
বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের তেঘরিয়া শহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দোতলা ঝুঁকিপূর্ণ ভবন এবার রবিবারের ভূমিকম্পে অন্তত ১০টি স্থানে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। ছাদ-মেঝে-দেয়াল-সিঁড়ি-ভিম-কলাম সর্বত্রই একাধিক ফাটল দেখা গেছে।
রবিবারের ভূমিকম্পে উত্তর-পশ্চিমাংশের দেয়ালের অংশ বিশেষ রড নিয়ে নিচে ভেঙে পড়েছে। দক্ষিণের সামনের অংশে একাধিক স্থানে বড়ো ফাটল দেখা দিয়েছে। সিঁড়ির নিচের ছাদের প্লাস্টার খসে বেরিয়ে এসেছে রড। প্রাক প্রাথমিক কক্ষের ভিম ফেটে গেছে। এই অবস্থায় সোমবার প্রাক প্রাথমিকের ক্লাস হয়নি। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি সোমবার দুপুরে পরিদর্শন করে দ্রুত শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধের মৌখিক মতামত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বিদ্যালয়ে পাঠদান অব্যাহত থাকলে যে কোনও সময় বড়ো দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন তারা। অভিভাবকরাও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কারণে সন্তানদের স্কুলে আসতে দিচ্ছেন না। যার ফলে স্কুলে শিশুদের উপস্থিতি অনেক কমে গেছে।
সরেজমিনে সোমবার দুপুরে সুনামগঞ্জ জেলা শহরের এই বিদ্যালয়ে গিয়ে জানা যায়, ১৯৯৬ সনে পৌর চেয়ারম্যান মমিনুল মউজদীন নিজেদের পারিবারিক জায়গায় পৌরসভার উদ্যোগে স্কুল ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ১৯৯৯ সনে স্কুলটি নির্মাণ করা হয়। তবে নির্মাণকাজে চরম অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণেই ২০১০ সালেই স্কুলটির ছাদসহ চারদিকেই ফাটল দেখা দেয়। পর্যাপ্ত রড ব্যবহার না করায় ও বালুর বদলে প্লাস্টারে মাটি ব্যবহার করায় এবং সিমেন্টের পরিমাণ কম দেওয়ায় খসে পড়ছে কলাম, ভিমসহ দেয়ালের প্লাস্টার। দোতলার সিঁড়ির ছাদও ভেঙে পড়েছে।
স্কুলের সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৩ সালে স্কুলটি জাতীয়করণ করার সময় সংশ্লিষ্টরা পরিদর্শন করে স্কুলটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হিসেবে ঘোষণা করেন। কিন্তু নতুন ভবন নির্মাণে উদ্যোগ নেয়নি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। ২০১৮ সালে ফেরদৌস আরা ইয়াসমিন প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছেন। মাসিক সমন্বয়সভায়ও কথা বলেছেন। সর্বশেষ চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি ঝুঁকিপূর্ণ স্কুলে পাঠদান কঠিন হয়ে পড়েছে মর্মে ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেন তিনি। স্কুলের পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দারা জানান, রবিবার স্কুল ছুটির পর ৫টার পরে ভূমিকম্প হয়। এসময় স্কুলের উত্তরের দোতলার ছাদের দেয়ালের কিছু অংশ রড নিয়ে নিচে পড়ে যায়। দক্ষিণের অংশে বড়ো একাধিক ফাটল দেখা দেয় এবং হেলে আছে। দোতলায় ওঠার সিঁড়ির ছাদের প্লাস্টার খসে পড়ে। নিচতলা ও দোতলার প্রতিটি কক্ষের ছাদের প্লাস্টার খসে পড়ে। ভিম ফেটে যায়। ছাদের ভার সইতে না পেরে দক্ষিণ-পশ্চিমাংশের নিচতলার জানালার গ্রিল বাঁকা হয়ে গেছে। যে কোনও সময় বড়ো দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
এদিকে রাতেই বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। যার ফলে সোমবার দুপুরে উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার অলিউল্লাহ ও সদর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সুব্রত দাস ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তারা স্কুলটি খুটিয়ে দেখে দুর্ঘটনা এড়াতে দ্রুত পাঠদান বন্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হবে এবং বিদ্যমান বাস্তব অবস্থা লিখিতভাবে জানানো হবে বলে জানান। মৌখিকভাবে তারা এই প্রতিবেদকের কাছে ভবনটি পাঠদানের অনুপযোগী হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন।
