
মো. শাহজাহান মিয়া ::
জগন্নাথপুর উপজেলার পাটলি ইউনিয়নের ছোট হাওরগুলোতে হারভেস্টার মেশিন ও শ্রমিক সংকটে ধানকাটা ব্যাহত হচ্ছে। ফলে জমির পাকা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন কৃষকরা। এর মধ্যে প্রতিদিনই কমবেশি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। শিলাবৃষ্টির আশঙ্কা তাড়া করে বেড়াচ্ছে স্থানীয় কৃষক ও জমির মালিকদের।
গত ২৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে পাটলি গ্রামের পাশের হাওরে গিয়ে দেখা যায়, মেশিন ও শ্রমিক সংকটের কারণে কোনো জমিতে একজন আবার কোনো জমিতে দুইজন জমির মালিক নিজেই ধান কাটছেন। হাওরজুড়ে জমিতে পাকা ধান দুলছে। কোনো কোনো জমিতে ধান পাকতে পাকতে রীতিমতো ঝরে পড়ার অবস্থা হয়েছে।
স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে কয়েকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের এলাকা ধনী হয়ে গেছে। অনেক বেকার মানুষ অযথা ঘোরাঘুরি করলেও ধান কাটতে চায় না। যে কারণে স্থানীয় ধানকাটা শ্রমিক মিলছে না। বহিরাগত শ্রমিকও আসেনি। ধানকাটা মেশিনও পাচ্ছি না। জমিতে পাকা ধান রেখে রাতে ঘুম হয় না। তাই একাই নিজের ধান কাটতে নেমেছি। একা কিছুই করার নেই। তাই যতো দ্রুত সম্ভব ধানকাটা মেশিন চাই।
এ বিষয়ে পাটলি ইউপি চেয়ারম্যান আংগুর মিয়া বলেন, গত ৪/৫ দিন আগে থেকেই আমার ইউনিয়ন এলাকার জামাইকাটা, বিলচর, ঘাটিয়ার, এলেছি, আদাকান্দি, খলিয়ার, দলুয়া, ঘাঢ়ার হাওরসহ কমবেশি সকল হাওরের বোরো ধান পেকে গেছে। প্রতিদিন কৃষকরা আমাকে জানান, হারভেস্টার মেশিন ও শ্রমিক সংকটের কারণে তারা ধান কাটতে পারছেন না। ফলে জমির পাকা ধান নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন কৃষকেরা। এর মধ্যে এক হাওরে একটি ছোট মেশিন নেমেছে। সেটি একবার ধান কাটলে ৩ বার বিকল হয়। এছাড়া মাঝে মাঝে ১/২ জন জমির মালিক নিজে ধান কাটছেন। এতে প্রায় মাত্র দুই ভাগ ধান কাটা হয়েছে। বাকি সকল হাওরের পুরো জমির পাকা ধান, হাওরেই মজে যাচ্ছে। কৃষকদের এমন অবস্থা দেখে আমি উপজেলা প্রশাসনে গিয়ে হারভেস্টার মেশিন প্রদানের জন্য বলেছি। আশা করছি, তারা দ্রুত মেশিন পাঠিয়ে ধানকাটার ব্যবস্থা করে দিবেন।
জানতে চাইলে জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাওছার আহমেদ বলেন, জগন্নাথপুর উপজেলার সবচেয়ে বড় হচ্ছে নলুয়ার হাওর। তাই আমরা নলুয়ার হাওরকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত ধানকাটার ব্যবস্থা করেছি। পাটলি ইউনিয়নের হাওরগুলো তুলনামূলক ছোট ও উঁচু জমি। তবুও ঘাটিয়ার হাওরে একটি মেশিন ধান কাটছে। আশা করছি, আগামী শনিবারের মধ্যে আরেকটি মেশিন নামবে। এতে চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই।