
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সাহিত্যিক আবুল ফজল-এর জন্ম ১৯০৩ খ্রিস্টাব্দের ১ জুলাই চট্টগ্রামে। চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার কেউচিয়া ইউনিয়নে। পিতা মৌলভী ফজলুর রহমান, মাতা- গুলশান আরা ছিলেন গৃহিণী। তার স্কুল জীবন কাটে সরকারি মাদ্রাসা চট্টগ্রামে। ১৯২৩ সালে এসএসসি এবং ১৯২৫ সালে ঢাকা
ইসলামিক ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ বর্তমানে কবি নজরুল সরকারি কলেজ হতে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ১৯২৮ সালে বিএ এবং ১৯৪০ সালে কোলকাতা বিশ্ববিদ্যারয় হতে এমএ পাস করেন। মহান এই পুরুষ ছিলেন খুবই মেধাবী। শিক্ষাজীবন ও কর্মজীবনের সর্বত্রই দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন। তার কর্মজীবন শুরু হয় চট্টগ্রামে স্কুল শিক্ষক হিসেবে। পরে কৃষ্ণনগর সরকারি কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে শিক্ষকতা করেন। দেশ ভাগের পর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে বর্তমান বাংলাদেশ এসে যুক্ত হন অধ্যাপনা কাজে। এক পর্যায়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। এক পর্যায়ে সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা হিসেবে যোগ দেন। কর্মের ব্যস্ততার ভেতরও তিনি বিশ্বাস করতেন একজন মানুষের বিশ্বস্ত সঙ্গী বই আর বই। খাবার মানুষের শরীরের জন্য প্রয়োজন, কিন্তু মনের সজীবতার জন্য প্রয়োজন কেবল বই আর বই। একজন উত্তম সঙ্গী হিসেবে বইয়ের বিকল্প আর কিছুই হতে পারে না। জনাব আবুল ফজল একজন সুসাহিত্যিক হিসেবে সর্বাধিক পরিচিত ছিলেন। তার অনেক সমৃদ্ধ রচনা আজও পাঠক প্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে। তার রচিত উপন্যাস ‘চৌচির’ ও ‘রাঙা প্রভাত’ তৎকালীন পাঠকমহলে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছিল। অন্যান্য রচনা ‘পথের যাত্রী’, ‘সাহসিকা’, ‘প্রদীপ ও পতঙ্গ’, ‘পরিবর্তন’, ‘বিচিত্র কথা’, ‘মাটির পৃথিবী’, ‘প্রবন্ধ সংকলন’ ইত্যাদি। তিনি একজন স্বাধীন চিন্তার মানুষ। সমাজ সচেতনতা তার রচনায় আমরা পাই। তার কর্মজীবন অনেক অনেক উজ্জ্বল প্রভায় দীপ্ত। অধ্যাপক আবুল ফজল এক পর্যায়ে শিক্ষা ও সংস্কৃতি উপদেষ্টা নিয়োজিত হয়েছিলেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ হওয়ার পর অত্যন্ত দক্ষতার সাথে সেই দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তার দায়িত্বকাল ছিল ৯ এপ্রিল ১৯৭৩ থেকে ২৭ নভেম্বর ১৯৭৫ পর্যন্ত। আবুল ফজল একটি ধর্মীয় পরিবেশে বেড়ে ওঠেছিলেন। তার পিতা মৌলভী ফজলুর রহমান এবং পিতামহ মৌলভী হায়দার আলী। মৌলভী হায়দার আলী চট্টগ্রাম জামে মসজিদে দীর্ঘদিন পেশ ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে আবুল ফজল ‘ঢাকায় মুসলিম সাহিত্য সমাজ’ নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠার সঙ্গে যুক্ত হন। দীর্ঘদিন এই প্রতিষ্ঠানের হয়ে অনেক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকা-ে অংশগ্রহণ করেন। এক পর্যায়ে ১৯৩০ সালে এই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নিযুক্ত হন। ব্যক্তিগত জীবনে আবুল ফজল এক পুত্র সন্তানের জনক ছিলেন। পুত্র সন্তানের নাম আবুল মোমেন। প্রতিভার স্বীকৃতি স্বরূপ আবুল ফজল বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৬২) এবং স্বাধীনতা পদক (২০১২) ছাড়াও অন্যান্য যে সকল পদক পান- প্রেসিডেন্টের রাষ্ট্রীয় সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৩), আদমজী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৬), নাসিরুদ্দীন স্বর্ণপদক (১৯৮০), মুক্তধারা সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮১), আবদুল হাই সাহিত্য পদক (১৯৮২)। চিন্তাশীল সাহিত্য সাধনার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭৪ সালে তাঁকে সম্মানসূচক ‘ডক্টরেট ডিগ্রি’ প্রদান করে। অধ্যাপক আবুল ফজলের পুরো নাম আবুল ফজল ইবনে মোবারক। তিনি ছদ্মনামেও অনেক রচনা লিখেছেন। তার ছদ্মনাম ছিল ‘শমসের উল আজাদ’। তার বিখ্যাত রচনা ‘রেখাচিত্র’ প্রকাশিত হয় ১৯৬৬ সালে। এছাড়া ১৯৭২ সালে প্রকাশিত ‘দুর্দিনের দিনলিপি’ বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। মুঘল স¤্রাট আকবরের রাজত্বকালের ইতিহাস নিয়ে গ্রন্থ ‘আকবরনামা’ উল্লেখযোগ্য একটি রচনা। তেমনি অপর একটি রচনা ‘আইন-ই-আকবরী’। আবুল ফজল বাংলা সাহিত্যে এক অবিস্মরণীয় নাম। চিন্তাশীল লেখক হিসেবে তার সুখ্যাতি চিরঅম্লান। ১৯৮৩ সালের ৪ মে ৭৯ বছর বয়সে চট্টগ্রামে এই মহান প্রতিভার ইতি ঘটে।