এদিকে সোমবার স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, ২০০ জন শিক্ষার্থীর স্কুলে ৫০ জন শিক্ষার্থীও আসেনি। প্রাক প্রাথমিক কক্ষে ফাটল দেখা দেওয়ায় ও ভিম ফেটে যাওয়া এবং ছাদের প্লাস্টার খসে পড়ায় ক্লাসও হয়নি। অন্যান্য শ্রেণি কক্ষেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম। গত রবিবারের ভূমিকম্পে স্কুলে ফাটল দেখা দেওয়ায় অভিভাবকরা ভয়ে সন্তানদের স্কুলে আসতে দিচ্ছেন না বলে জানা গেছে। তাছাড়া এই ঝুঁকির কারণে স্থানীয়রা চলতি বছর সন্তানদের এই স্কুলের বদলে অন্য স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন বলেও জানা গেছে।
স্কুলের ৫ম শ্রেণির ছাত্র আরমান আহমদ বলেন, সকালে আইয়া দেখি ইস্কুল ভাঙ্গি গিছে। ভিতরে বাইরে ফাটা। আমরার ক্লাস করতে ডর করের। আব্বা-আম্মা আমরারে স্কুলে আইতে দিতা চাইন না।
দ্বিতীয় তলায় পিটিআইয়ে প্রশিণাক্ষার্থী শিক্ষক খোরশেদ আলম বলেন, এরকম ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান কার্যক্রম আমার জানামতে কোথাও হয়নি। পুরো ভবনের প্রতিটি কক্ষই ফাটা। কলাম, ভিম, দেয়াল-ছাদ পুরো ভবনই ঝুঁকিপূর্ণ। গত রবিবারের ভূমিকম্প আরো ঝুঁকিপূর্ণ করেছে স্কুলটিকে। যে কোনও সময় বড়ো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. অলিউল্লাহ বলেন, এই ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। ভূমিকম্পে আবার নতুন করে ফাটল দেখা দিয়েছে। আমরা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টদের নিয়ে পরিদর্শন করেছি। ভবনটি পাঠদানের উপযোগী নয়। আমরা শীঘ্রই বিকল্প স্থানে পাঠদানের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখবো।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী সুব্রত দাস বলেন, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে খবর পেয়ে আমি আজ পুরো ভবনটি ঘুরে দেখেছি। নতুন পুরনো অনেক ফাটল দেখেছি। ছাদ থেকে মেঝে-দেয়াল সর্বত্রই ফাটল দেখা দিয়েছে। এটি পাঠদানের জন্য সম্পূর্ণ অনুপযোগী। আমি আজই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি লিখবো।
সুনামগঞ্জ পৌর শহরের তেঘরিয়া শহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দোতলা ঝুঁকিপূর্ণ ভবন এবার রবিবারের ভূমিকম্পে অন্তত ১০টি স্থানে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। ছাদ-মেঝে-দেয়াল-সিঁড়ি-ভিম-কলাম সর্বত্রই একাধিক ফাটল দেখা গেছে।
রবিবারের ভূমিকম্পে উত্তর-পশ্চিমাংশের দেয়ালের অংশ বিশেষ রড নিয়ে নিচে ভেঙে পড়েছে। দক্ষিণের সামনের অংশে একাধিক স্থানে বড়ো ফাটল দেখা দিয়েছে। সিঁড়ির নিচের ছাদের প্লাস্টার খসে বেরিয়ে এসেছে রড। প্রাক প্রাথমিক কক্ষের ভিম ফেটে গেছে। এই অবস্থায় সোমবার প্রাক প্রাথমিকের ক্লাস হয়নি। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি সোমবার দুপুরে পরিদর্শন করে দ্রুত শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধের মৌখিক মতামত দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বিদ্যালয়ে পাঠদান অব্যাহত থাকলে যে কোনও সময় বড়ো দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন তারা। অভিভাবকরাও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কারণে সন্তানদের স্কুলে আসতে দিচ্ছেন না। যার ফলে স্কুলে শিশুদের উপস্থিতি অনেক কমে গেছে।
সরেজমিনে সোমবার দুপুরে সুনামগঞ্জ জেলা শহরের এই বিদ্যালয়ে গিয়ে জানা যায়, ১৯৯৬ সনে পৌর চেয়ারম্যান মমিনুল মউজদীন নিজেদের পারিবারিক জায়গায় পৌরসভার উদ্যোগে স্কুল ভবন নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ১৯৯৯ সনে স্কুলটি নির্মাণ করা হয়। তবে নির্মাণকাজে চরম অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণেই ২০১০ সালেই স্কুলটির ছাদসহ চারদিকেই ফাটল দেখা দেয়। পর্যাপ্ত রড ব্যবহার না করায় ও বালুর বদলে প্লাস্টারে মাটি ব্যবহার করায় এবং সিমেন্টের পরিমাণ কম দেওয়ায় খসে পড়ছে কলাম, ভিমসহ দেয়ালের প্লাস্টার। দোতলার সিঁড়ির ছাদও ভেঙে পড়েছে।
