
সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে আড়াই বছর আগে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) স্থাপন করা হয়েছে। ১০ শয্যার
এই আধুনিক ইউনিট ২০২৩ সালের মার্চ মাসে সরঞ্জামসহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়। অথচ আজও এটি চালু হয়নি। কারণ একটাই- জনবল সংকট। প্রশ্ন জাগে, জনবল ছাড়া আইসিইউ স্থাপন করার প্রয়োজনই বা হলো কেন? আর জনগণের করের কোটি কোটি টাকা দিয়ে এমন অচল প্রকল্প কাদের স্বার্থে বাস্তবায়ন করা হলো? এটা শুধু অব্যবস্থাপনা নয়, এটা অপরাধ।
আইসিইউ না থাকায় অনেক প্রাণ মৃত্যুর মুখে পতিত হচ্ছে। হৃদরোগ, স্ট্রোক, দুর্ঘটনা বা প্রসূতিজনিত জটিলতায় আক্রান্ত রোগীদের ঢাকায় কিংবা সিলেটে পাঠানোর পথে অনেকেরই প্রাণ চলে যায়। অথচ পাশেই কোটি টাকা খরচে তৈরি আইসিইউ তালাবন্দি পড়ে থাকে। এর দায় কে নেবে?
সদর হাসপাতালে ৬৬ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও আছেন মাত্র ৩১ জন, ২৬১ জন নার্সের বিপরীতে আছেন মাত্র ১৪১ জন। বাকি পদগুলো বছরের পর বছর শূন্য। অথচ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য প্রশাসন শুধু আশ্বাস দিয়েই দায়িত্ব শেষ করেছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একাধিকবার চিঠি পাঠিয়েছে, তাও কোনো ফল নেই। এতদিন ধরে কেন চিকিৎসক ও অ্যানেস্থেশিয়ান নিয়োগ দেওয়া হলো না? এর জবাব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে দিতেই হবে। নীতিনির্ধারকদের এই উদাসীনতা অগ্রহণযোগ্য।
আমরা মনে করি, জনজীবন নিয়ে এমন ছেলেখেলা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও জবাবদিহিহীনতার শিকার এখন সুনামগঞ্জবাসী। কোটি টাকার প্রকল্প দাঁড়িয়ে আছে অব্যবহার্য স্মৃতিস্তম্ভ হয়ে।
আমরা স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই- এটি জনগণের সাথে প্রহসন। দ্রুততম সময়ে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে আইসিইউ চালু না হলে এর দায়ভার সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারকদের ঘাড়ে বর্তাবে।