্য
শিক্ষা হলো জাতির মেরুদ-। কিন্তু সেই মেরুদ-কে শক্তিশালী করার জন্য যেখানে নিরাপদ পরিবেশ অপরিহার্য, সেখানে আমরা দেখতে পাচ্ছি ভয়াবহ অব্যবস্থাপনা ও অবহেলার চিত্র। সুনামগঞ্জ পৌর শহরের তেঘরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দোতলা ভবনে রবিবারের ভূমিক¤েপ নতুন করে অন্তত ১০ স্থানে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। ছাদ, মেঝে, দেয়াল, সিঁড়ি, ভিম ও কলামে যে বিপজ্জনক ফাটল দেখা দিয়েছে, তা শুধু উদ্বেগজনক নয়, বরং একটি বড়ো দুর্ঘটনার পূর্বাভাস। এই ভবনটি নির্মিত হয়েছিল ১৯৯৯ সালে। অভিযোগ রয়েছে, নির্মাণকাজে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছিল। পর্যাপ্ত রড ব্যবহার করা হয়নি, প্লাস্টারে বালুর বদলে মাটি মেশানো হয়েছিল, সিমেন্টও দেওয়া হয়েছিল কম। এর ফলেই মাত্র দশ বছরের মাথায় ২০১০ সালে ভবনের সর্বত্র ফাটল দেখা দেয়। ২০১৩ সালে জাতীয়করণের সময় ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হলেও নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ আজও নেওয়া হয়নি। দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে শিশুদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে রেখে এভাবে পাঠদান চালানো নিঃসন্দেহে অগ্রহণযোগ্য এবং অমানবিক। অভিভাবকদের আতঙ্ক এখন প্রকট। স্কুলে ২০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ভূমিক¤েপর পরদিন উপস্থিতি নেমে এসেছে ৫০-এর নিচে। প্রাক-প্রাথমিক কক্ষে ক্লাস বন্ধ, অন্যান্য শ্রেণিকক্ষেও ভয়ের কারণে শিক্ষার্থীরা আসছে না। শিক্ষার্থীদের কান্নাভেজা কণ্ঠ- “ইস্কুল ভাঙ্গি গিছে, ক্লাস করতে ডর করের” আমাদের বিবেককে নাড়া দেওয়ার মতো যথেষ্ট। শিক্ষক প্রশিক্ষণার্থীরা নিজেরাই বলছেন, এত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান কার্যক্রম অন্য কোথাও দেখা যায়নি। অথচ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় ঝুঁকিপূর্ণ ভবন আজও অক্ষত রয়েছে, শিশুরা প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যাচ্ছে। আমরা মনে করি, এই অবস্থা আর চলতে দেওয়া যায় না। শিক্ষা অধিদপ্তর ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে জরুরি ভিত্তিতে তিনটি পদক্ষেপ নিতে হবে: ১. তাৎক্ষণিকভাবে ভবনে পাঠদান বন্ধ করে বিকল্প স্থানে ক্লাস চালু করা। ২. ভবনটির ব্যবহার স¤পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। ৩. দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণ বা সংস্কারের জন্য বরাদ্দ ও প্রকল্প অনুমোদন করা। এছাড়া, ভবন নির্মাণে দুর্নীতি ও অনিয়মের দায় নিরূপণ করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুর। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো কোনোভাবেই দুর্নীতির শিকার হতে পারে না। শিশুদের জীবন নিয়ে খেলা করার অধিকার কারও নেই। আজ যদি কর্তৃপক্ষ নীরব থাকে, তবে যে কোনো মুহূর্তে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তার দায়ভার শুধু স্থানীয় প্রশাসনের নয়, পুরো রাষ্ট্রের ওপর বর্তাবে। আমরা চাই, শিক্ষার্থীদের জীবন সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হোক। শিশুদের ঝুঁকির মুখে ফেলে শিক্ষার আলো জ্বালানো যায় না - এ কথা মনে রাখা জরুরি।

নিউজটি আপডেট করেছেন : SunamKantha

কমেন্ট বক্স