যাদুকাটা বালুমহাল ইজারা স্থগিত, ২০ হাজার শ্রমিকের মানবেতর জীবন

আপলোড সময় : ০৫-০৮-২০২৫ ১২:২৩:২৬ পূর্বাহ্ন , আপডেট সময় : ০৫-০৮-২০২৫ ০৭:২৪:৫৭ পূর্বাহ্ন
মো. সাজ্জাদ হোসেন শাহ ::
তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা বালুমহাল মামলা জনিত কারণে ইজারা কার্যক্রম স্থগিত হওয়ায় গত ৪ মাস ধরে জেলার তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর ও জামালগঞ্জ উপজেলার প্রায় ২০ শ্রমজীবী মানুষ বেকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
সরকারের শত কোটি টাকা রাজস্ব আয়ের বালুমহালটির ইজারা কার্যক্রম স্থগিত থাকায় বালু উত্তোলন, লোড, আনলোড, নৌ শ্রমিক, মালিক ও ব্যবসায়ী মিলে প্রায় ২০ হাজার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। শ্রমজীবী মানুষ দ্রুত মহালটির ইজারা কার্যক্রম চালু করে দাবি জানিয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানাযায়, ভূমি মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন ও সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের ব্যবস্থাপনাধীন জেলার বৃহৎ বালুমহাল তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদী ইজারা দেয়া হয়ে থাকে। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে বালুমহালটির ইজারা নিয়ে ইজারাদাররা নিয়ম বহির্ভূতভাবে নদীর তীর কেটে, অবৈধ ড্রেজার এবং শেইভ মেশিন দিয়ে বালু ও পাথর উত্তোলন করে নদী ও নদী তীরবর্তী এলাকার ব্যাপক পরিবেশ বিপর্যয় ঘটিয়েছেন উল্লেখ করে নদীটির ব্যবস্থাপনা এবং নদীটির নিয়ন্ত্রণ ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে খারিজ করে খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে ন্যাস্ত করার দাবি জানিয়ে গত ১৪৩১ বাংলা সনের শেষ সময়ে উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার বাসিন্দা খোরশেদ আলম। তার দায়ের করা পিটিশনের প্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত প্রথমে বালুমহালটির ইজারা কার্যক্রমের উপর ৬ মাসের স্থগিতাদেশ প্রদান করেন। এরপর ১৪৩২ বাংলা সনে মহালটির ইজারাপ্রাপ্তরা ওই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের আপিল বিভাগে আপিল করলে, আদালত ৬ মাসের স্থগিতাদেশের বদলে, পরবর্তী দুই মাসের মধ্যে ভূমি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি নিষ্পত্তি করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেন। এরপর থেকে অদ্যবধি বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়ায় মহালটিতে গত ৪ মাস ধরে বালু উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। ফলে তিন উপজেলার প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক ও কয়েক হাজার ব্যবসায়ী কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
তাহিরপুর উপজেলার বড়দল উত্তর ইউনিয়নের মানিগাও গ্রামের বালু উত্তোলনকারী শ্রমিক হাফিজ উদ্দিন বলেন, মহালটিতে বালু উত্তোলন বন্ধ থাকায় ৬ সদস্যের পরিবার নিয়ে গত ৪ মাস ধরে খেয়ে না খেয়ে জীবনযাপন করছি।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মিয়ারচর গ্রামের নৌ শ্রমিক আব্দুল লতিফ বলেন, যাদুকাটা নদীতে কাজ বন্ধ হওয়ার পর কাজের খোঁজে সিলেটের ভোলাগঞ্জে গিয়ে সেখান থেকে ফিরে এসেছি। এমন করে চলতে থাকলে না খেয়ে মরা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না আমাদের। আমরা বালু মহালটি দ্রুত খুলে দেয়ার দাবি জানাই।

জামালগঞ্জ উপজেলার বালু ব্যবসায়ী আকমল আফিন্দী বলেন, গত ৪ মাস ধরে মহালটি বন্ধ থাকায় প্রচুর লোকসানের মুখে পড়েছি। দেশের নানা অঞ্চলে বালু সরবরাহ করে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা বাকি পড়েছে। আরও বালু সরবরাহ করতে না পারায় ওই টাকা উত্তোলন করতে পারছি না।
জানাগেছে, শুধু এই তিন উপজেলার শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরাই নন, এই বালু মহালটি বন্ধ থাকায়, রাজধানী ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, কুমিল্লাসহ দেশের নানা অঞ্চলের শ্রমিক ও বালু ব্যবসায়ীরা পড়েছেন চরম বিপাকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলার মামলাজনিত একাধিক বালুমহাল খুলে দেয়ার জন্য চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

সম্পাদকীয় :

  • সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : মো. জিয়াউল হক
  • সম্পাদক ও প্রকাশক : বিজন সেন রায়
  • বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : মোক্তারপাড়া রোড, সুনামগঞ্জ-৩০০০।

অফিস :

  • ই-মেইল : [email protected]
  • ওয়েবসাইট : www.sunamkantha.com