দেশে ভূমিকম্পের শঙ্কা আছে, ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসে উদ্যোগ নেই : ঢাবি অধ্যাপক

আপলোড সময় : ০৯-০১-২০২৫ ০৯:০৭:০৬ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ০৯-০১-২০২৫ ০৯:০৭:০৬ পূর্বাহ্ন
সুনামকণ্ঠ ডেস্ক :: সক্রিয় টেকনোক্রেট প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থানের কারণে বাংলাদেশে ভূমিক¤েপর ব্যাপক ঝুঁকি রয়েছে। তবে সে ঝুঁকি মাথায় রেখে ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসের কোনো ব্যবস্থা বাংলাদেশ করছে না বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার সাইন্স অ্যান্ড ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জিল্লুর রহমান। মঙ্গলবার গণমাধ্যমের সঙ্গে সম্প্রতি ঘটা দুটি ভূমিক¤েপর বিষয়ে আলাপকালে তিনি এসব কথা জানান। মঙ্গলবার সকাল ৭টা ৫ মিনিটে এ ভূমিক¤প অনুভূত হয়। এর আগে ৩ জানুয়ারি রিখটার স্কেলে ৫ মাত্রায় বাংলাদেশের ঢাকা, সিলেটসহ বিভিন্ন স্থানে ভূমিক¤প অনুভূত হয়। ভূমিক¤প দুটিরই উৎপত্তিস্থল বাংলাদেশের বাইরে। শেষেরটির উৎপত্তিস্থল ৬১৮ কিলোমিটার দূরে চীনের জিজাং এলাকা। আর ৩ জানুয়ারির ভূমিক¤পটির উৎপত্তিস্থল ছিল বাংলাদেশ থেকে ৪৮২ কিলোমিটার দূরে মিয়ানমারের হোমালিন নামের একটি স্থান। বাংলাদেশ থেকে দূরে অবস্থিত হওয়ায় এসব ভূমিক¤প বাংলাদেশের জন্য তেমন কোনো এলার্মিং কিছু নয় বলে মনে করছেন অধ্যাপক জিল্লুর রহমান। তিনি বলেন, এগুলো দূরের ভূমিক¤প। বাংলাদেশে এগুলোর তেমন কোনো প্রভাব নেই। তিব্বতে অনেক মানুষ মারা গিয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশে কিছুই হয়নি। এর আগে ৩ তারিখ যে ভূমিক¤প হয়েছে, সেটিও এলার্মিং কিছু না বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে সক্রিয় টেকনোক্রেট প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত হওয়ায় বাংলাদেশে ব্যাপক ভূমিক¤েপর ঝুঁকি রয়েছে বলে জানান তিনি। অনেক আগে পৃথিবীর সব স্থলভাগ একত্রে ছিল। পৃথিবীর উপরিভাগে কতগুলো অনমনীয় প্লেটের সমন্বয়ে গঠিত বলে ধীরে ধীরে তারা আলাদা হয়ে গেছে। এই প্লেটগুলোকেই বিজ্ঞানীরা বলেন টেকটোনিক প্লেট। টেকটোনিক প্লেটগুলো একে-অপরের সঙ্গে পাশাপাশি লেগে থাকে। কোনো কারণে এগুলোর নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ হলেই তৈরি হয় শক্তি। এই শক্তি সিসমিক তরঙ্গ আকারে ছড়িয়ে পড়ে। যদি তরঙ্গ শক্তিশালী হয়, তাহলে সেটি পৃথিবীর উপরিতলে এসে পৌঁছায়। আর তখনো যদি যথেষ্ট শক্তি থাকে, তাহলে সেটা ভূত্বককে কাঁপিয়ে তোলে। এই কাঁপুনিই মূলত ভূমিক¤প। জিল্লুর রহমান বলেন, আমাদের এই ঝুঁকি মাথায় রেখে ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসে কাজ করতে হবে। কিন্তু আমরা তা করছি না। ভূমিক¤প ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসের ব্যবস্থা করলে মৃত্যু ঝুঁকি কমানো যাবে। ঘনবসতি, অবকাঠামোগত দুর্বলতা, বিল্ডিং কোডের দুর্বল প্রয়োগসহ কয়েকটি কারণে একইমাত্রার ভূমিক¤প বাংলাদেশের কাছাকাছি হলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি হবে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, অন্যান্য দেশের চেয়ে আমাদের দেশে অনেক বেশি ক্ষতি হবে। আমাদের এখানে পরিকল্পনাহীন অনেক ভবন আছে। তিব্বতে যে ভূমিক¤প হয়েছে, ঢাকার ৫০ কিলোমিটারের মধ্যে এরকম ভূমিক¤প হলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতো। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ অন্য অনেক দেশ থেকে বেশি হবে। এসব ঝুঁকি মোকাবেলায় বাংলাদেশকে বিভিন্ন মেয়াদে পরিকল্পনা গ্রহণ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, আমাদের পরিকল্পনা গ্রহণ করা দরকার। তবে যেভাবে দরকার, আমরা সেভাবে করছি না। আমাদের যথাযথ বিল্ডিং কোড প্রয়োগ করা দরকার। এছাড়া যেসব বিল্ডিং ইতোমধ্যে আছে, সেগুলোও ঝুঁকি বিবেচনা করা উচিত।

সম্পাদকীয় :

  • সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : মো. জিয়াউল হক
  • সম্পাদক ও প্রকাশক : বিজন সেন রায়
  • বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মোক্তারপাড়া রোড, সুনামগঞ্জ-৩০০০।

অফিস :

  • ই-মেইল : [email protected]
  • ওয়েবসাইট : www.sunamkantha.com