
সিলেটের ভোলাগঞ্জ অঞ্চলের সাদা পাথর দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সম্পদ। পর্যটন সম্ভাবনা ও পরিবেশগত গুরুত্বের পাশাপাশি এটি রাষ্ট্রীয় সম্পদ হিসেবেও বিশেষভাবে সংরক্ষণযোগ্য। অথচ সম্প্রতি ওই এলাকায় পাথর লুট ও অবৈধ অপসারণের ঘটনা শুধু প্রাকৃতিক ভারসাম্যকে বিনষ্ট করেছে তা-ই নয়, রাষ্ট্রীয় সম্পদের প্রতি চরম অবহেলার দৃষ্টান্তও স্থাপন করেছে।
এ প্রেক্ষাপটে হাইকোর্টের নির্দেশ- সাত দিনের মধ্যে সাদা পাথর আগের স্থানে ফিরিয়ে আনতে হবে এবং লুটের সঙ্গে জড়িতদের তালিকা আদালতে দাখিল করতে হবে- নিঃসন্দেহে অত্যন্ত সময়োপযোগী ও প্রশংসনীয় পদক্ষেপ। এই নির্দেশনা প্রমাণ করেছে যে, রাষ্ট্রীয় স¤পদ নিয়ে অপব্যবহার সহ্য করা হবে না।
প্রসঙ্গত, সংবিধানের ১৮(ক) অনুচ্ছেদে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে যে রাষ্ট্র পরিবেশ ও প্রাকৃতিক স¤পদ সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু ভোলাগঞ্জে প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা একে বাধাগ্রস্ত করেছে। আদালত শুধু সাদা পাথর ফিরিয়ে আনার নির্দেশই দেননি, বরং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার প্রকৃত অবস্থা নিরূপণে বুয়েটের একজন অধ্যাপককে অন্তর্ভুক্ত করে কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি এলাকা পর্যবেক্ষণের জন্য মনিটরিং টিম এবং প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার কারণ ব্যাখ্যার নির্দেশ আদেশকে আরও কার্যকর ও অর্থবহ করেছে।
এখন সময় এসেছে সকল পর্যায়ে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার। মনে রাখতে হবে, সাদা পাথর শুধু ভোলাগঞ্জবাসীর জন্য নয় - এটি রাষ্ট্রীয় স¤পদ, জাতীয় স¤পদ। তাই এটি রক্ষা করা আমাদের সকলের নাগরিক দায় ও কর্তব্য। পাথরগুলো আগের স্থানে দ্রুত ফেরত আনার পাশাপাশি যারা এই লুটের সঙ্গে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ রাষ্ট্রীয় স¤পদ অপহরণের সাহস না করে।
ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর রক্ষায় হাইকোর্টের এই পদক্ষেপ এক গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত। আমরা আশা করি, আদালতের নির্দেশ দ্রুত বাস্তবায়িত হবে এবং প্রাকৃতিক ও রাষ্ট্রীয় সমপদ রক্ষার ক্ষেত্রে এটি একটি স্থায়ী নজির হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।