‘নিষ্প্রাণ’ মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্বাচন বন্ধ, নেই কার্যক্রম, নেই মুক্তিযোদ্ধাদের উপস্থিতি

আপলোড সময় : ১৩-০৫-২০২৫ ০৮:২৬:২৩ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ১৩-০৫-২০২৫ ০৮:২৬:২৩ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার :: সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নির্মিত আধুনিক তিনতলা বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনগুলো বর্তমানে কার্যত ‘নিষ্প্রাণ’ অবস্থায় রয়েছে। নির্বাচনের অনুপস্থিতি এবং প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তায় মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত এই ভবনগুলোতে এখন আর তেমন কাউকে দেখা যায় না। বীর মুক্তিযোদ্ধারা অভিযোগ করেছেন, দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচন না হওয়ায় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কোনো কার্যকর কমিটি নেই। এর ফলে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে শুধুমাত্র উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে। জানা যায়, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ১১টি উপজেলায় প্রায় ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করে। প্রতিটি ভবনের বরাদ্দ ছিল গড়ে ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। সরেজমিনে দেখা গেছে, অনেক ভবনই অধিকাংশ সময় তালাবদ্ধ থাকে। বিশ্বম্ভরপুর, জামালগঞ্জ ও ধর্মপাশা উপজেলাসহ বিভিন্ন জায়গায় ভবনের রুমগুলোর দরজা-জানালা ভাঙা এবং অব্যবহৃত অবস্থায় রয়েছে। অনেক ভবনে বহিরাগতরা জিনিসপত্র রেখে দখল করে রেখেছে। স্থানীয়দের মতে, ভবনগুলো উপজেলা সদর বা বাজার থেকে দূরে হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে কক্ষ ভাড়া নেওয়ার আগ্রহও কম। যে ক’টি কক্ষ ভাড়া দেওয়া হয়েছে, সেগুলোও চলছে কোনো মতে। অভিযোগ রয়েছে, এসব কমপ্লেক্স ভবন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের অনানুষ্ঠানিক কার্যালয়ে পরিণত হয়েছিল। এতে মুক্তিযোদ্ধারা নিজস্ব ঠিকানায় বসতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। ২০২৩ সালের ১৩ মে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও তা স্থগিত হয়। পরবর্তীতে আর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, জামুকা অধ্যাদেশের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের সংজ্ঞা পুনর্নির্ধারণ এবং যাচাই-বাছাইয়ের প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে। এরপরেই নতুন করে কার্যক্রম শুরু হতে পারে। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা বিএনপি আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রাজু আহমদ জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের বিষয় গুরুত্ব সহকারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলে ভাল হয়। ভবনের কক্ষগুলো ভাড়া দেয়া হলে আয়ের একটি খাত হলো। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মফিজুর রহমান জানান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভবনটি সম্মানিত বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের। এই ভবনের দরজা তাদের জন্য সব সময় খোলা। এই ভবন ব্যবহারের অনুরোধ জানিয়ে তিনি আরও জানান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সক্রিয় করতে চেষ্টা করছেন তিনি। ভবনের কক্ষগুলোও ভাড়া দেয়ার চেষ্টা চলছে। সুনামগঞ্জ জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার হাজী নূরুল মোমেন, গত ১৭ সালে দায়িত্ব হস্তান্তর করার পর নির্বাচন না হওয়ায় সকল মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। নির্বাচন হয় হচ্ছে হবে বলেই দিন যাচ্ছে কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। এতে করে আমরা মুক্তিযোদ্ধাগণ হতাশ আর ভবনগুলোতে শূন্যতা বিরাজ করছে। আর বর্তমান সরকার আহ্বায়ক কমিটি দিবে বলেও দিচ্ছে না।

সম্পাদকীয় :

  • সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : মো. জিয়াউল হক
  • সম্পাদক ও প্রকাশক : বিজন সেন রায়
  • বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মোক্তারপাড়া রোড, সুনামগঞ্জ-৩০০০।

অফিস :

  • ই-মেইল : [email protected]
  • ওয়েবসাইট : www.sunamkantha.com