ইসলামিক ইসলামিক ইন্টারমিডিয়েট কলেজ বর্তমানে কবি নজরুল সরকারি কলেজ হতে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ১৯২৮ সালে বিএ এবং ১৯৪০ সালে কোলকাতা বিশ্ববিদ্যারয় হতে এমএ পাস করেন। মহান এই পুরুষ ছিলেন খুবই মেধাবী। শিক্ষাজীবন ও কর্মজীবনের সর্বত্রই দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছেন। তার কর্মজীবন শুরু হয় চট্টগ্রামে স্কুল শিক্ষক হিসেবে। পরে কৃষ্ণনগর সরকারি কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে শিক্ষকতা করেন। দেশ ভাগের পর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে বর্তমান বাংলাদেশ এসে যুক্ত হন অধ্যাপনা কাজে। এক পর্যায়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন। এক পর্যায়ে সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা হিসেবে যোগ দেন। কর্মের ব্যস্ততার ভেতরও তিনি বিশ্বাস করতেন একজন মানুষের বিশ্বস্ত সঙ্গী বই আর বই। খাবার মানুষের শরীরের জন্য প্রয়োজন, কিন্তু মনের সজীবতার জন্য প্রয়োজন কেবল বই আর বই। একজন উত্তম সঙ্গী হিসেবে বইয়ের বিকল্প আর কিছুই হতে পারে না। জনাব আবুল ফজল একজন সুসাহিত্যিক হিসেবে সর্বাধিক পরিচিত ছিলেন। তার অনেক সমৃদ্ধ রচনা আজও পাঠক প্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে। তার রচিত উপন্যাস ‘চৌচির’ ও ‘রাঙা প্রভাত’ তৎকালীন পাঠকমহলে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছিল। অন্যান্য রচনা ‘পথের যাত্রী’, ‘সাহসিকা’, ‘প্রদীপ ও পতঙ্গ’, ‘পরিবর্তন’, ‘বিচিত্র কথা’, ‘মাটির পৃথিবী’, ‘প্রবন্ধ সংকলন’ ইত্যাদি। তিনি একজন স্বাধীন চিন্তার মানুষ। সমাজ সচেতনতা তার রচনায় আমরা পাই। তার কর্মজীবন অনেক অনেক উজ্জ্বল প্রভায় দীপ্ত। অধ্যাপক আবুল ফজল এক পর্যায়ে শিক্ষা ও সংস্কৃতি উপদেষ্টা নিয়োজিত হয়েছিলেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ হওয়ার পর অত্যন্ত দক্ষতার সাথে সেই দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তার দায়িত্বকাল ছিল ৯ এপ্রিল ১৯৭৩ থেকে ২৭ নভেম্বর ১৯৭৫ পর্যন্ত। আবুল ফজল একটি ধর্মীয় পরিবেশে বেড়ে ওঠেছিলেন। তার পিতা মৌলভী ফজলুর রহমান এবং পিতামহ মৌলভী হায়দার আলী। মৌলভী হায়দার আলী চট্টগ্রাম জামে মসজিদে দীর্ঘদিন পেশ ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে আবুল ফজল ‘ঢাকায় মুসলিম সাহিত্য সমাজ’ নামে একটি সংগঠন প্রতিষ্ঠার সঙ্গে যুক্ত হন। দীর্ঘদিন এই প্রতিষ্ঠানের হয়ে অনেক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকা-ে অংশগ্রহণ করেন। এক পর্যায়ে ১৯৩০ সালে এই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নিযুক্ত হন। ব্যক্তিগত জীবনে আবুল ফজল এক পুত্র সন্তানের জনক ছিলেন। পুত্র সন্তানের নাম আবুল মোমেন। প্রতিভার স্বীকৃতি স্বরূপ আবুল ফজল বাংলা একাডেমী পুরস্কার (১৯৬২) এবং স্বাধীনতা পদক (২০১২) ছাড়াও অন্যান্য যে সকল পদক পান- প্রেসিডেন্টের রাষ্ট্রীয় সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৩), আদমজী সাহিত্য পুরস্কার (১৯৬৬), নাসিরুদ্দীন স্বর্ণপদক (১৯৮০), মুক্তধারা সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮১), আবদুল হাই সাহিত্য পদক (১৯৮২)। চিন্তাশীল সাহিত্য সাধনার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৭৪ সালে তাঁকে সম্মানসূচক ‘ডক্টরেট ডিগ্রি’ প্রদান করে। অধ্যাপক আবুল ফজলের পুরো নাম আবুল ফজল ইবনে মোবারক। তিনি ছদ্মনামেও অনেক রচনা লিখেছেন। তার ছদ্মনাম ছিল ‘শমসের উল আজাদ’। তার বিখ্যাত রচনা ‘রেখাচিত্র’ প্রকাশিত হয় ১৯৬৬ সালে। এছাড়া ১৯৭২ সালে প্রকাশিত ‘দুর্দিনের দিনলিপি’ বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। মুঘল স¤্রাট আকবরের রাজত্বকালের ইতিহাস নিয়ে গ্রন্থ ‘আকবরনামা’ উল্লেখযোগ্য একটি রচনা। তেমনি অপর একটি রচনা ‘আইন-ই-আকবরী’। আবুল ফজল বাংলা সাহিত্যে এক অবিস্মরণীয় নাম। চিন্তাশীল লেখক হিসেবে তার সুখ্যাতি চিরঅম্লান। ১৯৮৩ সালের ৪ মে ৭৯ বছর বয়সে চট্টগ্রামে এই মহান প্রতিভার ইতি ঘটে।