স্কুলের সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৩ সালে স্কুলটি জাতীয়করণ করার সময় সংশ্লিষ্টরা পরিদর্শন করে স্কুলটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ভবন হিসেবে ঘোষণা করেন। কিন্তু নতুন ভবন নির্মাণে উদ্যোগ নেয়নি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর। ২০১৮ সালে ফেরদৌস আরা ইয়াসমিন প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছেন। মাসিক সমন্বয়সভায়ও কথা বলেছেন। সর্বশেষ চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি ঝুঁকিপূর্ণ স্কুলে পাঠদান কঠিন হয়ে পড়েছে মর্মে ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেন তিনি। স্কুলের পার্শ্ববর্তী এলাকার বাসিন্দারা জানান, রবিবার স্কুল ছুটির পর ৫টার পরে ভূমিকম্প হয়। এসময় স্কুলের উত্তরের দোতলার ছাদের দেয়ালের কিছু অংশ রড নিয়ে নিচে পড়ে যায়। দক্ষিণের অংশে বড়ো একাধিক ফাটল দেখা দেয় এবং হেলে আছে। দোতলায় ওঠার সিঁড়ির ছাদের প্লাস্টার খসে পড়ে। নিচতলা ও দোতলার প্রতিটি কক্ষের ছাদের প্লাস্টার খসে পড়ে। ভিম ফেটে যায়। ছাদের ভার সইতে না পেরে দক্ষিণ-পশ্চিমাংশের নিচতলার জানালার গ্রিল বাঁকা হয়ে গেছে। যে কোনও সময় বড়ো দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
এদিকে রাতেই বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করে স্কুল কর্তৃপক্ষ। যার ফলে সোমবার দুপুরে উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার অলিউল্লাহ ও সদর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সুব্রত দাস ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। তারা স্কুলটি খুটিয়ে দেখে দুর্ঘটনা এড়াতে দ্রুত পাঠদান বন্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হবে এবং বিদ্যমান বাস্তব অবস্থা লিখিতভাবে জানানো হবে বলে জানান। মৌখিকভাবে তারা এই প্রতিবেদকের কাছে ভবনটি পাঠদানের অনুপযোগী হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেন।
এদিকে সোমবার স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, ২০০ জন শিক্ষার্থীর স্কুলে ৫০ জন শিক্ষার্থীও আসেনি। প্রাক প্রাথমিক কক্ষে ফাটল দেখা দেওয়ায় ও ভিম ফেটে যাওয়া এবং ছাদের প্লাস্টার খসে পড়ায় ক্লাসও হয়নি। অন্যান্য শ্রেণি কক্ষেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম। গত রবিবারের ভূমিকম্পে স্কুলে ফাটল দেখা দেওয়ায় অভিভাবকরা ভয়ে সন্তানদের স্কুলে আসতে দিচ্ছেন না বলে জানা গেছে। তাছাড়া এই ঝুঁকির কারণে স্থানীয়রা চলতি বছর সন্তানদের এই স্কুলের বদলে অন্য স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন বলেও জানা গেছে।
স্কুলের ৫ম শ্রেণির ছাত্র আরমান আহমদ বলেন, সকালে আইয়া দেখি ইস্কুল ভাঙ্গি গিছে। ভিতরে বাইরে ফাটা। আমরার ক্লাস করতে ডর করের। আব্বা-আম্মা আমরারে স্কুলে আইতে দিতা চাইন না।
দ্বিতীয় তলায় পিটিআইয়ে প্রশিণাক্ষার্থী শিক্ষক খোরশেদ আলম বলেন, এরকম ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান কার্যক্রম আমার জানামতে কোথাও হয়নি। পুরো ভবনের প্রতিটি কক্ষই ফাটা। কলাম, ভিম, দেয়াল-ছাদ পুরো ভবনই ঝুঁকিপূর্ণ। গত রবিবারের ভূমিকম্প আরো ঝুঁকিপূর্ণ করেছে স্কুলটিকে। যে কোনও সময় বড়ো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. অলিউল্লাহ বলেন, এই ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। ভূমিকম্পে আবার নতুন করে ফাটল দেখা দিয়েছে। আমরা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টদের নিয়ে পরিদর্শন করেছি। ভবনটি পাঠদানের উপযোগী নয়। আমরা শীঘ্রই বিকল্প স্থানে পাঠদানের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখবো।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী সুব্রত দাস বলেন, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে খবর পেয়ে আমি আজ পুরো ভবনটি ঘুরে দেখেছি। নতুন পুরনো অনেক ফাটল দেখেছি। ছাদ থেকে মেঝে-দেয়াল সর্বত্রই ফাটল দেখা দিয়েছে। এটি পাঠদানের জন্য সম্পূর্ণ অনুপযোগী। আমি আজই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি লিখবো।